১৯২৭ সালের ৯ জানুয়ারী তারিখে উত্তরাখণ্ডে সুন্দরলাল বহুগুণা জন্মগ্রহণ করেন। সুন্দরলাল বহুগুণা একজন খ্যাতনামা পরিবেশবিদ এবং চিপকো আন্দোলনের জনক ছিলেন।
“১৩ বছর বয়সেই শুরু করেছিলেন রাজনৈতিক সফর”
মাত্র ১৩ বছর বয়সেই মহাত্মা গান্ধীর অনুগামী সুন্দরলাল বহুগুণা নিজের রাজনৈতিক সফর শুরু করেছিলেন। ১৯৪৯ সালে মীরাবেণ ও ঠক্কর বাপ্পার সঙ্গে বহুগুণার সাক্ষাৎ হয়। এখান থেকেই তাঁর আন্দোলন শুরু হয়। তাঁর প্রথম আন্দোলন ছিল দলিতদের মন্দিরে প্রবেশের অধিকার প্রসঙ্গে। সমাজের জন্য কাজ করার দরুন বহুগুণা ১৯৫৬ সালে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার পরে তিনি রাজনৈতিক জীবন থেকে সন্ন্যাস নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এরপরে, স্ত্রী বিমলা নৌটিয়ালের সহযোগে তিনি বহুগুণা পরিবর্তিত এক নতুন জীবনে পা দিলেন।
“১৯৭০ সালে সূচনা হয়েছিল চিপকো আন্দোলনের”
সুন্দরলাল বহুগুণা মনে করতেন যে, গাছ কাটার থেকে বেশি গাছ লাগানো বেসি গুরুত্বপূর্ণ। এইজন্যে তিনি ১৯৭০ সালে গাড়োয়াল হিমালয়ে গাছ কাটার বিরোধিতায় তিনি আন্দোলন শুরু করেন। এই আন্দোলনের স্লোগান ছিল- “ক্যায়া হ্যা জঙ্গল কা উপকার, মিট্টি, পানি আউর বয়ার। মিট্টি, পানি আউর বয়ার, জীবন কা আধার”। ১৯৭১ সালে মদের দোকান খোলার বিরোধিতায় সুন্দরলাল বহুগুণা একটানা ১৬ দিন অনশন করেছিলেন।
“১৫ বছরের জন্য গাছ কাটায় জারি হয়েছিল নিষেধাজ্ঞা”
ধীরে ধীরে এই আন্দোলন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। ১৯৭৪ সালের ২৬শে মার্চ চামোলি জেলায় যখন ঠিকাদারেরা গাছ কাটার জন্য এগিয়ে আসে। তখন, গ্রামের মহিলারা গাছের সঙ্গে সেঁটে দাঁড়িয়ে যান। ফলস্বরুপ, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ১৫ বছরের জন্য গাছ কাটায় নিষেধাজ্ঞা জারি করে দেন। এই চিপকো আন্দোলনের কারণেই সুন্দরলাল বহুগুণা সারা বিশ্বে “বৃক্ষমিত্র” নামে পরিচিত লাভ করেন।
“১৯৮১ থেকে শুরু করে ২০০১ সাল পর্যন্ত এই সমস্ত পুরস্কারে ভূষিত করা হয়েছিল”
পরিবেশঘটিত বিভিন্ন কাজে উল্লেখযোগ্য ছাপ রাখার কারণে সুন্দরলাল বহুগুণা ১৯৮১ সালে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, তিনি সেই পুরস্কার নেওয়ার ব্যাপারে আপত্তি জানালেন। এর কারণস্বরূপ তিনি জানিয়েছিলেন যে, জতদিন গাছ কাটতে থাকা হবে, ততদিন তিনি উক্ত পুরস্কার নেবেন না। এরপর তাঁকে নিম্নলিখিত পুরস্কারে সম্মানিত করা হয়েছিল-
১৯৮৫ সালে জমনালাল বাজাজ পুরস্কার।
১৯৮৬ সালে জমনালাল বাজাজ পুরস্কার। (সৃজনশীল কাজের জন্য)
১৯৮৭ সালে জমনালাল বাজাজ পুরস্কার। (চিপকো আন্দোলন)
১৯৮৭ সালে শের-ই-কাশ্মীর পুরস্কার।
১৯৮৭ সালে সরস্বতী সম্মান।
১৯৮৯ সালে আইআইটি রুড়কি দ্বারা “ডঃ অফ সোশ্যাল সায়েন্স” উপাধি দেওয়া হয়।
১৯৯৮ সালে উদ্যোগ সম্মান।
১৯৯৯ সালে গান্ধী সেবা সম্মান।
২০০০ সালে সাংসদ ফোরাম কর্তৃক সত্যপাল মিত্তল পুরস্কার।
২০০১ সালে পদ্মবিভূষণ পুরস্কার