আজ বাংলাদেশে (Bangladesh) জামাত(Jamat) , হুজি(Huji) , সহ বিভিন্ন জিহাদি গ্রূপের রমরমা বাজার।
কিন্তু পাকিস্তান (Pakistan) থেকে স্বাধীনতার মাত্র নয় বছরের মধ্যেই বাঙালি জাতীয়বাদকে লাটে তুলে সম্পূর্ণ ইসলামীকরণের দিকে পা বাড়িয়ে দেয় বাংলাদেশ।
১৯৮০ (1980) সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মেজর মতিউর রেহমান (Major Motiur Rehman) গোপনে তৈরী করেন . . ” মুসলিম মিল্লাত বাহিনী “(Muslim Millat Bahini)।
গোপনে রাতের অন্ধকারে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রশিক্ষণ দিতো এই মিল্লাত বাহিনীকে। এর পর উচ্চ প্রশিক্ষণ নিতে গোপনে সেই মুসলিম মিল্লাত বাহিনীর ২৭ জন সদস্যকে পাঠানো হয় লিবিয়া (Lybia) পুরোদস্তুর জঙ্গি প্রশিক্ষণের জন্য।
অনেকেই হয়তো তো জানেন না যে এই মিল্লাত বাহিনী গোপনে এতটাই বৃদ্ধি পায় যে সংখ্যাটা ২৭ থেকে পৌঁছে যায় কয়েক হাজারে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই।
৮০ র দশকের শেষে বা ৯০ এর দশকের গোড়ায় রুশ সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে তালিবানের হয়ে আফগানিস্থানে যুদ্ধ করে ৩৪০০ বাংলাদেশের মুসলিম মিল্লাত বাহিনী।
১৯৮৯ সালে তৈরী হয় হারকাতে উল জিহাদি ইসলামী বা সংক্ষেপে হুজি (H U J I) ۔ এর পর জামাতে উল মুজাহিদীন (Jamate Ul Mujahideen) তৈরী হয় ১৯৯৮ সালে , অর্থাৎ বাংলাদেশের আজকের যে পূর্ণ আরবিকরণ বা ইসলামীকরণ হয়েছে তা মোটেই রাতারাতি হয়নি।
১৯৭১ সালে ভারতের কাছে পূর্ব পাকিস্তান হারাবার পাঁচ বছরের মধ্যেই বাংলাদেশের পূর্ণ আরবিকরণ বা ইসলামীকরণের ব্লু প্রিন্ট তৈরী করে পাকিস্তানের তৎকালীন গোয়েন্দা সংস্থা
তারা জানতো ১৯৭১ এর সাফল্যর পর আত্মতুষ্টিতে ভুগবে ভারতের গুপ্তচর সংস্থা।পাকিস্তানের অনুমান বেঠিক ছিলোনা, ফলে অতি গোপনে ও সন্তর্পনে চললো বাংলাদেশের মধ্যেই ব্যাপক আকারে জেহাদি নেটওয়ার্ক তৈরী করা।
৭০ দশকের শেষের দিকেই ভারতীয় গুপ্তচর সংস্থা ” র ” (R A W) এর নজর এড়িয়ে পুরোদস্তুর বাংলাদেশ ডেস্ক (,Bangladesh Desk) এর অপারেশন চালু করে দেয় পাকিস্তান এর গুপ্তচর সংস্থা।
আজ থেকে ১৬ বছর আগে পাক গুপ্তচর সংস্থা আই এস আই (ISI) এর প্রত্যক্ষ মদতেই জামাত বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড়ো জঙ্গি হামলা চালায়। বাংলাদেশের ৬৪ টি জেলার মধ্যে ৬৩ টি জেলায় মোট ৪৫৯ টি জঙ্গি হামলা হয় যার ফলে বহু মানুষের প্রাণহানি হয়।
পরবর্তী পর্যায়ে ISI এর হাত ধরেই তৈরী হয় আরেকটি জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লা বাংলা টীম (Ansarullah Bangla Team) বা আনসার আল ইসলাম(Ansar Al Islam)।
আজ থেকে আট বছর আগে বাংলাদেশে সরকারি ভাবে পদার্পন করে ইসলামিক স্টেট (Islamic State) ” দায়েশ ” (Daesh) নাম নিয়ে।
প্রথম থেকেই ISI-এর বাংলাদেশ ডেস্ক এর প্রধানকে বলা ছিল যে বাংলা ভাষী মুসলমানদের মনের ভিতর থেকে বাঙালিয়ানা বা বাঙালিত্ব চিরতরে মুছে ফেলতে হবে কারণ এটা না হলে ইসলামকে স্থায়ী রূপে স্থাপন করা যাবেনা বাংলাদেশে
বাংলাদেশের মুসলমানদের কাছে দুটো পথই খোলা থাকলো , হয় বাঙালি বা মুসলমান হয়ে থাকতে হবে বাংলাদেশে।
বিভিন্ন প্রকারের জন সংযোগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বাংলা ভাষী মুসলমানদের পরিষ্কার ভাবে বলা ও বোঝানো হলো যে বাংলা ভাষা , সংস্কৃতি ও কৃষ্টি পুরোটাই হিন্দু সংস্কৃতির সাথে ওতঃপ্রোত ভাবে জড়িত। বাংলা বা বাঙালি ও হিন্দু ধর্ম একে ওপরের পরিপূরক এবং তা ইসলামের সাথে কোনো মতেই , কোনো অবস্থাতেই , কোনো ভাবেই একসাথে থাকতে পারেনা। এর কারণ বাঙালি সংস্কৃতি ও সভ্যতার সাথে ইসলামিক সংস্কৃতি ও সভ্যতার কোনো মিল নেই।
বাংলাদেশের বাংলাভাষী মুসলমানরা (অধিকাংশ) ঠিক করেই নিলো যে বাংলাদেশ নামেই বা খাতায় কলমে বাঙালি রাষ্ট্র হলেও , আদতে তা মুসলিম বা ইসলামিক রাষ্ট্র। এই চিন্তন থেকেই জেহাদিরা ফুলে ফেঁপে উঠলো বাংলাদেশে।
এদিকে ইসলামিক স্টেট বাংলাদেশে প্রবেশ করার পর গোপনে ও ক্রমে একটি ফেস বুক গ্ৰুপ তৈরী করা হয় জেহাদকে ত্বরান্বিত করার জন্য। নাম দেওয়া হয় ” এক্স ক্যাডেট ইসলামিক স্টাডি ফোরাম “(Ex Cadet Islamic Study Forum) ও এরই সাথে আরেকটি গোপন বাহিনীও তৈরী হয় , নাম দেওয়া হয় ” তৌহিদ ওআল খলিফা “(Tauhid Al Khalifa) বা ” Soldiers of Islam “।
এখন এই সমস্ত ভিন্ন ইসলামিক গ্ৰুপ যা বিভিন্ন সময় ও বিভিন্ন পর্যায়ে তৈরী হয়েছে , সেই ৮০ র দশক থেকে , একটা অভিন্ন নীতি গ্রহণ করেছে এবং সেই নীতিটি হলো বাংলাদেশ থেকে বাঙালিদের (হিন্দুদের) নিশ্চিন্ন করে এবং পরবর্তী পর্যায়ে পশ্চিম বাংলা , আসাম ও ত্রিপুরার মতো বাংলা ভাষী রাজ্য থেকে বাঙালিদের সংহার করে , নিশ্চিহ্ন করে একটা সংযুক্ত ইসলামিক ক্যালিফেট বা আমিরাত তৈরী করা।