ক্রমশ জটিল হচ্ছে লাদাখের পরিস্থিতি। আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করার কথা বারবার ভারতের তরফে বলা হচ্ছে। কিন্তু এরপরেই সীমান্তের ওপারে রণসজ্জা সাজাচ্ছে চিন। ইতিমধ্যে কয়েক হাজার সেনা সমাবেশ করেছে বেজিং। যদিও পালটা হিসাবে ভারতও ঘুঁটি সাজাচ্ছে সীমান্তে। চিন সীমান্ত ঘেঁষে মিসাইল সিস্টেম সহ একগুচ্ছ অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র মোতায়েন করেছে ভারত।
কিন্তু যুদ্ধ নয়, আলোচনার মাধ্যমেই সমস্যা সমাধান করতে চায় মোদী সরকার। অন্যদিকে, শুক্রবার জানা গিয়েছে, ভারতের বিদেশ সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা এই বিষয়ে আমেরিকা, ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া, জাপানকে ব্যাখ্যা দিয়েছে। লাইন অফ অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোলে ঠিক কী পরিস্থিতি তা জানানো হয়েছে। সীমান্ত সমস্যা সমাধানে গত এক সপ্তাহ ধরে কি আলোচনা হয়েছে তাও জানানো হয়েছে।
অন্যদিকে শুক্রবার সকালে হঠাত করেই লাদাখে পৌঁছে যান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সীমান্তে এখন প্রতি মুহূর্তে চাপা টেনশন, কড়া নজরদারি। এই পরিস্থিতিতে জওয়ানদের মনোবল আরও চাঙ্গা করতে লাদাখ পৌঁছে যান প্রধানমন্ত্রী। কথা বলেন সেনা-আধিকারিক, জওয়ানদের সঙ্গে। আর তাতেই ঘুম ছুটেছে চিনের। লাদাখে মোদী পা রাখার পর থেকে একের পর এক বিবৃতি বেজিংয়ের তরফে। কখনও আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মেটানোর দাবি। আবার কখনও হুমকি…
কমিউনিস্ট সরকারের মুখপত্র গ্লোবাল টাইমস-এর এডিটর-ইন-চিফ হু শিজিন মোদীর লাদাখ সফর নিয়ে টুইট করেছেন। সেখানে প্রধানমন্ত্রীর এদিনের মোদীর সফরকে রাজনৈতিক চমক বা স্টান্ট বলে ব্যাখ্যা করেছেন। এরপরেই চরম হুঁশিয়ারি এডিটরের। সেনাবাহিনীর হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেছেন, ভুলেও যেন চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মির ধারে কাছে না আসে ভারতীয় সেনাবাহিনী।
টুইটে তিনি লিখেছেন, আমি বুঝতে পারছি প্রধানমন্ত্রী মোদী সীমান্তে রাজনৈতিক চমক দেখিয়ে কড়া কড়া কথা বলা দরকার হয়ে পড়েছে। কিন্তু দয়া করে চুপি চুপি সীমান্তে ভারতীয় জওয়ানদের বলে দিন, যে চিনকে তোমরা চেন, সে কিন্তু ভারতের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিধর। পিএলএ-র সঙ্গে যেন তারা পাল্লা দিতে না যায় কেননা পিএলএ-র কাছে তারা কিছুই নয়।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার হঠাৎ লাদাখ পরিদর্শনে যান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)। সীমান্তে দাঁড়িয়েই চিনকে কড়া বার্তা দেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন ‘গালওয়ান আমাদের’। লাদাখ সীমান্তে মোতায়েন সেনাবাহিনীর মনোবল বাড়াতে শুক্রবার ভোরেই লাদাখে পৌঁছন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)। লেহ থেকে সেনার চপারে করে নিমুতে ফরোয়ার্ড পোস্টে পৌঁছন মোদী।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গী ছিলেন চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল বিপিন রাওয়াত ও সেনাপ্রধান মনোজ মুকুন্দ নারাভানে। সীমান্তে মোতায়েন সেনার মনোবল বাড়াতে তাঁদের সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
এরপর সেনাবাহিনীকে উদ্দেশ্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদের বীরত্বের জন্যই দেশ আজ সুরক্ষিত।’ লাদাখ সীমান্তে চিনা আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ভারত একজোটে লড়াই করবে বলে বার্তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।