নির্ভয়া-কাণ্ডে দোষীদের ফাঁসির শাস্তি বহাল রই। এক অপরাধীর মৃত্যুদণ্ডের রিভিউয়ের আবেদন খারিজ করে দিল সুপ্রিম কোর্ট। বুধবার শীর্ষ আদালতের তিন বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ দোষী অক্ষয় সিংয়ের মৃত্যুদণ্ডাদেশই বহাল রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
অক্ষয় সিং নামে ওই অপরাধী তার আবেদনে জানিয়েছিল যে দিল্লির দূষণে এমনিতেই তার আয়ু কমে যাচ্ছে, তার মৃত্যুদণ্ডের আদেশ যেন খতিয়ে দেখা হয়। কিন্তু ধোপে টেকেনি তার আবেদন।
অক্ষয় সিংয়ের আইনজীবী রায় পুনর্বিবেচনার ক্ষেত্রে আরও যুক্তি দেখান যে এই মামলায় সিবিআই তদন্তের দাবি উঠলেও শেষ পর্যন্ত এর সিবিআই তদন্ত হয়নি। এই প্রসঙ্গে তিনি গুরুগ্রামে ২০১৭ সালের হত্যা মামলার কথা উল্লেখ করে বলেন, “কিন্তু গুরুগ্রামের স্কুল মামলায় সিবিআই তদন্ত হয় এবং দেখা যায় যে প্রাথমিকভাবে দোষী সাব্যস্ত বাস কন্ডাক্টরকে ক্লিন চিট দেয় সিবিআই”। তিনি বলেন, “তাঁকে ওই মামলায় জোর করে জড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল” এবং এর থেকেই “প্রকৃত অপরাধীদের” ধরার ক্ষেত্রে সরকার যথেষ্ট সক্রিয় হয়নি।
এদিন সলিস্যিটর জেনারেল তুষার মেহতা বলেন, ‘এমন কিছু অপরাধের ঘটনা ঘটে, যাতে গোটা মানবজাতির চোখে জল আসে।’ নির্ভয়ার ঘটনাকে সেরক এক ঘটনার সঙ্গে তুলনা করেছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘সেদিন ভগবানেরও মাথা লজ্জায় নত হয়ে গিয়েছিল, দুটি কারণে। প্রথমত এক নিষ্পাপ মেয়েকে বাাঁচাতে পারেনি বলে, আর দ্বিতীয়ত ওই পাঁচ দৈত্যকে সৃষ্টি করার জন্য।’
এই প্রসঙ্গে শীর্ষ আদালত বলে, “আমরা কোনও লেখকের মতামত অনুসারে যেতে পারি না। কোনও বিচারপ্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পরে যদি কেউ বই লেখা শুরু করে এবং এই জাতীয় কথা বলে তবে এটা একটা বিপজ্জনক অবস্থায় চলে যাবে। এই ধরণের যুক্তি শুনতে হলে কোনওদিনই কোনও মামলার শেষ হবে না। বিচারের সময়েই তাঁর এই সব কথা বলা উচিত ছিল।’
প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদে নির্ভয়া মামলার রায় পুনর্বিবেচনার এই মামলা থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়ায় বর্তমানে বিচারপতি আর ভানুমথি, অশোক ভূষণ ও এএস বোপান্নার বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হয়।
এদিনের রায়ে খুশি নির্ভয়ার মা আশা দেবী। তিনি বলেন, নির্ভয়ার দোষীদের শাস্তি আরও এক ধাপ এগোল।