রাম জন্মভূমি আন্দোলনের সেই unsung hero হলেন কল্যাণ সিং

ইংরেজিতে একটা কথা আছে, unsung hero, এটার বাংলা কি জানিনা তবে অখ্যাত নায়ক বলা যেতে পারে। রাম জন্মভূমি আন্দোলনের সেই unsung hero হলেন কল্যাণ সিং। মন্দির আন্দোলনে আদবানী, উমা ভারতী, বিনয় কাটিয়ার, এমনকি সাধ্বী ঋতম্ভরাও এক সময় যতটা প্রচার পেয়েছিলেন তার কণামাত্র পাননি কল্যাণ সিং অথচ ভারতের স্বাভিমানের উপর কলঙ্কচিহ্ন হয়ে থাকা বাবরি মসজিদ ধ্বংসের জন্যে তিনি নিজের সরকারকে বিসর্জন দিতেও বিন্দুমাত্র দ্বিধা করেননি।

কংগ্রেসের সমর্থনে, কেন্দ্রে যখন দেবেগৌড়ার সরকার গঠিত হয় তখন রাজ্যপাল রমেশ ভান্ডারীকে ঘুটি বানিয়ে, বরখাস্ত হয় গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচিত কল্যাণ সিং-এর সরকার এবং বসানো হয় জগদম্বিকা পাল নামের এক পুতুলকে। তিন রাত্রি ক্ষমতায় থাকাকালীন জগদম্বিকা কত লক্ষ টাকার ফোনের বিল তোলেন সেটা, সেই সময় যারা রাজনৈতিক খবরাখবর রাখতেন, তাদের মনে আছে। যদিও প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং বর্তমান প্রতিরক্ষামন্ত্রী, রাজনাথ সিং, কল্যাণ সিং-এর মন্ত্রীসভাতেই শিক্ষামন্ত্রী হিসাবে প্রথম প্রচারের আলোয় আসেন কিন্তু রাজনাথের ‘কড়ি নিন্দা’র সংস্কৃতি কল্যাণ সিং-এর ছিলনা। তাই তিনি রাজ্যপালের অসাংবিধানিক সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে যান এবং দেশের ইতিহাসে প্রথমবার, এবং এখনও অবধি সম্ভবত একবারই, বিধানসভাতে দুইজন মুখ্যমন্ত্রীর যুগপৎ আস্থাভোট নেয়া হয়। সেই ভোটে জগদম্বিকা পালকে হারিয়ে এবং কংগ্রেসের মুখে চুনকালি মাখিয়ে জয়ী হন কল্যাণ সিং।

কল্যাণ সিং নিজে সমাজের পিছিয়ে থাকা জনগোষ্ঠী থেকে রাজনীতির পাদপ্রদীপের আলোয় আসলেও না নিজের শিকড়কে কখনও ভুলেছেন আর না রাজনৈতিক স্বার্থে সেটার কখনও অপব্যবহার করেছেন। জাতপাতের রাজনীতিতে খন্ডিত উত্তর প্রদেশকে তিনি হিন্দুত্বের সুতোয় বাঁধার চেষ্টা করেছিলেন। তার মৃত্যু, নিঃসন্দেহে, দেশের রাজনীতিতে এক শূন্যতার সৃষ্টি করবে। ওম শান্তি!

সংগৃহিত

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.