কফি হাউজের সেই আড্ডাটা আজ আর নেই…’। মান্না দে-র গাওয়া বিখ্যাত গান। অবশ্য শুধু বিখ্যাত গান বলা আন্ডারস্টেটমেন্ট। বাংলা গানের ইতিহাসে কালজয়ী যে সমস্ত গান রয়েছে, তার মধ্যে একেবারে উপরের সারিতে এই গানটির স্থান। অত্যন্ত জনপ্রিয় এই গানটি এখনও লোকের মুখে মুখে ফেরে। লাইন ধরে অনেকেই মুখস্থ গানটি বলে দিতে পারবেন। একই ভাবে গানের চরিত্রদের ঘিরেও বাঙালির আলাদা আবেগ রয়েছে। নিখিলেশ, মইদুল, ডি সুজা, রমা রায়, অমল, সুজাতা এবং লেখক নিজে। অনেকে আবার মান্না দে-কেই সপ্তম বন্ধুর আসনে বসিয়ে থাকেন।
দেখুন জালিয়াতি:
কখনও কৌতূহল হয়েছে আপনাদের, এই চরিত্ররা আসলে কে? এঁরা সত্যিই বাস্তবের কোনও চরিত্র, না গীতিকার গৌরীপ্রসন্ন মজুমদারের কল্পনাপ্রসূত? উত্তর এখানে না পাওয়া গেলেও বাংলাদেশে নাকি পাওয়া গিয়েছে! এবং একজন নন, গানের দু’ জন চরিত্র নাকি বাংলাদেশেরই বাসিন্দা, এমনটাই দাবি করেছে সে দেশের বহু সাংবাদপত্র এবং নিউজ চ্যানেল। এঁরা হলেন মইদুল এবং সুজাতা। এটা একেবারে নিখাদ-বিশুদ্ধ মিথ্যে। কেন তা পুরো প্রতিবেদনটি পড়লেই বুঝবেন।
এঁদের মধ্যে প্রথমজন অর্থাত্ মইদুল যিনি বাংলাদেশে পরিচিত নুর আহমেদ মইদুল হিসাবে। বাংলাদেশের বহু সংবাদপত্রে ইনি কাজও করেছেন বলে দাবি করা হয়। ২০১৪ সালের ২৬ নভেম্বর তিনি প্রয়াত হন। অন্তত তেমনটাই দাবি সে সমস্ত প্রতিবেদনের। দ্বিতীয় চরিত্র অর্থাত্ সুজাতা বর্তমানে আওয়ামি লিগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ওয়ালিউর রহমান রেজা-র স্ত্রী। রেজা-কে ভালোবেসে তিনি ১৯৭২ সালে তাঁকে বিয়ে করেন।
কিন্তু আসল সত্যিটা কী? সেটা জানালেন কালজয়ী গানের গানের সুরকার সুপর্ণকান্তি ঘোষ স্বয়ং। তিনি বলেন, ‘অসভ্য, বর্বর, অসত্, মিথ্যে একটা জিনিস ভাইরাল হয়েছে। এর সঙ্গে বাস্তবের কোনও মিল নেই। চরিত্রগুলি গৌরী কাকার কল্পনাপ্রসূত এবং গানের আইডিয়াটি আমার। একবার প্যারিসের কাছে মঁমার্তে গিয়েছিলাম। সেখানে অশ্বক্ষুরের মতো একটা ঢিপি রয়েছে। তার চারপাশে রয়েছে অনেক কফিশপ এবং সুভেনিয়ের শপ রয়েছে। যে গাইড আমাকে নিয়ে গিয়েছিলেন, তিনি বলেন এই সব কফিশপে ত্রুফোঁ, এল সালভাদোর দালি, পাবলো নেরুদা-র মতো ব্যক্তিরা বসে আড্ডা দিতেন। সেখান থেকেই আড্ডাটা মাথায় ঢুকে গিয়েছিল। যে সব জিনিস প্রচার করা হচ্ছে তার কোনও সারবত্তা নেই !
ঋণ স্বীকার: রূপায়ণ ভট্টাচার্য !