বানিজ্যে চলিল শেষে দক্ষিন পাটন।।
শিব শিব বলি যাত্রা করে সদাগর ।
মনের কৌতুক চাপে ডিঙ্গার উপর।।
বাহ্ বাহ্ বলি ডাক দিল কর্ণধারে ।
সাবধান হয়ে যাও জলের উপরে । ।
চাঁদের আদেশ পা্ইয়া কান্ডারী চলিল ।
সাত ডিংগা লয়ে কালিদাহে উত্তরিল ।।
চাঁদ বেনের বিসস্বাদ মনসার সনে ।
কালীদহে সাধু দেবী জানিল ধেয়ানে ।।
নেতা লইয়া যুক্তি করে জয় বিষহরী ।।
মম সনে বাদ করে চাঁদ অধিকারী।।
নিরন্তর বলে মোরে কানী চেঙ্মুড়ী
বিপাকে উহারে আজি ভরা ডুবি করি ।।
তবে যদি মোর পূজা করে সদাগর।
অবিলম্বে ডাকিল ষতেক জলধর ।।
সপ্তডিঙা_মধুকর নিয়ে বাণিজ্যে যেতেন ধনপতি, চাঁদসদাগর । যেতেন আরো কত বিখ্যাত অখ্যাতও বণিক মহাজন। ভাগীরথী গঙ্গায় পালতোলা জাহাজ ভাসে আসতেন তাঁরা সমুদ্রের মোহনায় । ভেসে চলতেন সিংহল, সুবর্ণদ্বীপ, চম্পা ,কম্বোজ , বালি , যবদ্বীপ । আরো কত দেশ বন্দরে। কেবলই পণ্য নয়, বিনিময় হত #সংস্কৃতির পসারও । পূর্ব ভারতের বৃহৎ বন্দর ছিল #রূপনারায়নের তাম্রলিপ্ত । আর ছিল তৈলকম্প বন্দর। আদি গঙ্গার মোহনায় ছিল প্রাচীন গঙ্গারিডি রাজ্যের রাজধানী । সরস্বতীর তীরে ছিল সপ্তগ্রাম । বহু প্রাচীনকালে গঙ্গা-ভাগীরথী আরও পশ্চিম দিকে রাজমহল, সাঁওতালভূমি, ছোটনাগপুর, মানভূম, ধলভূমের তলদেশ দিয়ে সোজা দক্ষিণবাহিনী হয়ে সমুদ্রে পড়ত এবং এই প্রবাহই ছিল অজয়, দামোদর ও রূপনারায়ণের সঙ্গম।প্রাচীন ভাগীরথীর তীরে সমুদ্রমোহনার কাছে ছত্রভোগ বন্দর ।এই সব বন্দর দিয়ে শুধু প্রাচ্যদেশেই বাণিজ্য হতো তা নয় , বাণিজ্য হত #রোমক , #গ্রিক ,#ফিনিসীয় বনিকগনের সঙ্গেও। বাণিজ্যপোত এসে ভিড়ত এসকল বন্দরে। গঙ্গা ভাগীরথীর তীরে তীরে গড়ে উঠেছিল তৎকালীন সভ্যতার পীঠস্থান গুলো…..
গঙ্গার মাহাত্ম্যের তুলনীয় আর কিছুই নয়। শরশয্যায় পিতৃব্য ভীষ্ম যুধিষ্ঠিরকে বলছেন, “সেই দেশ জনপদ ও আশ্রমই শ্রেষ্ঠ যার মধ্য দিয়ে সরিদ্বরা গঙ্গা প্রবাহিত হন। তপস্যা, ব্রহ্মচর্য ও দানের যে ফল, গঙ্গার আরাধনাতেও সেই ফল। যারা প্রথম বয়েসে পাপকর্ম করে পরে গঙ্গার সেবার করে, তারাও উত্তম গতি পায়। হংসাদি বহুবিধ বিহঙ্গে সমাকীর্ণ গোষ্ঠ সমাকীর্ণ গঙ্গাকে দেখলে লোকে স্বর্গ বিস্মৃত হয়। গঙ্গাদর্শন গঙ্গাজলস্পর্শ ও গঙ্গা অবগাহন করলে উর্ধ্বতন ও অধস্তন সাত পুরুষের সদগতি হয়”….
