NRC এর খসড়া প্রকাশের পর নাগরিকত্ব হারানো মানুষের পরিচয় নিয়ে নানা রকম ব্যাখা উত্থাপিত হয়। বাঙ্গালী সেন্টিমেন্টকে উস্কে দেওয়ার জন্য বহু রাজনৈতিক দল প্রকাশ্যে বলছেন যে, এরা সবাই বাঙ্গালী । মুসলিম ভোট ব্যাংক অটুট রাখার জন্য মুসলিম এলাকায় গিয়ে স্বার্থবাড়ি4 রাজনৈতিক দল গুলি গিয়ে বলছে যে , নাগরিকত্ব হারানোর সিংহভাগ হলো মুসলিম। হিন্দু এলাকায় এসে বলা হচ্ছে যে , এদের সিংহভাগ হিন্দু। ভারতীয়-মুসলমানদের সঙ্গে বাংলাদেশী মুসলমানদের জুড়ে দিয়ে মুসলিম বিতাড়ন আতঙ্ক ছড়ানো হচ্ছে। বলা হচ্ছে মায়ানমারের যেভাবে রোহিঙ্গাদের তাড়ানো হয়েছে ঠিক একইভাবে এনআরসি করে ভারত থেকে মুসলিমদের তাড়ানো হবে । শুধু নানা সেকুলার রাজনীতি করা দলগুলি যে যেভাবে পারছে সে এনআরসি বিরোধী প্রচার করছে। অর্থাৎ ভারতের স্থিতিশীলতা, অখন্ডতার প্রশ্নে জড়িয়ে আছে এনআরসির মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় । তা কেবল আজ রাজনৈতিক স্বার্থ পূরণের উপাদানে পরিণত হয়েছে ।
উগ্র অসমীয়া সেন্টিমেন্টকে বা উগ্র বাঙ্গালী সেন্টিমেন্টকে সরিয়ে রেখে এনআরসি নবায়নের প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণ করা যায় তাহলে দেখা যাবে ধর্মের ভিত্তিতে আবার যেন দেশভাগের পরিস্থিতি তৈরি না হয় সেটাই এনআরসির মূল উদ্দেশ্য । কেউ বাংলায় কথা বললে সে বাঙ্গালী হয়ে যাবে বা কেউ অসমীয়াতে কথা বললে সে অহমিয়া হয়ে যাবে , এই বিভ্রান্তি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। ভাষাই যদি ঐক্যের ভিত্তি হত হতো তাহলে দেশ ভাগ হত না ও বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানের মতো দুইটি বিষাক্ত রাষ্ট্রের সৃষ্টি হতোনা । ভাষাগত পরিচয়ের আড়ালে নিজেকে লুকিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ সমাজে মিশে থেকে প্রভাব বিস্তার করা যে ইসলামিক জেহাদিদের পুরনো কৌশল এটা আজ প্রমানিত। ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গের পরিকল্পনা, ক্যালকাটা কিলিং, নোয়াখালি গণহত্যা, দেশ ভাগ, লক্ষ লক্ষ বাঙ্গালী হিন্দুর উদ্বাস্তু হওয়ার ইতিহাস এ কথা বারবার স্মরণ করিয়ে দেয় যে দেশের অখন্ডতা ,ধর্মনিরপেক্ষতা, স্থিতিশীলতা রাখতে গেলে হিন্দু-মুসলমান ভারসাম্য রক্ষা করা জরুরি ।
ধর্মনিরপেক্ষতা ও সংখ্যালঘু স্বার্থ রক্ষা করা সম্ভব নয় হিন্দু মুসলিম ভারসাম্য রক্ষা না করলে। মহান বুলি আওড়ে যোগনে মন্ডল ব্যতীত অন্য কিছু হওয়া যায় না। তা অনুভব করতে গেলে আসাম ও পশ্চিমবঙ্গের মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকাগুলোতে যেতে হবে। ভাষা পরিচয়ের আড়ালে নিজেদের প্রকৃত পরিচয় আড়াল করে হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ ভারতে অনুপ্রবেশ করে ,অনিয়ন্ত্রিত জন্মহার ইত্যাদির মাধ্যমে গজবায় হিন্দকে সফল করার কৌশল মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকায় ইসলামিক জেহাদিদের অতি পরিচিত রণকৌশল ।
আসাম ও পশ্চিমবঙ্গের মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকাগুলো থেকে যথাক্রমে অসমীয়া ও বাঙ্গালী হিন্দুদের নিরন্তর পলায়ন জিহাদিদের সাম্রাজ্য বিস্তারের সেই কৌশলকে স্মরণ করিয়ে দেয় । স্বাধীনোত্তর ভারতে জিহাদিদের সুকৌশলে সংখ্যা বৃদ্ধি ও ভোটের রাজনীতির সঙ্গে তাকে যুক্ত করা আবার সেই দেশে ভাগের পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে । দেশ ভাগের ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা সামনে থাকা সত্বেও স্বাধীনতা অর্জনের সাত দশক অতিবাহিত হয়ে গেলেও ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য কোন রাজনৈতিক দল কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করার সাহস দেখায়নি। সেই দিক থেকে এনআরসি জিহাদিদের অনুপ্রবেশের মাধ্যমে সংখ্যা বৃদ্ধির কৌশল মোকাবিলায় একটি কার্যকরী পদক্ষেপ।
এই বিষয়ের উপরই আরএসএসের পূজ্য সরসঙ্ঘচালকের “এনআরসি এবং সিএএ-এর রাজনীতি সম্পর্কিত বিতর্ক” শীর্ষক বই প্রকাশ করা হবে, ২১ শে জুলাই ২০২১, বুধবার সকাল ১১.০০ টায়।
সরাসরি দেখার জন্য লিঙ্কের মাধ্যমে যোগদান করুন:
ফেসবুক: https://www.facebook.com/1
ইউটিউব: https://www.youtube.com/channel/UC0wP51rKF0yorKXzoSYnqWA