করোনা (Corona) প্রতিরোধে দেশের প্রতিটি জনগণের হৃদয়ের
ঔদার্যকে কুর্নিশ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)। মানুষ যেভাবে করোনার বিরুদ্ধে
লড়াইয়ে অবদান রেখেছে তাতে আপ্লুত দেশের প্রধান সেবক। প্রতিরোধকে জনগণ নেতৃত্ব দিচ্ছে বলে মন কি বাতে জানিয়েছেন তিনি। চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, সাফাই কর্মী, পুলিশ, ডাক বিভাগের কর্মী অবদানের কথা স্মরণ করেছেন।
রবিবাসরীয় সকালে মন কি বাত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী
জানিয়েছেন, করোনার বিরুদ্ধে যাবতীয় উদ্যোগে মানুষ স্বতঃস্ফূর্ততার সঙ্গে অংশগ্রহণ
করেছেন। প্রত্যেকে নিজেদের কর্তব্য দায়িত্বের সঙ্গে পালন করেছেন। খাদ্যের যাতে অভাব না হয় সেই জন্য এই পরিস্থিতিতেও কৃষকেরা নিরলসভাবে ক্ষেতে পরিশ্রম করে গিয়েছেন। বাড়িওলারা ভাড়াটিয়ার ভাড়া মকুব করে দিয়েছে। যেসব স্কুলগুলিতে অস্থায়ীভাবে পরিযায়ী শ্রমিক
রয়েছে সেখানে তারা নিজেদের মতন করে স্কুলগুলিকে মেরামতি করেছে। প্রত্যেকে নিজেদের
কর্তব্য ও নিষ্ঠার সঙ্গে সম্পাদন করেছে। প্রদীপ জ্বালিয়ে, হাত তালি দিয়ে দেশকে একসূত্রে বাঁধতে সাহায্য করেছে। যেসব মানুষের খাবার পাচ্ছে না তাদেরকে খাবার পৌঁছে দিচ্ছে সহ
নাগরিকেরা। মানুষের হৃদয়ের এই মজবুত প্রেরণা করোনার বিরুদ্ধে প্রতিরোধে সহায়তা করেছে।
এর জন্য দেশের ১৩০ কোটি ভারতবাসীকে প্রণাম জানাই।
ত্রাণ সরবরাহ এবং চিকিৎসা ক্ষেত্রে সমন্বয় বজায়
রাখতে ডিজিটাল মাধ্যমগুলির ভূমিকা কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, কোভিডওয়ারিয়র.গভ.
ইএন নামে একটি ওয়েবসাইট রয়েছে।যেখানে ইতিমধ্যে সোয়া কোটি মানুষ যুক্ত হয়েছে।চিকিৎসক,
স্বাস্থ্যকর্মী, স্থানীয় প্রশাসন এবং স্বেচ্ছাসেবকদের মধ্যে সমন্বয় গড়ে তুলতে এই
ওয়েবসাইটের ভূমিকা অপরিসীম। সংকটকালে যাবতীয় পরিকল্পনা করতে সাহায্য করবে এই ওয়েবসাইট।
প্রধানমন্ত্রী মনে করেন প্রতিটি লড়াই ও সংকট মানুষকে
নতুন করে অনেক কিছু শিখিয়ে দিয়ে যায়। বর্তমানে করোনা সংকট দেশের উদ্ভাবনীদের নতুন
জিনিস তৈরি করতে অনুপ্রেরণা যোগাচ্ছে। চিকিৎসা ক্ষেত্র, বাণিজ্যিক ক্ষেত্র সহ অন্যান্য
ক্ষেত্রে এক আমূল পরিবর্তন এসেছে এবং ক্রমশই উন্নত থেকে উন্নততর হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে
প্রতিটি সরকারি সংস্থা সাধ্যমত নিজেদের কাজ করে চলেছে। কেন্দ্র সরকার এবং রাজ্য সরকার দ্রুততার সঙ্গে কাজ করে চলেছে।
পুলিশের মানবিক
ভূমিকার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, পুলিশ বলতেই মানুষের মনে আগে একটা
নেতিবাচক চিন্তা ধারা তৈরি হতো। কিন্তু এখন অবস্থার পরিবর্তন ঘটেছে। পুলিশ মানবিকতার
সঙ্গে সাধারণ মানুষের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। মানুষের মধ্যে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা নিয়েছে পুলিশ। দেশের ডাক বিভাগ এবং রেলের কর্মীরাও এই পরিস্থিতিতেও
নিজেদের দায়িত্ব সম্পাদন করে যাচ্ছেন। দুটি দপ্তরের তৎপরতায় ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রী
দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছে যাচ্ছে। রেল দপ্তর একশোরও বেশি পণ্যবাহী ট্রেন চালিয়ে
দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রী পৌঁছে দিয়েছে। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রী
গরিব কল্যাণ যোজনার মাধ্যমে মানুষ বিনামূল্যের রেশন পাচ্ছে। অন্যান্য প্রকল্পের মাধ্যমে
গ্যাস সিলিন্ডার সহ অন্যান্য জিনিস পাচ্ছে। আকাশপথে ত্রাণও পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। লাইফ লাইন উড়ান অভিযানে
বিমান উড়িয়ে প্রায় তিন লাখ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেওয়া হয়েছে। ৫০০ টন ওষুধ সরবরাহ
করা হয়েছে এর মাধ্যমে। মানুষ রিক্সা চালক, অটোচালক সাফাই কর্মী সবজিওয়ালা, পরিচারিকাদের
গুরুত্ব বুঝতে পেরেছে। তাই বিপদের এই সময় তারা এদের পাশে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে।
বিনামূল্যে চাল, ডাল এদেরকে দেওয়া হচ্ছে। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের ওপর যাতে কোনোভাবেই হিংসাত্মক আক্রমণ না নেমে আসে তার জন্য অধ্যাদেশ পাস করেছে সরকার। দেশবাসী তা সাদরে
মেনেও নিয়েছে। মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিদেশি রাষ্ট্রকে ওষুধ দিয়ে সাহায্য করা হয়েছে।সেই
সকল রাষ্ট্রের রাষ্ট্রনায়কেরা এরজন্য ভারতবাসীকে ধন্যবাদও জানিয়েছেন।