প্রাচীন গৌড়ে নিকটবর্তী চম্পানি বা চম্পক নগর। এখানে বাসছিল #গন্ধবণিক সম্প্রদায়ভুক্ত কোটিশ্বরের পুত্র বিখ্যাত চাঁদ সদাগর। গন্ধবনিকেরা ছিলেন শৈব। এঁরা কৌশাম্বি থেকে বঙ্গে আসেন সেন রাজত্বের পূর্বে । জঙ্গল চাঁদ বিষহরির পূজার বিরোধী ছিলেন। কিন্তু পরিবারের লোকদের পীড়াপীড়িতে অবশেষে সেই পূজা করেন। মনসামঙ্গল কাব্যের অন্তর্ভুক্ত সেই চাঁদ সওদাগর ও বেহুলা লখিন্দরের কাহিনী যুগ থেকে যুগান্তরে বাংলা সাহিত্যের অন্যতম সম্পদ হয়ে রয়েছে….
আর তার সঙ্গে অমর হয়ে আছে কালীঘাট ,গড়িয়া ,বৈষ্ণবঘাটা, রাজপুর সোনারপুর, হরিনাভি, কোদালিয়া, চাংড়িপোতা, মালঞ্চ, মাহিনগর, শাসন, বারুইপুর, ময়দা, দক্ষিণ বারাসাত ইত্যাদি ২৪ পরগনার বিভিন্ন অঞ্চল গুলি। এসকল কথা আমি পূর্বেই আলোচনা করেছি।
ভাগীরথী খাতে প্রবাহিত গঙ্গা নদীর নিম্ন প্রবাহটি একবিংশ শতাব্দীর শুরুতে যেমন ছিল, তেমনটি আগে ছিল না। ব্যান্ডেলের কাছে ত্রিবেণীতে এটি তিনটি শাখায় ভাগ হয়ে যেত। দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে সপ্তগ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে যেত সরস্বতী নদী। দক্ষিণ-পূর্ব দিকে বয়ে যেত যমুনা নদী।মাঝখান দিয়ে বইত হুগলি নদী।
ষোড়শ শতাব্দীর আগে গঙ্গার মূল স্রোতটি সরস্বতী নদীর খাতে বইত। ষোড়শ শতাব্দী থেকে এটি হুগলির খাতে বইতে শুরু করে। সরস্বতী নদীর উচ্চ প্রবাহটি এখন শুকিয়ে গেছে। হুগলি আদিগঙ্গাকে ত্যাগ করে এখন সরস্বতীর নিম্ন প্রবাহটি ধরে সমুদ্রে মিশছে।
বিপ্রদাস পিপলাই তাঁর মনসাবিজয় (মনসামঙ্গল) কাব্যে চাঁদ সদাগরের যাত্রাপথের বর্ণনায় চিৎপুর, বেতড়, কালীঘাট, চূড়াঘাট, বারুইপুর, ছত্রভোগ, বদ্রিকুণ্ড, হাথিয়াগড়, চৌমুখি, সাতামুখি ও সাগরসঙ্গমের (সাগর দ্বীপ) নাম উল্লেখ করেছেন। বিপ্রদাস পিপলাইয়ের বর্ণনার সঙ্গে ভ্যান ডেন ব্রুকের ১৬৬০ সালে আঁকা আদিগঙ্গার মানচিত্রটি হুবহু মিলে যায়।
কোনো কোনো মতে, অতীতে আদিগঙ্গার ধারাটি শুকিয়ে যাওয়ায় কৃত্রিম খালের সাহায্যে সরস্বতীর নিম্ন প্রবাহের সঙ্গে সেটিকে যুক্ত করে রাখা হয়েছিল, যাতে সমুদ্রগামী আদিগঙ্গা যেখানে গঙ্গা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছে সেখানে গঙ্গা ও সরস্বতীর মোহনার কাছে একটি জোয়ারের জলে পুষ্ট খাঁড়ি ছিল। জনশ্রুতি অণুযায়ী, ওলন্দাজ বণিকরা জাহাজ চলাচলের সুবিধার জন্য এই খাঁড়িটি বিভক্ত করেছিল।
যাক এত কথা বলছি যখন আরো কিছু তথ্য দিয়ে রাখি…হাজার হোক আদিগঙ্গার তীরবর্তী প্রাচীন ভূমি নিয়ে যখন বলছি…
