তালিবানের শক্তি বৃদ্ধিতে জেহাদে ইন্ধন পেতে পারে চেচেন জেহাদিরা

আফগানিস্তানে তালিবানের হঠাৎ উত্থানে উদ্বিগ্ন রাশিয়া। গত দু’সপ্তাহে পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে আফগান সরকারি বাহিনীর বহু সৈনিক প্রাণ বাঁচাতে তাজিকিস্তান ও উজবেকিস্তানে পালিয়ে আশ্রয় নিচ্ছে।
এরই মধ্যে, এবার আফগানিস্তান সীমান্তে উজবেকিস্তান ও তাজিকিস্তানের সঙ্গে যৌথ সামরিক মহড়া শুরু করতে চলেছে রাশিয়ার সেনাবাহিনী।

রুশ বিদেশমন্ত্রক জানিয়েছে, আগস্ট মাসের ৫ থেকে ১০ তারিখ পর্যন্ত আফগান সীমান্ত লাগোয়া তাজিকিস্তানের খারভমাইদন সামরিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের কাছে মহড়া চালাবে রাশিয়া, উজবেকিস্তান ও তাজিকিস্তানের ফৌজ। রুশ সেনাবাহিনীর সেন্ট্রাল মিলিটারি ডিস্ট্রিক্ট কমান্ডার আলেকজান্ডার লাপিন জানান, আচমকা সীমান্তের অপার থেকে সশস্ত্র হনদার বাহিনী হামলা চালালে কীভাবে পরিস্থিতির মোকাবিলা করা হবে সেই কৌশল ঝালিয়ে নিতেই এই মহড়া। বিশ্লেষকদের মতে, তাজিকিস্তান ও উজবেকিস্তান লাগোয়া বেশ কিছু বর্ডার পোস্ট দখল করেছে তালিবান। সামরিক শক্তির নিরিখে ওই দুই দেশের মিলিত বাহিনীর চাইতে তালিবানের সৈন্য সংখ্যা বেশি। ফলে যে কোনও মুহূর্তে আফগানভূম থেকে যুদ্ধের দাবানল এই দুই দেশে ছড়িয়ে পড়তে পারে। আর তেমন হলে রীতিমতো বিপাকে পড়বে রাশিয়া। কারণ মস্কোর প্রতিপত্তি থাকা মধ্য এশিয়ার এই দেশগুলিতে তালিবান শিকড় ছড়ালে রুশ ভূখণ্ডে জেহাদ ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনব বেড়ে যাবে। এমনিতেই মুসলিম চেচেন জঙ্গিরা বহুবার মস্কোর রক্তচাপ বাড়িয়েছে। তাই আফগান সীমান্তের বাইরে তালিবানের উত্থান পুতিন প্রশাসনের চিন্তার কারণ হয়ে উঠবে।

উল্লেখ্য, ১৯৫০ সালে আফগানিস্তানের আধুনিকীকরণ শুরু করেন দেশটির শেষ সম্রাট মহম্মদ জাহির শাহ। ওই বছরই শাহর সঙ্গে সম্পর্ক মজবুত করে বাগরাম বায়ুসেনা ঘাঁটিটি তৈরি করে সোভিয়েত ইউনিয়ন। ১৯৭৯ সালে আফগান কমিউনিস্টদের মদত দিতে ওই বায়ুসেনা ঘাঁটিতেই নামে সোভিয়েত হানাদার ফৌজ। বাকিটা ইতিহাস। এক রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ে আমেরিকার মদতপুষ্ট মুজাহিদদের হাতে মার খেয়ে আফগানিস্তান ত্যাগ করে লালফৌজ। কিন্তু সেদিন ওয়াশিংটনের বিজয় উল্লাস দেখে বিধাতা আড়ালে মুচকি হেসেছিলেন।

একবিংশ শতাব্দীতে সেই বাগরামই দেখল বিধ্বস্ত মার্কিন ফৌজের পশ্চাদপসরণ। আর ফের আফগান সীমান্তে রুশ ফৌজের আনাগোনা আবারও ঠান্ডা লড়াইয়ের দিনগুলির স্মৃতি উসকে দিচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.