দেড় দশকের একচ্ছত্র শাসনের অবসান, জার্মানির নির্বাচনে পরাজিত অ্যাঞ্জেলা মর্কেলের দল

১৬ বছরের একচ্ছত্র শাসনের অবসান। জার্মানির সাধারণ ভোটে পরাজিত চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মর্কেলের (Angela Merkel) দল। সিরিয়ার শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়া থেকে শুরু করে একাধিক ইস্যুর মাঝে ভোটারদের মন পেতে ব্যর্থ হয়েছে দেশটির শাসক ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ইউনিয়ন (CDU)।


সোমবার নির্বাচনের ফলাফল সামনে এসেছে। জার্মানির সাধারণ নির্বাচনে বাজিমাত করেছে সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (SPD)। ২০০৫ সালের পর এই প্রথম নির্বাচনে জিতল দলটি। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স সূত্রে খবর, ইতিমধ্যে সরকার গঠনের তোড়জোড় শুরু করেছে তারা। জানা গিয়েছে, ২৫.৭ শতাংশ ভোট পেয়ে সবচেয়ে বড় দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটরা। সামান্য কম ভোট অর্থাৎ ২৪.১ শতাংশ ভোট পেয়েছে মর্কেলের ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ইউনিয়ন দল। অন্যান্য দল যেমন লিবারেল ফ্রি ডেমোক্র্যাটসরা পেয়েছে ১১.৫ শতাংশ ভোট। পরিবেশবাদী গ্রিন পার্টির ঝুলিতে পড়েছে ১৪.৮ শতাংশ ভোট। বিশ্লেষকদের মতে, এসপিডি-র জয়ে ইউরোপে ফের মধ্য-বামপন্থী দলগুলির প্রভাব বাড়ছে। তাৎপর্যপূর্ণভাবে, মার্কিন রাষ্ট্রপতি জো বাইডেনও মধ্য-বামপন্থী হিসেবে পরিচিত। সেই কথা তিনি প্রকাশ্যে স্বীকারও করেছেন।

এদিকে, সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির চ্যান্সেলর পদের প্রার্থী ওলাফ শুলজ জানিয়েছেন ক্রিসমাসের আগেই জোট সরকার গড়ে ফেলা হবে। মর্কেলের প্রতিদ্বন্দ্বী ইউনিয়ন দলের প্রার্থী আরমিন লাশেটও সরকার গড়ার চেষ্টা শুরু করেছেন বলে খবর। নতুন চ্যান্সেলর দায়িত্ব না নেওয়া পর্যন্ত কেয়ারটেকার হিসেবে ইউরোপের বৃহত্তম অর্থনীতি সম্পন্ন দেশটির কাজ চালাবেন মর্কেল। বলে রাখা ভাল, ২০২১ সালের নির্বাচনে ৪৭টি দল ৬ হাজার ২১১ জন প্রার্থী দিয়েছে৷ দেশে ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ছিল ছয় হাজার৷

উল্লেখ্য, দীর্ঘ ১৬ বছরের নেতৃত্বে চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মর্কেলের পর কে মসনদে বসবেন, এই নিয়ে বিতর্ক অনেকদিনের। গত শনিবারও শেষ ভোট প্রচারে এসে মর্কেল জানান, এই ভোট জার্মানির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, তিনি জার্মানিকে ভালবেসে যেভাবে এতদিন কাজ করেছেন, সমগ্র জার্মানির উন্নতির কথা চিন্তা করেছেন, তেমনই একজনকে মসনদে বসানো দরকার। তবে বিদায়ী চ্যান্সেলর মর্কেল ভোটের আগে নাগরিকদের সতর্ক করেছেন, জার্মানির প্রয়োজন স্থিতিশীলতা আর তরুণ জার্মানদের দরকার সুন্দর ভবিষ্যৎ। সুতরাং এবার ক্ষমতায় কে থাকবে, সেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.