অষ্টাদশ শতাব্দীতে আদিগঙ্গা আদি কলকাতার অন্যতম বসতি গোবিন্দপুর গ্রামের দক্ষিণ সীমা নির্দেশ করত। এই জন্য সেই সময় এই নদীর নামকরণ হয় #গোবিন্দপুরখাঁড়ি.. খ্রিস্টীয় পঞ্চদশ থেকে সপ্তদশ শতাব্দী পর্যন্ত এই নদীটিই ছিল হুগলি নদীর প্রধান ধারা। পরে মহাকালের নিয়মে এই ধারাটি ক্ষীণপ্রভা হয়। ভাগীরথী খাতে প্রবাহিত গঙ্গা নদীর নিম্ন প্রবাহটি একবিংশ শতাব্দীর শুরুতে যেমন ছিল, তেমনটি আগে ছিল না। এর পর ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির রাজত্বের সময় ১৭১৭ খ্রিষ্টাব্দে এডওয়ার্ড সারম্যান খননকাজ চালিয়ে এটির সংস্কার করেন । ফলে সেই ক্ষীণ প্রবাহের নাম হয় #সারম্যানেরনালা। কিন্তু ১৭৫০ খ্রিস্টাব্দ সময়কালে আদিগঙ্গা মজে যায় এবং গঙ্গা তার প্রাচীনতম ভাগীরথী (সরস্বতী) প্রবাহপথেই ফিরে যায়।
পরবর্তী কালে কর্নেল উইলিয়াম টালি এই মজা নদীটিকে (আদিগঙ্গা) খননকার্যের মাধ্যমে গভীর করে সার্কুলার খালের সঙ্গে যুক্ত করেন। তারপর এর নাম হয় #টালির নালা। ১৭৭৫ সালে কর্নেল টালি আদিগঙ্গার সঙ্গে বিদ্যাধরী নদীর যোগ স্থাপন করেন। ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে বিদ্যাধরী নদীর দীর্ঘ ৩৫ মাইল অংশও মজে যায়।
কর্নেল টালির সংস্কারের পর আদিগঙ্গা আবার নৌপরিবহণ-যোগ্য হয়ে উঠলেও পরবর্তীকালে মানুষের মধ্যে জলপথ ব্যবহারের প্রবণতা কমে যায়। দ্রুত নগরায়ণের ফলে আদিগঙ্গার গভীরতা কমে যায়। সম্ভবত অষ্টম শতাব্দীর পর থেকেই আদিগঙ্গা মজে যেতে শুরু করে। তবে তখনও বেতড়ের দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে আদিগঙ্গার নদীখাতে কিছু জল প্রবাহিত হত।
১১৭৫ খ্রিস্টাব্দে লক্ষ্মণ সেনের তাম্রশাসনে প্রদত্ত গ্রামের পূর্ব দিক দিয়ে জাহ্নবী প্রবাহিত হত – এ প্রমাণ রয়েছে। যাইহোক, ১৭৫০ নাগাদ আদিগঙ্গা মজে যায় এবং অষ্টাদশ শতাব্দীর পরেই এই আদিগঙ্গার প্রবাহপথ সম্পূর্ণরূপে শুকিয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত এটি দক্ষিণ-পশ্চিম কলকাতার একটি #নিকাশি নালায় পরিণত হয়।
চেয়ে দেখি ছাতার মতো ব্ড় পাতাটির নিচে বসে আছে
ভোরের দয়েলপাখি – চারিদিকে চেয়ে দেখি পল্লবের স্তূপ
জাম-বট-কাঁঠালের-হিজলের-অশথের করে আছে চুপ;
ফণীমনসার ঝোপে শটিবনে তাহাদের ছায়া পড়িয়াছে;
মধুকর ডিঙা থেকে না জানি সে কবে চাঁদ চম্পার কাছে
এমনই হিজল-বট-তমালের নীল ছায়া বাংলার অপরূপ রূপ
দেখেছিল; বেহুলাও একদিন গাঙুড়ের জলে ভেলা নিয়ে –
