প্রথমত আমাদের দেশ হল গণতান্ত্রিক দেশ। এখানে প্রতিটা মানুষের সমান অধিকার আছে কথা বলার বা বক্তব্য রাখার এবং যেটা ইচ্ছে সেটা করার। তবে সবটাই জনহিতকর বা দেশ হিতে।আমি বা আপনি এমন কিছু বলব না অথবা করব না জেতার জন্য দেশের সার্বভৌমত্বের ওপরে আঘাত হানে।
আপনি ক্ষমতায় থাকুন বা সরকারে থাকুন অথবা বিরোধী পক্ষে, সেটা কোনো দিন মাপকাঠি হয়না আপনি বলতে পারবেন নাকি বলতে পারবেন না।
আমাদের এটাও মনে রাখতে হবে যে এখানে অর্থাৎ ভারতবর্ষে সবাই বলার সমান অধিকার রাখে। কিন্তু আপনি দেশ বিরোধী কিছু বললে বা কাজ করলে আপনাকে সংবিধান অনুযায়ী জবাব দিহি করতে হবে।
মনে রাখতে হবে, এই ভারতবর্ষের মাটিতেই দেশের সমর্থনে “ভারত মাতার জয়” বলে জয়ধ্বনি দিতে সোনা যায়। এটা দেশের প্রতি প্রতিটা মানুষের আবেগ। ঠিক তখনই কিছু দেশ বিরোধী মানুষ , শুধু মাত্র স্বার্থ চরিতার্থ করতে বলে ওঠে “ভারত তেরে টুকরে হোঙ্গে”… এটা দুটি ক্ষেত্রে কোনটা আমাদের দেশের সার্বভৌমত্বের ওপরে আঘাত সেটা খুব সহজেই বোধগম্য।
অথচ সরকার যখনই সেই দেশ বিরোধী স্লোগানের কারণে কাওকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে শুরু করবে, ঠিক তখনই শুরু হয় প্রচার করা যে বিরোধীদের কণ্ঠ রোধ করা হচ্ছে, বাক স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। আচ্ছা এবার ভেবে দেখুন তো, এই দেশের সংবিধানে কোথাও কি অনুমতি দেওয়া আছে, যেখানে আপনি বা আমি ভারতবর্ষের মাটিতেই ভারত ভেঙে ফেলার চক্রান্ত করতে পারি? মনে হয় সেটা নেই। ভুল বললাম, সেই অনুমতি দেওয়া নেই। কারণ ভারতের সংবিধান অনুযায়ী এরকম কথা বলার অধিকার বা বাক স্বাধীনতা কাওকে দেইনি। বরং দেশ বিরোধী কাজ বা মন্তব্যের জন্য আপনাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেওয়া আছে।
এখন আমরা সবাই জানি যে বিগত বেশ কিছু দিন ধরে কৃষি বিলের বিরোধিতা করে কৃষকের ছদ্মবেশে আন্দোলন করছিল বহু মানুষ। কেন বলা হল কৃষকের ছদ্মবেশে? কারণ 26 জানুয়ারি দিল্লিতে এবং লাল কেল্লায় আমরা যেসব ঘটনা দেখেছি সেগুলো সাধারণ জনগন বা কৃষক করতে পারেনা। তাহলে খুব সহজেই অনুমান করা যেতে পরে যে সেখানে বিরোধী শক্তি সক্রিয় বা ভারত বিরোধী শক্তি সেই কাজ করেছে। আবার যে সব বিরোধী দল এটার সমর্থন করছে তারা বলেছেন শাসক দল পরিকল্পিত ভাবে এটা করেছে। ধরে নেওয়া যাক বিরোধী দল সত্যি বলছে। সেক্ষেত্রে যারা দোষী তাদের শাস্তির দাবি কারা করবে? সেই বিরোধীরা। অথচ হচ্ছে উল্টো। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল বিরোধীরা তুলছে তারা দাবি করছে তদন্ত করা হোক। অপর দিকে বিরোধীরা সম্পূর্ন ভাবে আইনি সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে অভিযুক্তদের।
এই ঘটনা এখন বিশ্বে বহু চর্চিত ঘটনা। চতুর্দিকে সেটা নিয়ে আলোচনা যখন চলছে ঠিক তখনই দেখা গেল, বিদেশি কিছু তারকা এই কৃষি আন্দোলন সমর্থন করে টুইট করেছেন। যথারীতি সেটা নিয়ে বিরোধী দলের নেতা সমর্থক খুব উৎফুল্ল। অর্থাৎ বিদেশ থেকে সমর্থন করেছে মানে এই আন্দোলন সঠিক। ঠিক তখনই ভারতীয় তারকা বা শিল্পীরা একযোগে বলেছেন “সব মেনে নেওয়া যায়, কিন্তু ভারতের সার্বভৌমত্বের ওপরে বা, ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশিদের বক্তব্য রাখাটাই উচিৎ না।।”…
এবার এখানেই আসল ঘটনা। বিরোধীরা সেই ভারতীয় তারকা বা শিল্পীদের বিরুদ্ধে বলা অব্দি না থেমে তারা কুরুচিপূর্ণ ভাবে অপমান করতে শুরু করেছেন এই তারকাদের।
অর্থাৎ ভারতের ভেতরের ঘটনা নিয়ে বিরোধীদের সমর্থনে কোনো বিদেশি শিল্পী বললে সেটা সমস্যা না হলেও, দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক না গলানোর কথা বলে টুইট করলে সেটা খুব অন্যায়।
আজ যাকে বিশ্বের প্রায় প্রতিটা দেশের মানুষ চেনে, যিনি ভারতের প্রতিনিধিত্ব করে ভারতের জন্য প্রচুর সন্মান নিয়ে এসেছেন তাকেই চরম ভাবে অপমানিত হতে হল দেশের মুষ্টিমেয় কিছু মানুষের কাছে। বিরোধী দলের নেতা কর্মীরা যেভাবে অপমান করেছেন একজন জাতীয় খেলোয়াড়কে সেটা আজ সমগ্র বিশ্বের কাছে লজ্জা জনক। আজ আপনাদের সামনেই স্পষ্ট দেশ এবং দেশ বিরোধী কাজে কারা দিনের পর দিন সমর্থন দিয়ে যাচ্ছেন। এতদিন এরাই আমাদের দেশ শাসন করেছেন। একটার পর একটা প্রজন্ম অর্থাৎ সেই পারিবারিক দলের প্রতিটা প্রজন্ম 1947 থেকে এখনো একটাই স্লোগান দিচ্ছে “গরিবি হটাও”… এতদিন শাসন ভার হাতে নিয়ে তাহলে তারা দেশ হিতে কতটা সময় ব্যয় করেছেন সেটা নিশ্চয় বলে দিতে হবেনা।
যখন দেখবেন , একজন মানুষ দেশের মধ্যে দাড়িয়ে থেকে দেশ বিরোধী স্লোগান দিচ্ছে, এবং নিজের কাজের বা বক্তব্যের সমর্থনে বিদেশি সাহায্য নিচ্ছে তখন সহজেই বোধগম্য যে এই দলটি দেশের কথা কতটা ভাবে।
অতনু লাহা