নথিভুক্ত করা হচ্ছে না পরিযায়ীদের নাম, বন্ধ হতে চলেছে শ্রমিক স্পেশ্যাল ট্রেন!

লকডাউনের জেরে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আটকে পড়া পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য ত্রাতার ভূমিকা নিয়েছে ‘শ্রমিক স্পেশ্যাল’ ট্রেন। এর মাধ্যমে বাড়ি পৌঁছতে সক্ষম হয়েছেন ৫৭ লক্ষেরও বেশি মানুষ। কিন্তু এবার চাহিদা কমে আসায় বন্ধ হতে চলেছে শ্রমিক স্পেশ্যাল (Shramik Trains) । সূত্রের খবর, পয়লা জুন থেকে এই ট্রেনগুলিতে সফরের জন্য শ্রমিকদের নাম নথিভুক্ত করা হচ্ছে না।

গত মে মাসের ১ তারিখ থেকে যাত্রা শুরু করে শ্রমিক স্পেশ্যাল ট্রেনগুলি। বিগত কয়েকদিনে ৪ হাজার ১৫৫টি ট্রেনে বাড়ি পৌঁছন ৫৭ লক্ষ শ্রমিক। দু’মাস আগে করোনা রুখতে দেশজুড়ে লকডাউন ঘোষণা করায় বিভিন্ন রাজ্যে আটকে পড়েন লক্ষ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক। তাঁদের বাড়ি ফেরাতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে এই ট্রেনগুলির। জানা গিয়েছে, পয়লা জুন দুশোটি শ্রমিক ট্রেনে অনেকেই টিকিট কেটে বাড়ি ফিরে গিয়েছেন। মালদহের কালিয়াচকের বারোজন শ্রমিক বাড়ি ফিরতে পারছিলেন না। সড়ক পথে অনুমতি না মেলায় দীর্ঘ অপেক্ষায় ছিলেন তাঁরা। শিয়ালদহ থেকে সোমবারই স্পেশাল পদাতিক এক্সপ্রেস চাপেন তাঁরা। হাওড়া থেকে সাতটি ও শিয়ালদহ থেকে পুরী ও আলিপুরদুয়ারগামী ট্রেন চলাচল শুরু হওয়ায় দু’মাস ধরে আটকে পড়া বহু মানুষ বাড়ি ফিরতে পেরেছেন। শুধু তাই নয় আনলক-১ শুরু হওয়ায় অনেকেই কর্মস্থলে ফিরে যান। পাটনা জনশতাব্দিতে মঙ্গলবার বিহার থেকে বহু মানুষ বাংলায় ফেরেন। যাঁদের অনেকেই রেলে ও সরকারি দপ্তরে কাজ করেন

এক স্টেশন মাস্টারের কথায়, “আলটারনেট করে কাজ শুরুর নির্দেশ পেয়েই বিহার লখিসরাইযের বাড়ি থেকে হাওড়ায় এসে কাজে যোগ দিয়েছি। স্পেশ্যাল ট্রেন চালু হওয়ায় সুবিধা হয়েছে।” পূর্ব রেলের হাওড়া ও শিয়ালদহ থেকে ন’টি বিশেষ ট্রেন ছাড়া দক্ষিণ পূর্ব রেলের পাঁচটি ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। হাওড়ার ডিআরএম ইশাক খান বলেন, “স্বরাষ্ট্র দপ্তরের বেঁধে দেওয়া সুরক্ষা আইন মেনে ট্রেন চালানো হচ্ছে। এসি থ্রি টিয়ার ও স্লিপারে ৭২ জন যাত্রী তোলা হচ্ছে, এসি টু তে ৪২ জন। ট্রেনগুলি স্যানিটাইজ করে হাওড়া আনা হচ্ছে। টিকিটধারী যাত্রী ছাড়া আর কারও স্টেশনে ঢোকার অনুমতি নেই। বৈধ যাত্রীদের থার্মাল স্ক্রিনিং করে দূরত্ব রেখে ট্রেনের কাছে নিয়ে টিকিট পরীক্ষা করে ট্রেনে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে।”

উল্লেখ্য, রেলমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল জানিয়েছেন চাহিদা থাকা পর্যন্ত শ্রমিক ট্রেন চলবে। কিন্তু রেলের এক শীর্ষ আধিকারিক জানিয়েছেন, গোটা দেশ থেকে অধিকাংশ পরিযায়ী শ্রমিকই বাড়ি ফিরে গিয়েছেন। তাই আপাতত তেমন চাহিদা নেই শ্রমিক ট্রেনগুলির। গতকাল বা মঙ্গলবার দেশজুড়ে মাত্র ১০২টি শ্রমিক ট্রেন সফর করেছে। সব মিলিয়ে কয়েকদিনের মধ্যেই এই পরিষেবা বন্ধ করা হতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.