শ্রীচৈতন্যদেবের স্মৃতিবিজড়িত ও পদধূলি ধন্য মঙ্গলকাব্য উল্লিখিত গুরুত্বপূর্ণ স্থান বৈষ্ণবঘাটা বিশ শতকের তিরিশের দশকের পূর্ব পর্যন্ত বৈষ্ণবঘাটা নাকতলা অঞ্চলটি ইউনিয়ন বোর্ডের অধীন ছিল। ১৯৫৩ খ্রিস্টাব্দে এটি টালিগঞ্জ পুরসভার অন্তর্গত ছিল। ১৯০১ খ্রিস্টাব্দে টালিগঞ্জ পুরসভার জন্ম হয়। তারও পূর্বে টালিগঞ্জ অঞ্চলটি ছিল সাউথ সুবাবার্ন বা বেহালা মিউনিসিপ্যালিটির অংশ। ১৯৫৩ খ্রিস্টাব্দে টালিগঞ্জ মিউনিসিপ্যালিটি কলকাতা পুরসভার অন্তর্গত হয়। বৈষ্ণবঘাটা মৌজার অপর অংশে অর্থাৎ রাজা সুবোধচন্দ্র মল্লিক রোডের পূর্বদিকের অংশটিও পূর্বে ইউনিয়ন বোর্ডের এবং তারপর পঞ্চায়েতের অধীন ছিল।
১৯৮০ খ্রিস্টাব্দে এই অংশ যাদবপুর পুরসভার মধ্যে প্রবেশ করে। অবশেষে ১৯৮৪ খ্রিস্টাব্দে যাদবপুর পুরসভাটি কলকাতা পুরসভার #যুক্তাঞ্চল বা Add Area হিসাবে পরিগণিত হয়।
নিম্নবঙ্গ তথা সমগ্র বঙ্গই লৌকিক দেবদেবী প্রভাবিত ছিল। আদিগঙ্গা তীরবর্তী প্রাচীন সুন্দরবনের অন্তর্গত প্রাচীন বৈষ্ণবাঘাটা অঞ্চলও লৌকিক দেবদেবী প্রভাবিত অবশ্যই ছিল। গ্রাম বা গেরাম দেবতা প্রকৃত ভাবেই অত্যন্ত জাগ্রত হন আজও লৌকিক বিশ্বাসে।
ভারতের প্রায় প্রতি গ্রামে একজন করে গেরাম দেবতা বা বিশেষ #গ্রামদেবতাকে পাওয়া যায়। তবুও গ্রামের #সার্বিককল্যাণ ও স্থিতি বজায় রাখার জন্য একজন দেবতা বা দেবীকে গ্রামের প্রান্তে প্রতিষ্ঠিত করার মধ্যে সমাজ ব্যবস্থার আদিমতম রূপকল্প টি খুঁজে পাওয়া যায়। প্রবর্তনার কাল থেকে দেব স্থানগুলি একই জায়গায় অবস্থান করছে ।
পুরোহিতরাও এখানে বংশানুক্রমিকভাবে পুজোর কাজ করে। অঞ্চলে যে সমস্ত প্রাচীন সনাতন ধর্মীরা বসবাস করে থাকেন তাদের প্রত্যেকের গ্রামের সন্নিহিত কোন ফাঁকা জায়গায় গুটিকয়েক গাছের নিচে সিঁদুর চর্চিত কিছু পোড়া মাটির হাতি ঘোড়ার মূর্তি দেখতে পাওয়া যায়। জিজ্ঞাসা করলে জানা যাবে যে, ওগুলো গেরাম দেবতার থান।
গ্রাম্য দেবতাকে গেরাম ঠাকুর, গরাম দেবতা, গরাম ইত্যাদি বিভিন্ন নামে সম্বোধিত করা হয় । আখ্যান যাত্রা দিন, হাঁস-মুরগি পায়রা ইত্যাদি বলি দিয়ে , যদি বৈষ্ণব মতে হয় তাহলে পায়েস ইত্যাদি ভোগ প্রদান করে সেখানে পুজার বিধি প্রচলিত রয়েছে।
ওই দিনটি ছাড়া গেরাম ঠাকুরের পুজোর মাসিক বা কোন ঋতুভিত্তিক কোন দিন থাকেনা। তবে গ্রামে চাষবাস হচ্ছে না, বৃষ্টি হচ্ছে না, অপদেবতার কোপ পড়েছে, প্রবল বর্ষণের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, দূর্বিক্ষ মহামারি প্রকট পড়েছে এমন অবস্থায় অকালবোধনের ব্যবস্থা দেখতে পাওয়া যায় ।
