ঢাকার ঐতিহ্যশালী রমনা কালী মন্দিরের মুখ্য প্রবেশদ্বারের উপর ইদে মিলাদুন্নবীর সমাবেশের ব্যানার দিয়ে ঢেকে দেয়া হয়েছে মন্দিরের সাইন বোর্ড। এই নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় উঠেছে। প্রশ্ন উঠছে সাইন বোর্ড লাগানোর কি আর কোনো জায়গা ছিল না? এই কাজ করে কি প্রমান করতে চাইছে জেহাদিরা? হিন্দু শূন্য করার হুমকি দিচ্ছে তারা?
মেইন গেটের সামনে কর্তাব্যরত পুলিশ ও এই ব্যাপারটা দেখে ও না দেখার ভান করছে বলে অভিযোগ। প্রশাসন ও নীরবে মৌলবাদকেই সামর্থম করছে বলে খবর।
অতীতের রমনা কালী মন্দির ভারতীয় উপমহাদেশের সবচেয়ে বিখ্যাত হিন্দু মন্দিরসমূহের মধ্যে অন্যতম ছিল। প্রায় এক হাজার বছরেরও পুরাতন বলে বিশ্বাস করা হয় কিন্তু ইংরেজ আমলে এই মন্দিরটি আবার নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছিল ।বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার রমনা পার্কের (যার বর্তমান নাম সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) বহির্ভাগে অবস্থিত।বর্তমানে বাংলার সংস্কৃতিতে এ মন্দিরের উল্লেখ্য ভূমিকা আছে।
এইবার জানা যাক এই মন্দিরের করুন ইতিহাস , রমনা কালী মন্দিরের চারপাশের গ্রামটি ছিল ঢাকা রেস কোর্সের কেন্দ্রস্থলে একটি প্রাচীন হিন্দু পল্লী। এই গ্রামে প্রায় ২০০০ হিন্দু পুরুষ, নারী ও শিশু বাস করত। ১৯৭১ সালের ২৬ ও ২৭ মার্চ। এই দুটো দিন রমনা কালীমন্দিরের পবিত্র ভূমি ঘিরে পাকিস্তানি সেনারা যে বিভীষিকার রাজত্ব তৈরি করেছিল তার করুণ কাহিনি ইতিহাসের পাতায় চিরদিন লেখা থাকবে। এক তীর্থভূমি রাতারাতি পরিণত হয়েছিল বধ্যভূমিতে। রমনা কালীমন্দিরের অধ্যক্ষ স্বামী পরমানন্দ গিরি সহ সেখানে উপস্থিত প্রায় ১০০ জন নারী ও পুরুষকে নির্মমভাবে হত্যা করেছিল পাক সেনারা। শিশুরাও রেহাই পায়নি। এই হত্যাকাণ্ডের সময় রমনা কালীমন্দির ও মা আনন্দময়ী আশ্রম দাউ দাউ করে জ্বলেছিল। রমনা কালীমন্দিরের চূড়া ছিল ১২০ ফুট, যা বহুদূর থেকে দেখা যেত। সেটিও ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয় ওই বর্বর সেনারা।
পরবর্তীকালে শেখ মুজিবুর রহমান সেই মন্দিরের জায়গায় সুরাবর্দি পার্ক নির্মান করেন। সুরাবর্দি ছিল ১৯৪৬ এর দ্যা গ্রেট ক্যালকাটা কিলিং এর মাস্টারমাইন্ড।