দেশের মধ্যে এই প্রথম ইস্পাতের রাস্তা তৈরি করা হল গুজরাতে। তবে ইস্পাত বলতেই আপনার চোখের সামনে যে ছবি ভেসে ওঠে, এ কিন্তু ঠিক তেমন নয়। আসলে এই রাস্তা তৈরি করার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়েছে স্টিলের বর্জ্য। বর্তমানে টেকনোলজি এমন জায়গায় পৌঁছে গিয়েছে, যেখানে প্লাস্টিকের বর্জ্য দিয়েও রাস্তা তৈরি করা হচ্ছে। একটি সমীক্ষায় জানা যায়, গোটা বিশ্বে প্রতিবছর লাখ লাখ টন প্লাস্টিক বর্জ্য জমা হতে থাকে। এখন সেই সমস্ত প্লাস্টিক বর্জ্যকে পুনর্ব্যবহারযোগ্য করে বিভিন্ন কাজে লাগানো হচ্ছে।
সম্প্রতি, রাস্তা তৈরির ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হচ্ছে প্লাস্টিক বর্জ্য। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, প্লাস্টিকের বর্জ্য যদি পুনর্ব্যবহারযোগ্য করা না যায়, তাহলে প্লাস্টিক ও অন্যান্য পদার্থের বর্জ্য পাহাড়ের মতন জমা হবে। বর্তমানে ভারত সরকার, এই বিপুল পরিমাণের বর্জ্য পদার্থগুলিকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করছে। সম্প্রতি, এগুলিকে রাস্তা তৈরি করার ক্ষেত্রে ব্যবহারযোগ্য করে তোলা হচ্ছে। ইঞ্জিনিয়াররা জানিয়েছেন, ইস্পাতের বর্জ্য পদার্থ দিয়ে তৈরি করা রাস্তা অন্যান্য পিচের রাস্তার তুলনায় অনেক গুনে ভালো ও টেকসই হবে। শুধু তাই নয়, অনেক বেশি মাল বহনকারী গাড়ির ওজনকেও বহন করতে পারবে।
পরীক্ষামূলক এই রাস্তা তৈরির জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে গুজরাতের সুরতে হাজারি শিল্পাঞ্চলকে। জানা গিয়েছে, হাজারি এলাকায় প্রথম ইস্পাতের রাস্তা তৈরি করা হল কাউন্সিল অফ সাইন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ, সেন্ট্রাল রোড রিসার্চ ইউনিট, স্টিল মন্ত্রক ও নীতি আয়োগের উদ্যোগে। জানা গিয়েছে, পরীক্ষামূলক ভাবে ওই এলাকায় ইস্পাতের বর্জ্য পদার্থ দিয়ে ছয় লেনের এক কিলোমিটার রাস্তা তৈরি করা হয়েছে। এই রাস্তা তৈরি প্রসঙ্গে সিআরআরআই-এর অধ্যক্ষ তথা বিজ্ঞানী সতীশ পান্ডে জানিয়েছেন, ”গুজরাতের হাজিরা বন্দরের এক কিলোমিটার রাস্তার অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। ভারী ভারী ট্রাক যাতায়াত করায় সেই ভার বহন করতে পারছিল না রাস্তা। ফলে রাস্তার প্রভূত ক্ষতি হচ্ছিল। কিন্তু ইস্পাত বর্জ্য দিয়ে রাস্তা বানানোর পর দেখা গেল দিনে হাজারেরও বেশি ট্রাক কয়েক লক্ষ টন ওজন নিয়ে যাতায়াতের পরেও রাস্তার কোনও ক্ষতি হয়নি। যেমন বানানো হয়েছিল ঠিক তেমনই রয়েছে।”