বৈষ্ণবঘাটা #ওলাইচন্ডীর বা ওলাদেবীর থান তারই এক দৃষ্টান্ত। পরবর্তী কালে এখানের নাম হয় দরগাতলা বা ওলাবিবিরথান। কেন হয় সে কথা বলার অবকাশ রাখে না… ঊনবিংশ শতকের শেষভাগে বৈষ্ণবঘাটার নীলমণি মুখোপাধ্যায় এই মন্দির বা থানের প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতি বছর অগ্রহায়ণ মাসের শুক্লপক্ষের শুক্রবার এখানে পূজা হয়।ভক্তগণ মানসিক করে পোড়ামাটির ঘোড়া উৎসর্গ করেন।
বৈষ্ণবঘাটার আজাদ হিন্দ পাঠাগারের পাশে এ.বি. গার্লস স্কুল। সেখানে পূর্বে শ্বাপদ সংকুল অরন্য ছিল। সুদীর্ঘ বিটপীর দল স্থানটিকে রহস্য ছায়ায় ঘিরে থাকত। সেই অরণ্যের মাঝে বৃহৎ বৃক্ষের নিচে ছিল সুন্দরবনের লৌকিক দেবী #বনদেবীর বা বনবিবির থান। আর সুন্দরবনের গড়িয়া গাছের আধিক্য এখানে এতই ছিল যে সম্পুর্ন এলাকার নাম হয়েছিল গড়িয়া।
গড়িয়ার যে দূরপাল্লার সরকারি বাস টার্মিনাসের পূর্বদিকে ছিল #বাওয়ালিমন্ডলদেরকাছাড়ি_বাড়ি। সেখানে চৈত্র সংক্রান্তিতে চড়কের মেলা বসত। গাজনের গান হত। আর হত সং এর নাচ।সঙেরা ছড়া কেটে গান করত। গাজনের সন্ন্যাসীরা এখান থেকে দল বেঁধে #কালীঘাটে পূজা দিতে যেতেন। কারন, যে সময়ের কথা বলছি সে সময় #তারকেশ্বর রেল লাইন তৈরি হয়নি। বহু দূর দুরান্ত থেকে মানুষ সেই মেলা দেখতে আসতেন।
বৈষ্ণবঘাটা রথতলার কিছু পূর্বদিকে আদি গঙ্গার তীরে একটি সুপ্রাচীন ও বৃহৎ #শ্মশান ছিল। গড়িয়া মহাশ্মশানের ন্যায় এটিও প্রাচীন ছিল। বহু দূরবর্তী স্থান থেকে গঙ্গাতীরে দাহ করার জন্য নৌকা সংযোগে শবদেহ এখানে আনা হত। একটা সময় নাকি এখানে দাহ করার জন্য লাইন পড়ত। এ শ্মশানের চিতার আগুন কখনো নিভে যেত না। কিন্তু পরিবর্তন… মানুষ ইতিহাসকে কম টিকিয়ে রাখতে চায় এই দেশে। নিজের টুকু হলেই হল…ফলত লোকালয় বৃদ্ধি পাওয়ায় শ্মশানটি #বন্ধ হয়ে যায়।
এই শ্মশানটিকে কেন্দ্র করে এর উত্তরদিকে একটি কালীমন্দির নির্মিত হয় অষ্টাদশ শতাব্দীর মধ্যভাগে।রথতলার পূর্বদিকে এখন যেখানে সরকারি আবাসন সেখানে পূর্বে সেই কালীমন্দিরটির ধ্বংসাবশেষ বহু বহুদিন জঙ্গলাকীর্ন হয়ে পরিত্যক্ত ছিল।
বৈষ্ণবঘাটা গ্রামের উত্তর দিকে বাঙালি হিন্দু উদ্বাস্তু উপনিবেশকে কেন্দ্র করে ব্যাপক জনবসতি গড়ে উঠতে শুরু করেছিল পঞ্চাশের দশক থেকে…তার আগে ওখানে ফসল উৎপাদন হত আর ছিল ফাঁকা প্রান্তর। সেই মাঠের নাম ছিল #উত্তরের_মাঠ। ইংরেজ আমলে টালিগঞ্জ অঞ্চলে অনেক সাহেব বাস করতেন। তাঁরা ওই মাঠে ঘোড়া ছোটাতেন। বর্তমানে এই অঞ্চলের নাম রামগড়- গাঙ্গুলিবাগান।
