প্রায় এগারো লক্ষ রোহিঙ্গিয়াকে আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ। বিভিন্ন পর্যায়ে ‘রোহিঙ্গিয়া মানবাধিকার’ তত্ব আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বিক্রি করে আশ্রয়দাতা হিসেবে ‘সুনাম’ এবং বহু টাকার প্রকল্পের অর্থ অর্জন করলেও এখন রোহিঙ্গিয়ারাই ওই দেশের মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ভারতে বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গে ও ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে বহু সংখ্যক রোহিঙ্গিয়া যারা জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বিপদজনক হয়ে উঠেছে বলে পর্যবেক্ষকদের ধারণা।
বাংলাদেশের রোহিঙ্গিয়া শিবিরগুলি হয়ে ওঠেছে সন্ত্রাসবাদীদের চারণভূমি। এহেন পরিস্থিতিতে মায়ানমারের ফেরত না পাঠানো পর্যন্ত শরণার্থীদের ‘বোঝা বইতে হবে’ বাংলাদেশকেই বলে এক চিঠিতে উলেখ করেছেন ১২ জন মার্কিন সেনেটর।
জানা গিয়েছে, ৫ নভেম্বর বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেনের কাছে যৌথভাবে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ৯ মার্কিন সিনেটের জেফ মার্কলে, বেন কার্ডিন, ডিক ডারবিন, ক্রিস কুন্স, রন ওয়াইডেন, ক্রিস ভ্যান হলেন, এড মার্কি, করি বুকার ও এলিজাবেথ ওয়ারেন এবং রিপাবলিকান পার্টির তিন সিনেটর মার্কো রুবিও, সুজান কলিন্স ও রজার উইকার। ওই চিঠিতে রোহিঙ্গিয়াদের রাখাইনের ফেরত পাঠানো পর্যন্ত তাদের সুরক্ষার ‘বিরাট বোঝা’ ‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে’ বাংলাদেশকে বয়ে নিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন কংগ্রেসের সদস্যরা।
২০১৭ সালে রাখাইনে বার্মিজ সেনার সন্ত্রাস বিরোধী অভিযানের জেরে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে কয়েক লক্ষ রোহিঙ্গা (Rohingya)। রাখাইন প্রদেশ থেকে প্রাণ বাঁচিয়ে আপাতত ঢাকার আশ্রয়ে রয়েছে অন্তত ১১ লক্ষ শরণার্থী।
কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সহায়তা কার্যক্রম, শিক্ষা কার্যক্রম, জীবিকার সুযোগ সীমিত হওয়া ও ভাসানচরে ‘বলপূর্বক’ স্থানান্তরের মতো বিষয়গুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটররা উদ্বিগ্ন বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, মায়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে এসে অপরাধমূলক কার্যকলাপে জড়িয়েছে রোহিঙ্গিয়ারা। শরণার্থী শিবিরে বসে তোলাবাজি-ডাকাতি, অস্ত্র ব্যবসা, কিশোরী-তরুণীদের দিয়ে হোটেলে নিয়ে দেহব্যবসা ও বিদেশে পাচার থেকে হেন কোনও অপকর্ম বাদ নেই তাদের। এদের জ্বালায় অতিষ্ঠ স্থানীয় বাসিন্দারাও। এহেন দস্যিপনার জন্য এবার তারা কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পাশের পাহাড়ে গড়ে তুলেছে অস্ত্র তৈরির কারখানা।