ক্রিকেট খেলে থেকে ঝগড়া সবই দেবভাষায়। এই ভারতেই এমন একটি গ্রাম রয়েছে যেখানে কথ্যভাষাই সংস্কৃত। সাধারণ কথাবার্তা সংস্কৃতেই হয়। বাড়ির পোষ্য কুকুর-বিড়ালকেও ডাকা, খেতে দেওয়া সবেতেই ব্যবহার করা হয় দেবভাষা। সকলে বোঝেও সেটা। এ গ্রামের কৃষক গরু, মোষকেও নির্দেশ দেন সংস্কৃতে।

সেই গ্রামের নাম মাত্তুর। কর্ণাটকের সিমোগা জেলার মাত্তুর গ্রাম। একদা দ্রাবিড় অধ্যুষিত এই গ্রামে এখনও কথ্যভাষা সংস্কৃত| এখানকার বাসিন্দারা সংস্কৃত ভাষা চর্চার ধারক ও বাহক| কথ্য ভাষায় কিছু কিছু কন্নড়‚ তেলেগু‚ তামিল মিশে গেলেও মূল ব্যাকরণ অনুসরণ করা হয় দেবভাষার। ব্যবহার করা হয় দেবনাগরী হরফ| ওই গ্রামের সব সম্প্রদায়ের, সব পেশার মানুষই ঝরঝরে সংস্কৃত বলেন|

এমন গ্রামে দেবপূজা হবে না তাকি হয়! এখানে রামের মন্দিরের পাশাপাশি রয়েছে সোমেশ্বর ও লক্ষ্মীকেশব মন্দির।

শিশুরা জন্ম থেকেই মাতৃভাষা হিসেবে সংস্কৃত শেখে। স্কুলে পাঠ শুরু হয় বৈদিক স্তোত্র পাঠের মধ্য দিয়ে| এখানে সব স্কুলেই সংস্কৃত প্রথম ভাষা| দ্বিতীয় ভাষা হিসেবে থাকে ইংরেজি বা কন্নড়| তার মানে কিন্তু এই নয়‚ সবাই বড় হয়ে পুরোহিত বা সংস্কৃত ভাষা নির্ভর পেশায় যুক্ত হন। গ্রামের নতুন প্রজন্ম দিব্যি তথ্যপ্রযুক্তি দুনিয়ার সঙ্গে তালমিলিয়ে চলছে।

মাত্তুর অবশ্য একা নয়। জমজ গ্রাম রয়েছে মাত্তুরের। তার নাম হোসাল্লি। তুঙ্গ নদীর পারে হোসাল্লি গ্রামের সংস্কৃতিও একই রকম। এই দুই গ্রামেই অত্যন্ত গামাকা শিল্পের জন্য। কর্ণটকে অত্যন্ত জনপ্রিয় গল্প বলার অনুষ্ঠান গামাকা। মাত্তুরের মতো সকলেই না হলেও এই গ্রামেরও অধিকাংশ মানুষই সংস্কৃতকে কথ্য ভাষা হিসেবে ব্যবহার করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.