হ্যাঁ তো যা বলছিলাম, একদিন ভোরে দুলাল রাজপুরের আদি গঙ্গায় স্নান করে উঠতে গিয়ে দেখলেন একটা কালোকলো পাথর পড়ে। কেমন কালো? ওই যে মা স্বপ্নে যেমনটি কালো মেয়েটি হয়ে এসেছিলেন তেমন কালো পাথর। কৃষ্ণবর্ণ পাথরটির কি অসম্ভব আকর্ষণ। দুলাল এক দৃষ্টে দেখতে লাগলেন পাথরটিকে, কেমন যেন চক্ষে ঘোর ঘনিয়ে এল। কিছুক্ষণ অতিক্রম হলে তিনি গঙ্গার ঘাট থেকে প্রস্তরটি বহন করে নিয়ে মা বিপত্তারিণীর ঘরে রাখলেন। শক্তির সঙ্গে ভৈরবের সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য। যিনি ব্রহ্ম, তিনি আদ্যাশক্তি। যখন নিষ্ক্রিয়, তখন তাকে ব্রহ্ম বলি। পুরুষ বলি। যখন সৃষ্টি, স্থিতি, প্রলয় এসব করেন তাকে শক্তি বলি। প্রকৃতি বলি। পুরুষ আর প্রকৃতি। যিনি পুরুষ তিনি প্রকৃতি। আনন্দময় আর আনন্দময়ী। পিতা আর জননী। যিনি জগৎরূপে আছেন- সর্বব্যাপী হয়ে তিনি মা। মহাকাল রূপে সেই প্রস্তর আজও পূজিত হয় মা বিপত্তারিণীর সঙ্গে।
দুলালের বড় ঈশ্বর ভক্তি। মা অন্ত প্রাণ দুলাল। রোজ পুজোর জন্য একটা অন্তত জবা তাঁর লাগে। একটি জবা ফুলেই তাঁর পুজো সারা হয়ে যায়। মা তাঁর নিজের। মা তাঁর জগন্মাতা। মা যেন তাঁর গৃহকর্ত্রী। তাই আড়ম্বর নয় ভক্তি দিয়ে পুজো করেন দুলাল। এসব দেখে একদিন তাঁর এক বন্ধু তাঁকে একটি জবা গাছের ডাল উপহার দিলেন। বাড়ির পিছনের জমিতে পুঁতে দিল দুলাল। বর্ষায় গাছ যেন তাড়াতাড়ি জমি ধরে নিল। রক্তবর্ণ পঞ্চমুখী জবা ফুটে উঠতে লাগল প্রত্যহ, একটি করে। দুলালও অমন সুন্দর জবা মায়ের জন্য পেয়ে ভারী খুশি। গঙ্গা স্নান সেরে এসে দুলাল সেই ফুলটি তুলে মায়ের পায়ে দিয়ে অঞ্জলি দিতেন।
দুলালের গৃহের পাশেই থাকতেন তাঁর এক জ্ঞাতি কাকা। নিতাইচন্দ্রের বংশের আধ্যাত্মিক , মান সম্মান, আর্থিক উন্নতি দেখে তাঁর ভারী হিংসে হত। ভাবত পারলে নিতাইচন্দ্রের ভিটায় গিয়ে সব কিছু গুঁড়িয়ে দিয়ে আসে। দেখি কেমন ধারা মা কালী রক্ষা করেন ? একদিন রাগে জবা গাছের ডাল ধরে দিল এক হ্যাঁচকা টান। গাছ গোড়া থেকে উপড়ে উঠে গেল। পরদিন দুলাল মৃত গাছ দেখে কেঁদে ফেলল। একটা করে জবা ফুলই তো …. মায়ের জন্য বেশি চাহিদা তো তাঁর নেই। সেইদিন রাত্রি হতে দুলালের জ্ঞাতি কাকার কানে অসহ্য যন্ত্রনা শুরু হল। সে যেন কানের পাশে কেউ বোমা ফাটিয়ে গেছে। রাজপুরের সে সময়ের সব থেকে বড় কবিরাজ এসে দেখে ওষুধ দিলেন। কিন্তু কিছু মাত্র উপশম হল না। যন্ত্রনায় কাতর হয়ে দুহাত জোড় করে মা কালীর কাছে ক্ষমা চাইতে লাগলেন তিনি। এ যন্ত্রনা ভোগের থেকে মৃত্যু অনেক ভালো। রাত গভীর হল, ব্যাথায় মূর্ছিত প্রায় সেই কাকা কোনো এক অলৌকিক কন্ঠস্বর পেলেন, ” গাছ নষ্ট করলি, এবার শাস্তি ভোগ কর। গাছ ও দুলালের যে কষ্ট হয়েছে, তোর তার সহস্রগুণ কষ্ট হবে। নতুন করে গাছ রোপণ করে দে, নচেৎ কান পচে মরবি।”
