কলকাতার ছেলে তমাল ভট্টাচার্য আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে শিক্ষকতা করতো। সে মার্কিন সেনাবাহিনী ও ভারত সরকারের কৃপায় নিরাপদে কলকাতা ফিরে এলেও, সে আমেরিকান সেনাবাহিনী কিংবা ভারত সরকারের কোন প্রশংসা করিনি। বরং তমাল ভট্টাচার্য বলেছে, তালেবানরা তার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করেছে – তাই তালেবানদের চেয়ে মানবিক ও অমায়িক পরাশক্তি, বিশ্বে দ্বিতীয়টি নেই। অর্থাৎ তমাল ভট্টাচার্যের দৃষ্টিতে, তালেবানদের সমস্ত মানবতাবিরোধী জঘন্য অপরাধ ও নারীর প্রতি ইতিহাসের বর্বরোচিত সহিংসতা ইত্যাদি অপকর্ম সমূহ বৈধ হয়ে গেছে; যেহেতু তা*লেবানরা তমাল ভট্টাচার্যের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করেছে!
তালেবানদের উদ্দেশ্যে প্রদত্ত তমাল ভট্টাচার্যের টেস্টিমোনিয়াল, বাংলাদেশের মিডিয়া ও সোশ্যাল মিডিয়া এমন ফলাও করে প্রচার করেছে, তাতে মনে হচ্ছে- পৃথিবীতে মানবতা প্রতিষ্ঠার একমাত্র সোল এজেন্সি পেয়েছে, আফগানিস্তানের তা*লেবানরা।
তমাল ভট্টাচার্য বলেছে, ইসলাম অত্যন্ত উদার ও সহনশীল ধর্ম। তার ভাষায় ইসলাম ধর্ম নারী স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছে। কিন্তু ‘অত্যন্ত উদারতা-সহনশীলতা’ ও ‘নারী স্বাধীনতা’-র কথা কোরআন ও সহী হাদীসের কোথায় লেখা আছে – তা সে বলেনি। কোরআন ও সহী হাদীসের বাইরে কোনো কিছুই ‘ইসলাম ধর্ম’ নয়। আমি কোরআন ও সহী হাদীস পড়েছি। আলেমদের কাছ থেকে তরজমা বুঝেছি। কোরআন ও সহী হাদীসের কোথাও আমি দেখি নি- সেখানে অমুসলিমদের প্রতি সামান্যতম উদারতা ও সহিষ্ণুতা প্রদর্শনের কথা বলা হয়েছে কিংবা নারী স্বাধীনতার কথা বলা হয়েছে!
তাহলে তমাল ভট্টাচার্য ইসলামের নামে এসব মনগড়া কথা প্রচার করে – ইসলামের প্রতি অমুস*লিমদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করলো কেন?
তমাল ভট্টাচার্য সম্পর্কে খোঁজ নিতে গিয়ে, পশ্চিমবঙ্গের মূল ধারার মিডিয়ার মাধ্যমে জানতে পেরেছি – তমাল ভট্টাচার্য পড়াশোনা করেছে ‘রামকৃষ্ণ মিশন’- স্কুলে।
‘মিশন’ একটি ইংরেজী শব্দ – যার অর্থ দলবদ্ধভাবে বিশেষ উদ্দেশ্য সাধন করা। কলকাতার এক ভদ্রলোক, আমেরিকা জয়ের কল্পকাহিনী প্রচার করে – ‘রামকৃষ্ণ মিশন’ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে হিন্দুদের মাথায় ‘সর্বধর্ম সমন্বয়’ ঢুকিয়ে দিয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানটি উদ্দেশ্যমূলকভাবে প্রচার করে বেড়ায় যে, সনাতন ধর্ম, ইসলাম ধর্ম ও খ্রিস্ট ধর্ম আসলে একই। সনাতন ধর্মের শ্রেষ্ঠত্ব আড়াল রাখার করে রাখার জন্য এবং ইসলাম ও খ্রিস্টধর্মের প্রতি হিন্দুদের শ্রদ্ধাশীল করে তোলার জন্য ― এই কৌশলী অপপ্রচার চালানো হয়। খ্রিস্টান ও মুসলমানদের জনবল বেশী, অর্থ বল বেশী, বাহু বল বেশী। সঙ্গত কারণেই ‘সর্বধর্ম সমন্বয়’ নামক আফিনের নেশায়, দরিদ্র ও অসহায় হি*ন্দুরা ধর্মান্তরিত হতে উৎসাহিত হচ্ছে।
রামকৃষ্ণ মিশনের একজন বিদ্বান মহারাজকে আমি বলেছিলাম, আপনারা ‘সর্বধর্ম সমন্বয়’ প্রচার না করে, ‘সর্ববর্ণ সমন্বয়’ প্রচার করে- হিন্দু সমাজের ক্যান্সার ‘বর্ণভেদ প্রথা’ বিলুপ্ত করুন। ভদ্রলোক আমার প্রস্তাবের সরাসরি প্রতিউত্তর না দিয়ে, ঘন্টার পর ঘন্টা উদ্দেশ্যহীন আলোচনা করেছে।