রাজ্যপালের ভাষণে ভোট পরবর্তী হিংসার কোনও উল্লেখ করেনি শাসক দল। উল্টে অভিযোগগুলিকে মিথ্যা দাবি করা হয়েছে’। শুক্রবার রাজ্যপাল ভাষণ অসমাপ্ত রেখে বিধানসভা ছাড়ার পর এই অভিযোগ করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। একইসঙ্গে, রাজ্যে মমতা সরকার স্বৈরতান্ত্রিক শাসন প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
শুক্রবার অধিবেশনের প্রথম দিনই উত্তাল হল বিধানসভা। বিজেপি বিধায়কদের তুমুল বিক্ষোভে ভাষণ অসম্পূর্ণ রেখেই সভাগৃহ ত্যাগ করেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। এরপরই সাংবাদিক সম্মেলন করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দেগে তিনি বলেন, ‘রাজ্যপালের ভাষণের যে বক্তব্য রাজ্য সরকার লিখে দিয়েছিলেন, তাতে ভোট পরবর্তী হিংসার কোনও উল্লেখ নেই। ভোটের পর আমাদের ৪১ জন কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু উলটে বলা হয়েছে, নতুন সরকার গঠনের আগেই হিংসা। এই দায় নির্বাচন কমিশনের। হিংসার কথা উল্লেখ করা হলে আমরা প্রতিবাদ করতাম না’।
এখানেই শেষ নয়, শুভেন্দু অধিকারীর আরও দাবি, রাজ্যের অবস্থা উদ্বেগজনক। বিরোধীদের রাজ্য থেকে সমূলে উৎপাটন করার চেষ্টা করছে সরকার। স্বৈরতান্ত্রিক শাসন কায়েমের চেষ্টা চলছে। সংবিধান মেনে তার প্রতিবাদ চলবে বলেও এদিন হুঁশিয়ারি দেন শুভেন্দু। বলেন, ‘নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর একাধিক মহিলার উপর অত্যাচার হয়েছে। সেই ছবিগুলি দেখালাম। আমরা সংসদীয় গণতন্ত্রের নিয়ম মেনেই প্রতিবাদ করেছি। আমরা স্লোগানের মাধ্যমে আমাদের ব্যথা বেদনা প্রকাশ করেছি। তবে আমাদের বিধায়করা অধিবেশনে অংশ নেবেন’।
ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে রাজ্যপাল যেভাবে সরব হয়েছেন, এদিন সেজন্য জগদীপ ধনকড়কে কৃতজ্ঞতা জানান শুভেন্দু অধিকারী। তবে সংসদীয় গণতন্ত্রে রাজ্য সরকারের ভূমিকা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি। হুঁশিয়ারির সুরে তিনি জানান, বিধানসভায় আগামীদিনেও ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে সারা দিনের আলোচনা চাইবে বিজেপি। উল্লেখ্য, এদিনের ঘটনা দেখে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ‘মর্নিং শোজ দ্য ডে’। বিজেপি বুঝিয়ে দিল, বাম-কংগ্রেসের মতো হাল ছেড়ে দেওয়া ভূমিকায় নয়, এবারের অধিবেশনে রাজ্য সরকারকে প্রতি পদক্ষেপে চেপে ধরার পরিকল্পনাই করেছে তারা।