পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান নিজের কুর্সি ধরে রাখতে উদাহরণ দিলেন বাংলার। সিরাজদৌল্লার প্রসঙ্গ তুলে ইমরান খান বলেন, তার জোট সরকারের যে বিদ্রোহীরা বিরোধীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ছিলেন, তাদের আগামী দিনে পাকিস্তান ‘মীরজাফর’ হিসেবে চিহ্নিত করবে। এই প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মীরজাফর এবং মীর সাদিক কারা ছিলেন? তিনি (মীরজাফর) ইংরেজের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বাংলা দখল করেছিলেন। ইংরেজের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সিরাজদৌল্লাকে মেরে দিয়েছিলেন। নিজের স্বার্থের জন্য নিজের সম্প্রদায়ের মানুষকে পরাধীন করে তুলেছিলেন। অপরজন (মীর সাদিক) ইংরেজের সঙ্গে হাত মিলিয়ে টিপু সুলতানের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিলেন
সম্প্রতি, বিরোধী জোট ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করেছে। ইমরান সরকারের অন্যতম জোটসঙ্গী মুত্তাহিদা কউমি মুভমেন্ট সমর্থন প্রত্যাহার করেছে। অন্যদিকে, বালোচিস্তান আওয়াম পার্টিও নিজেদের মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। এমন পরিস্থিতির মধ্যে সংখ্যালঘু অবস্থায় রয়েছে ইমরান সরকার। তবুও তিনি দমবার পাত্র নয়। জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেওয়ার সময় তিনি সাফ বলে দিলেন, এখনই ইস্তফা তিনি দিচ্ছেন না। জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেওয়ার সময় ইমরান খান বলেন, ”আমি ২০ বছরের বেশি সময় ধরে ক্রিকেট খেলেছি। কোনওদিন হারার আগে হারিনি। শেষ বল পর্যন্ত টিকে থাকতে শিখেছি। এবারও তাই করব। অনেকে আমাকে ইস্তফা দেওয়ার কথা বলেছে। কিন্তু আমি সেটা করব না। ইস্তফা আমি দেব না। ভোটের ফল যা-ই হোক। আমি আমার সিদ্ধান্তে অনড় থাকব।”পাক সংসদে আস্থা ভোট রয়েছে ৩ এপ্রিল। বর্তমানে সেই ভোটে জিততে মরিয়া হয়ে উঠেছেন ইমরান খান। এমন পরিস্থিতিতে ইমরান খান পাকিস্তানের আওয়ামের সমর্থন পেতে আবেগঘনিত বক্তৃতা দিলেন। তিনি বলেন, ”যুবসমাজকে আমরা কী শিখিয়ে যাব! ওরা জানবে দেশের জনপ্রতিনিধিরা টাকার বিনিময়ে দেশ বিক্রি করেছিল। দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ব্যর্থ হয়েছিল জনপ্রতিনিধিরা। বিরোধীরা জেনে রাখুক, মানুষ কিছু ভোলে না। মীরজাফর এবং মীর সাদিকের ইতিহাস সবাই জানে। মীরজাফর ছিল বিশ্বাসঘাতক। ইংরেজের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বাংলা দখল করেছিল। বিশ্বাসঘাতকদের জন্যই সিরাজদৌল্লাকে মরতে হয়েছিল। মীরজাফর স্বার্থের জন্য নিজের সম্প্রদায়ের মানুষকে পরাধীন করেছিল। টিপু সুলতানের মতো শাসকের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল মীর সাদিক।”সেই সঙ্গে তিনি আরও বলেন, ”পাকিস্তান বরাবর সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়েছে। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আমেরিকার সঙ্গী হয়ে পাকিস্তান যা ফল ভোগ করেছে তা আর কেউ করেনি। আমাকে তালিবান হিসেবে দাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাও আমাকে চুপ করানো যায়নি। পাকিস্তান নাকি যথেষ্ট করেনি, এমনও বলা হয়েছে। কিন্তু পাকিস্তানের প্রতিটি জনতা জানে, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আমরা কী করেছি। পাকিস্তান তার মূল্য পেল না। এটাই আমার সব থেকে বড় আক্ষেপ।”