দিল্লি হাই কোর্টের নির্দেশে অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশন (AIFF) সমেত ৫৪টি ক্রীড়া সংস্থার সরকারি অনুমোদন আপাতত বাতিল করতে বাধ্য হল কেন্দ্রীয় ক্রীড়াদপ্তর। ফলে যখন মনে হচ্ছিল, লকডাউন সামলে আগস্ট থেকে ধীরে ধীরে দেশে বিভিন্ন ক্ষেত্রে খেলাধুলো শুরু হবে, ঠিক তখনই কেন্দ্রীয় ক্রীড়া দপ্তরের অনুমোদন বাতিলে বেশ কিছুটা সমস্যা তৈরি হয়ে গেল। বেশ কয়েক বছর ধরেই বিভিন্ন ক্রীড়া সংস্থাগুলির অনিয়ম নিয়ে আইওএর বিরুদ্ধে দিল্লি হাই কোর্টে আইনি লড়াই লড়ছেন আইনজীবী রাহুল মেহেরা। তারই পরিপ্রেক্ষিতে এই সমস্যা।
প্রতিবছর আইওএর অধীনে দেশের সব ক্রীড়া সংস্থাকে কেন্দ্রীয় ক্রীড়াদপ্তর থেকে সরকারি অনুমোদন নিতে হয়। অনুমোদনের সময়কাল জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত। সরকারি অনুমোদন না থাকলে কোনও সংস্থাকেই আর্থিক ভাবে সহায়তা করতে পারবে না কেন্দ্রীয় ক্রীড়াদপ্তর। সাধারণত জানুয়ারি থেকেই এই অনুমোদন দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যায়। তবে যেদিন থেকে দিল্লি হাই কোর্ট বিভিন্ন ক্রীড়া সংস্থার নিয়মাবলীর বৈধতা নিয়ে দেখভাল করছে, তখন থেকে কোনও সংস্থাকে অনুমোদন দিতে গেলে আদালতের অনুমতি লাগে।
কিন্তু এবার পরিস্থিতিটাই ভিন্ন। কোভিড-১৯ এর কারণে কোনও সংস্থাই সঠিক সময়ের মধ্যে যাবতীয় কাগজপত্র তৈরি করতে পারেনি। তাই কেন্দ্রীয় ক্রীড়াদপ্তর সংস্থাগুলিকে কাজ চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সাময়িক ভাবে সরকারি অনুমোদন দিয়েছিল। আর এখানেই বিপত্তি। দিল্লি হাই কোর্ট জানিয়ে দিয়েছে, তাদের অনুমোদন ছাড়া এভাবে সরকারি অনুমোদন দেওয়া সম্ভব নয়। আর তাতেই ৫৪টি ক্রীড়া সংস্থার সরকারি অনুমোদন আপাতত বাতিল করতে বাধ্য হয়েছে কেন্দ্রীয় ক্রীড়াদপ্তর। এই সংস্থাগুলির মধ্যে অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশন ছাড়াও রয়েছে, টেনিস, অ্যাথলেটিক, ব্যাডমিন্টন, বাস্কেটবল, বক্সিং, হকি, সাইক্লিং, টেবিল টেনিস, সুইমিং, ভলিবলের মতো আরও অনেক সংস্থা।
কেন্দ্রীয় ক্রীড়াদপ্তর সূত্রে বলা হয়েছে, সরকারি অনুমোদন ছাড়া কোনও সংস্থাকেই তারা আর্থিক ভাবে সহায়তা করতে পারবে না। ফলে দেশের বিভিন্ন অলিম্পিক ইভেন্টগুলির প্রস্তুতি বিশাল সমস্যার মুখে পড়ে গেল বলা যায়। শুধুই আর্থিক সমস্যা নয়। আন্তর্জাতিক কোনও প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার জন্য যে জাতীয় শিবির হয়, তা করতে গেলেও কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমতি নিতে হয়। আর কেন্দ্রীয় সরকারি শুধু তাদেরই জাতীয় শিবির করার অনুমতি দেয়, যাদের কাছে সরকারি অনুমোদন রয়েছে। তবে সব শেষ হয়ে গেল ব্যাপারটা এরকমও নয়। শোনা যাচ্ছে কিছুদিনের মধেই ক্রীড়া সংস্থাগুলিকে অনুমোদন দেওয়ার জন্য ফের দিল্লি হাইকোর্টের কাছে আবেদন করবে কেন্দ্রীয় ক্রীড়াদপ্তর। এই প্রসঙ্গে অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশন সচিব কুশল দাস বললেন, “সব কিছু আইনি পদ্ধতিতে এগোচ্ছে। আশা করছি, কিছুদিনের মধ্যেই যাবতীয় সমস্যা মিটে যাবে। আইওএ এবং কেন্দ্রীয় ক্রীড়াদপ্তর পুরো ব্যাপারটা দেখছে।”