মূর্ছা ভেঙ্গে গেল। প্রথমে ভাবলেন কানের যন্ত্রণায় হয়তো হ্যালুসিনেশন হয়েছে। তারপর দেখলেন কান থেকে পুঁজ রক্ত আসছে। ভোর হতেই ভয়ে ছুটে গেলেন দুলালের কাছে। দুলাল তখন সবে গঙ্গা স্নান করে ফিরেছেন। মায়ের ঘরে ধ্যান করছেন। সেখানেই গিয়ে দুলালের পা ধরে ক্ষমা চাইলেন তাঁর কাকা। দুলাল ধ্যান ভেঙে হতভম্ব হয়ে গেলেন। বর্ষীয়ান মানুষটিকে অমন করে কষ্ট পেতে দেখে বিহ্বল হয়ে গেলেন। মায়ের প্রাসদে ব্যথার কিছু উপশম হল। কাকা বাজারে গিয়ে কিনে আনলেন নানা ধরনের জবা গাছের চারা। নিজে হাতে সেসব রোপণ করলেন। প্রাণ পাত করে গাছের যত্ন নিতেন। গাছগুলোতে যখন ফুল এল, তখন দুলালের সঙ্গে তাঁর কাকাও প্রত্যহ সেই ফুল তুলে মাকে অঞ্জলি দিতেন।
রাজপুর , সোনারপুর, গড়িয়া, বৈষ্ণবঘাটা ইত্যাদি।ঘুরলে নন্দদুলাল ও তাঁর জগন্মাতা বিপদত্তারিণীকে কত জনশ্রুতি আজও পাবেন হিসাব নেই। ১৩৩৪ বঙ্গাব্দ , দুলালের বয়স তখন মাত্র এগারো।তখন দুলালের মাতৃভক্তির কথা লোকমুখে ছড়িয়ে পড়েছে। জগন্মাতা তাঁর অতি আপনজন। সেকথা লোকে জেনে তাঁকে সিদ্ধপুরুষ গণ্য করতে শুরু করেছে। আষাঢ় মাস, সামনেই রথ। তারপর বিপদত্তারিণী পুজোর তিথি আসছে। এক তুমুল বর্ষার দিনে গাঁয়ের একদল মহিলা জল কাদা ভেঙে এসে দুলালের গর্ভধারিনী মাকে ধরলেন ,এবারে তাঁরা দুলালের মন্দিরেই বিপদত্তারিণীর ব্রত উদযাপন করবেন। দুলাল ছোট্ট মানুষ, তাঁর দীক্ষা নেই, গুরুও নেই। সে মাকে প্রিয় করে আপন বশে পুজো করে। সেখানে কঠিন মন্ত্র তন্ত্র নেই, আছে মায়ের জন্য একবুক ভালোবাসা , ভক্তি। দুলাল ভারী মুশকিলে পড়লেন। মেয়েদের বার ব্রত, কথা এসব তিনি অত জানেন না। তাঁর গর্ভধারিণী মা বসন্তকুমারী জানেন কিছু। তবে গাঁ ঘরের সে স্ত্রীলোকদের সুবিশাল আবদার তাতে মিটবে না।
সেদিন রাত্রে গৃহের পঞ্জিকা খানি খুঁজে না পাওয়ায় পিতামহের পুরাতন সিন্দুক ঘাঁটছিলেন দুলাল। অত্যাশ্চর্যভাবে কিছু ছেঁড়া কাগজ হাতে এল দুলালের। সে কাগজ বোধহয় এ দেশে তালপাতার পুঁথির পর প্রথম যখন আসে সে সময়ের। কারণ , একটা দীর্ঘ সময় পর্যন্ত বিদেশ থেকে আসা কাগজের ব্যবহার এদেশের পন্ডিতরা করতেন না। যা হোক, সে কাগজও জরাজীর্ণ, মসির কালিতে কিছু লেখা। কাগজের টুকরো গুলো একত্রে নিয়ে প্রদীপের আলোয় ধরে দুলাল দেখলেন সব মিলিয়ে এটি আসলে মা বিপত্তারিণী ব্রতকথা। সে ব্রত তাঁর গৃহের পঞ্জিকা হতে সম্পূর্ণ পৃথক ব্রত। তাতে লেখা – “আষাঢ়স্য শুক্লপক্ষে দ্বিতীয়ার পর
