বিসিসিআইয়ের বার্ষিক সাধারণ সভার আগে স্বার্থের সংঘাতের অভিযোগ উঠেছিল বোর্ড প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। মনে করা হয়েছিল, সভায় এটাই হতে চলেছে প্রধান আলোচনার বিষয়। কিন্তু কোথায় কী? বোর্ডের সভায় ফের একবার আইসিসিতে ভারতীয় বোর্ডের ডিরেক্টর হিসেবে সৌরভের নামই মনোনীত হল। তিনি না থাকলে সেই দায়িত্ব পালন করলেন বোর্ড সচিব জয় শাহ। অন্যদিকে আইসিসির চিফ এগজিকিউটিভ কমিটিতেও বোর্ডের প্রতিনিধিত্ব করবেন জয় শাহ। এদিনের বৈঠকে রাজীব শুক্লকে মহিম বর্মার জায়গায় বোর্ডের সহ-সভাপতির পদে বসানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার আহমেদাবাদে এই বার্ষিক সভায় বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যেমন আগামী বছর ভারতে অনুষ্ঠিত হতে চলা টি ২০ বিশ্বকাপের কেন্দ্র হিসেবে আটটি মাঠকে বেছে নেওয়া হয়েছে। এই মাঠগুলি হল কলকাতা, মুম্বই, চেন্নাই, দিল্লি, বেঙ্গালুরু, মোহালি, আহমদাবাদ ও ধর্মশালা।
তবে আগামী বছর টি ২০ বিশ্বকাপের কেন্দ্র ঠিক হয়ে গেলেও কর ছাড়ের বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি এদিন। এই করের পরিমাণ ১০ কোটি ডলারের বেশি। এই কর ছাড় না দিলে বিশ্বকাপ সংযুক্ত আরব আমিরশাহীতেও চলে যেতে পারে। এই কর ছাড়ের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আবেদন করতে হবে বোর্ডকে। তবে তারা যদি নিজেরাই এই করের টাকা দিয়ে দেয় তাহলে কোনও সমস্যা অবশ্য হবে না।
এবার থেকে শুধুমাত্র বেঙ্গালুরুতে ন্যাশনাল ক্রিকেট অ্যাকাডেমি বা এনসিএ থাকবে না বলেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বোর্ড। বেঙ্গালুরুর জায়গায় দেশের পাঁচটি অঞ্চলে থাকবে এই এনসিএ। কারণ ঘরোয়া ক্রিকেটাররা গোটা দেশে ছড়িয়ে রয়েছেন। এই অবস্থায় যাঁরা চোট পাচ্ছেন সবার তথ্য ম্যানেজমেন্টের কাছে থাকছে না। তাই বোর্ড সিদ্ধান্ত নিয়েছে পাঁচটি জায়গায় এই অ্যাকাডেমি তৈরি করা হবে। তাহলে বিভিন্ন প্রান্তের ক্রিকেটাররা সহজেই এনসিএ-র সাহায্য পাবেন। তাতে অনেক সহজে চোট সারানো সম্ভব হবে বলেই ধারণা বিসিসিআইয়ের। তবে কোথায় কোথায় অ্যাকাডেমি হবে সে কথা অবশ্য এখনও জানানো হয়নি।
এদিন বোর্ডের সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ২০২২ সাল থেকে ১০ দলের আইপিএল আয়োজন করা হবে। এছাড়া ২০২৮ সালের লস এঞ্জেলস অলিম্পিক্সে ক্রিকেটকে অন্তর্ভুক্ত করার পক্ষে সায় দিয়েছে বোর্ড। ইতিমধ্যেই ইন্টারন্যাশনাল অলিম্পিক্স কমিটির পক্ষ থেকে মৌখিক অনুমতি পাওয়ার পরে ২০২৮ সালের অলিম্পিক্সে ক্রিকেটকে টি ২০ ফরম্যাটে অন্তর্ভুক্ত করার ব্যাপারে আবেদন করবে আইসিসি। সেই আবেদনের পক্ষেই নিজেদের মত জানিয়েছে বিসিসিআই।
কোভিড পরিস্থিতিতে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ ঘরোয়া ক্রিকেট। তার ফলে যাতে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটাররা (পুরুষ-মহিলা নির্বিশেষে) সমস্যায় না পড়েন, তার জন্য তাঁদের আর্থিক সাহায্য করবে বোর্ড। আগামী জানুয়ারিতে সৈয়দ মুস্তাক আলি টি ২০ টুর্নামেন্টের মাধ্যমে ফের ঘরোয়া ক্রিকেট শুরু করতে চাইছে বিসিসিআই।