কান্দি পৌরসভার পশ্চিম দেওয়াল লাগোয়া শতবর্ষ প্রাচীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি হল কান্দি সাধারণ পাঠাগার।
এই পাঠাগারের আদি নাম ছিল Coronation Library। ইংরেজি “করোনেশন” শব্দের বাংলা অর্থ হল রাজ্যাভিষেক। প্রশ্ন হল, কার রাজ্যাভিষেক?
সময়টা ছিল ১৯১১ সাল। তখন এদেশে ব্রিটিশ রাজত্ব। স্বদেশী আন্দোলনের জোয়ার তখন সমাপ্ত। কলকাতা থেকে ভারতের রাজধানী তখন দিল্লিতে স্থানান্তরিত হয়েছে। ঐ বৎসরের ২২শে জুন ইংল্যান্ডের রাজা পঞ্চম জর্জের রাজ্যাভিষেক হয়েছিল। এই মহতী অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে ভারতবর্ষ তথা ইংল্যান্ডের বিভিন্ন উপনিবেশে শুরু হয়েছিল রীতিমতো উৎসব।
কান্দিও তার ব্যতিক্রম ছিল না। তৎকালীন কান্দির মহকুমাশাসক কৃষ্ণদয়াল প্রামাণিকের উদ্যোগে এতদ অঞ্চলের বিদ্যোৎসাহী ব্যক্তিদের নিয়ে গড়ে উঠেছিল “করোনেশন কমিটি”। এই কমিটি সাধারণ মানুষের কাছে থেকে অর্থ সংগ্রহ করে একটি গৃহ নির্মাণ করে এবং অতঃপর উদ্বৃত্ত অর্থেই তৈরি হয় করোনেশন লাইব্রেরি। তৎকালীন বাংলার গভর্নর লর্ড হ্যালিফক্সের নামানুসারে নবনির্মিত ভবনের নামকরণ হয় “হ্যালিফক্স ইনস্টিটিউট হল”। প্রথম গ্রন্থাগরিক ছিলেন কান্তিচন্দ্র দাস। তখন তাঁর মাসিক বেতন ছিল তিন টাকা।
১৯৫০ সালের ১৫ই নভেম্বর অর্থাৎ স্বাধীনতার পরবর্তীকালে অনিলরঞ্জন বিশ্বাস মহাশয়ের সভাপতিত্বে লাইব্রেরির নাম পরিবর্তন করা হয়। নতুন নামকরণ হল —- কান্দি সাধারণ পাঠাগার।
★ঋণস্বীকার : ২০০৪ সালে বহরমপুরের “ঝড়” পত্রিকার “বিষয় : মুর্শিদাবাদ” ( প্রথম খণ্ডে) গ্রন্থে বিস্তারিত লেখা হয়েছে। সেদিন অকুণ্ঠ সাহায্য করেছিলেন গ্রন্থাগরিক শ্রীপ্রভাস অধিকারী।