করোনা আবহে বাড়তি বেড ভাড়া নয়, বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে নির্দেশ স্বাস্থ্য কমিশনের

কোভিড (Coronavirus) পরিস্থিতির অজুহাতে কোনওভাবেই অতিরিক্ত বেড ভাড়া বা CCU ভাড়া নিতে পারবে না বেসরকারি হাসপাতালগুলি। মার্চের ১ তারিখ পর্যন্ত যে নির্দিষ্ট ভাড়া নেওয়া হত, তাইই নিতে হবে। ইতিমধ্যে যেসব বেসরকারি হাসপাতাল ভাড়া বাড়িয়েছে, তাদের ফের কমিয়ে আগের ভাড়া রাখতে হবে। তা হাসপাতালের ডিসপ্লে বোর্ডে স্পষ্ট করে লিখে রাখতে হবে, যাতে রোগীর পরিবারের কাছে এই তথ্য থাকে। আজ স্বাস্থ্য কমিশনের (Health Commission) বৈঠকে এ নিয়ে কড়া নির্দেশ দিলেন কমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি অসীম বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন জারি করা হয়েছে আরও ৪টি অ্যাডভাইজরি। করোনা পরিস্থিতিতে রাজ্যের চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে ওঠা অভিযোগের পাহাড় সামলাতে নতুন কয়েকটি পদক্ষেপ নিয়েছে স্বাস্থ্য কমিশন।

কখনও হাসপাতালে গাফিলতির অভিযোগ, কখনও রোগীর সঙ্গে দুর্ব্যবহার, আবর কখনও করোনা রোগীর চিকিৎসার নামে মোটা অঙ্কের বিল – করোনা আবহে এমনই নানাবিধ অভিযোগ উঠেছে বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে। সেই অভিযোগ এতটাই চরমে উঠেছিল যে স্বাস্থ্য কমিশনকে মুখোমুখি বৈঠকে বসে সেসবের মীমাংসা করার পদক্ষেপ নিতে হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে প্রথমবার দূরত্ববিধি মেনে বৈঠকে বসলেন রাজ্য স্বাস্থ্য কমিশনের সদস্যরা। গোড়া থেকে রোগ চিহ্নিত করে বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে করোনা চিকিৎসায় ৫ দফা গাইডলাইন বেঁধে দেওয়া হল। যার মধ্যে অন্যতম অতিরিক্ত বেড ভাড়া নয়


অনেক সময় অভিযোগ উঠেছে, করোনা রোগীদের অনেকবার অনেকরকম পরীক্ষা করা হচ্ছে। তাতে বিল বাড়ছে। এই অভিযোগের সুরাহা করতে এদিন স্বাস্থ্য কমিশনের সদস্যরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, ৩ সদস্যের কমিটি তৈরি করার। এই কমিটিই স্থির করে দেবে, কোনও রোগীর কোন কোন পরীক্ষা করতে হবে, কতবার তা করতে হবে। এই নির্দেশের বাইরে গিয়ে কোনও হাসপাতালই রোগীর কোনও অতিরিক্ত পরীক্ষা করিয়ে বিল বাড়াতে পারবে না। এই কমিটিতে রয়েছেন প্রাক্তন স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা ডক্টর প্রদীপ মিত্র, শুভেন্দু রায় ও তীর্থঙ্কর মিত্র।

বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে ওষুধ এবং চিকিৎসার সরঞ্জামে ছাড় দেওয়ার সুপারিশ স্বাস্থ্য কমিশনের। ওষুধে অন্তত ১০ শতাংশ এবং চিকিৎসার অন্যান্য সরঞ্জামে ২০ শতাংশ ছাড় দিলে বিলের অঙ্ক কিছুটা কমবে বলে সমাধান সূত্র বের করেছেন কমিশনের সদস্যরা। এছাড়া করোনা রোগীকে দেখার জন্য আগে সর্বোচ্চ ১০০০ টাকা ভিজিট নিতে পারতেন চিকিৎসকরা। কিন্তু পরিস্থিতি বুঝে অনেক আশঙ্কাজনক রোগীর ক্ষেত্রে এই ভিজিট বাড়িয়ে ২ হাজার টাকা করা হয়েছে স্বাস্থ্য কমিশনের বৈঠকে। এছাড়া করোনা আবহে চিকিৎসা নিয়ে কোনওরকম অভিযোগ জানাতে হলে স্বাস্থ্য কমিশনের যোগাযোগের নম্বর-সহ নানা তথ্য রোগীর পরিবারের জন্য হাসপাতালের সামনে ডিসপ্লে বোর্ডে লিখে রাখতে হবে বলেও এদিন নির্দেশ জারি করা হয়েছে।


এদিন বৈঠকের পর বেসরকারি হাসপাতালগুলির তরফে কমিশনের সঙ্গে আলাদা করে বৈঠকে বসার আবেদন জানানো হয়েছে। তা মঞ্জুর করেছেন স্বাস্থ্য কমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি অসীম বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী ২৮ তারিখ ফের নিজেরা বৈঠক করবেন কমিশনের সদস্যরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.