১৯৪২ সালের ২ রা জুলাই সিঙ্গাপুরে ভারতীয়দের একটি সভায় বলেছিলেন,
“আমরা যদি আমাদের সেনাদল গঠন না করি — তবেই জাপানীরা আমাদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারে। আমাদের সর্বদা সজাগ থাকতে হবে। বৃটিশ, জাপান, এমন কি আমাদের নিজেদের মধ্যেও প্রত্যেকের উপর প্রতি পদে নজর রাখতে হবে।”
সব রাজনৈতিক দলেই কর্মী ও কার্যকর্তা (নেতা)-দের নজরদারির মধ্যে রাখা না হলে লোভী ও অসাধু সংগঠক সংগঠন শেষ করে দেবে, এই মহামূল্যবান কথাটা নেতাজীর কাছ থেকে আমাদের গ্রহণ করা উচিত। বিশ্লেষণ করা উচিত, নবাগত কর্মী ও নেতাদের নানান সিদ্ধান্তের মনস্তাত্ত্বিক দিকগুলিও। আপাত গ্রহণযোগ্য অথচ দীর্ঘমেয়াদী পার্টি লাইনের প্রতিকূল সিদ্ধান্ত সংগঠনকে ভেতর থেকে নড়বড়ে করে দেওয়ার দীর্ঘমেয়াদী চাল হতে পারে, ‘সাধু সাবধান’। কোনো ব্যক্তি যদি নেতৃত্বের সুবাদে নিজের আখের গোছানোর পুরোপুরি চেষ্টা করে যান, তবে উপযুক্ত প্ল্যাটফর্মে আগেভাগে জানিয়ে রাখাই উচিত। কোনো নেতা বা কার্যকর্তা যদি যোগ্য, মান্য, গুণী এবং দলের কার্যধারার অ-বিরোধী কোনো কর্মী বা অধঃস্তন নেতাকে কারণ ছাড়াই সংগঠনের নানা কাজ থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে চান ও তার প্রতি অকারণ বৈরিতা প্রকাশ করেন, তবে বুঝতে হবে তিনি তাঁর নেতৃত্বদানের সাবলীল ক্ষমতাকে ভয় পাচ্ছেন, নিজের গদি হারানোর ভয়ঙ্কর দুঃস্বপ্ন দেখছেন। দলকে সংগঠিত করতে হলে যোগ্য, মান্য এবং পার্টি-লাইন মেনে চলা কর্মী ও নেতাকে গুরুত্ব দিন। লোভী ও সুযোগসন্ধানী কিছু কর্মী ও নেতা অনেকসময় নিজের সম্ভাব্য-প্রাপ্তি হারানোর ভয়ে এই বিষয়ে ঘটে চলা অন্যায়কে প্রশ্রয় দিয়ে তার শেকড় বহুদূর বিস্তারে সহায়তা করেন।