এই ব্রত আচরিবে দশমী ভিতর।
পূর্বদিনে নিরামিশ্য খাবে একবার
এই ব্রত করিবে শুধু মঙ্গলবার।।
ত্রয়োদশ গ্রন্থিযুক্ত রক্তবর্ণ ডোরে-
নরনারী সবে ধর দক্ষিণ করে।।”
এছাড়াও সেখানে নির্দেশ রয়েছে- তের রকমের ফল আমার ষোড়শোপচারে দেবে। ষোলো আনার পরিবর্তে ষোল পয়সা নেবে। ডোরের নিমিত্ত চার পয়সা আর দক্ষিণা বাবদ চার পয়সা। দক্ষিণা ছাড়া ব্রতীর ব্রত পূর্ণ হয় না, তাই দক্ষিণা গ্রহন করো। গরীবের জন্যই আমি এসেছি, তারা সহজ সাধ্য মতন তাহাদের মনোস্কামনা পূরণের জন্যই আমার এই আদেশ। ব্রতের দিন সেই বিপদত্তারিণী চণ্ডীর ব্রত কথা পড়েই দুলাল মায়ের পুজো করলেন। অতি সামান্য ব্যয়ে সেই ব্রত উদযাপন করে গাঁয়ের মহিলারা বড় তৃপ্ত হলেন।
বাংলার ১৩৩৪ সালে বিপত্তারিণী চণ্ডীব্রত আরাম্ভ হয় এবং তা আজও প্রচলিত এই চণ্ডী বাড়িতে। বর্তমানে মাত্র ৩৫পয়সায় ব্রতাদি সম্পন্ন হয়। প্রচলিত বিধিমতে শ্রীশ্রী বিঁপত্তারিনী দুর্গাব্রতের কথা উল্লেখ পাওয়া যায় কিন্তু শ্রীশ্রী বিঁপত্তারিনী চণ্ডীব্রতের উল্লেখ নেই। এইরূপে অপ্রচলিত বিপত্তারিণী চণ্ডীব্রত পণ্ডিতমহলকে বিচলিত করে কিন্তু বালক দুলাল তাতে বিন্দুমাত্র বিচলত ছিলেন না, কারণ দেবী তাঁকে স্বয়ং নিজে বলেছেন ব্রতের সমস্ত নিয়ম। কড়াপাক সন্দেশ বালক দুলালের প্রিয় আর চণ্ডীমাতার প্রিয় কাঁচাগোল্লা।
দুলাল বড় হলেন। এবার গুরুর বড় প্রয়োজন। দীক্ষা নেবার জন্য হাজির হলেন কুলগুরুর নিকট। ওনার বংশের কুলগুরু ছিলেন প্রবোধ কুমার ভট্টাচার্য। কিন্তু তিনি দুলালের ভাবগতিক দেখে ভাবলেন , ছেলে যদি সন্ন্যাসী হয়ে যায়, নিতাইচন্দ্রকে কি উত্তর দেবেন? তাই অবিবাহিত অবস্থায় দুলালকে দীক্ষা দিতে অসম্মত হলেন। নন্দদুলাল খুব আশাহত হয়ে বাড়ি ফিরে তার জগন্মাতার কাছে বসে রইলেন। কিন্তু পরেরদিন প্রভাতেই গুরুদেব দুলালের ভদ্রাসনের কড়া নাড়লেন। তিনি এসেছেন দীক্ষা দিতে। তিনি নাকি।মহামায়ার স্বপ্নাদেশ প্রাপ্ত হয়েছেন, অবিলম্বে দুলালকে দীক্ষা দিতে হবে। দীক্ষান্তে দুলালচন্দ্র নিজেকে আরো অধিকভাবে মাতৃসাধনায় নিয়োজিত করলেন।
শোনা যায় গভীর রাত্রে তিনি বারুইপুর শ্মশানে গিয়ে ধ্যান জপ করতেন। একবার কি হল কে জানে, নানা শ্মশান ঘুরে তিনি নৃমুন্ডী আসনে সাধনা করার রোখ চাপল তাঁর। কিন্তু মাতা বসন্তকুমারী তাঁকে বললেন , যে এসব সাধনা করার অধিকার সকলের থাকে না। সবার জন্য এ আসন নয়। এমন আসন প্রতিষ্ঠা করা হয় , যাতে উচ্চ নিচ, ধনী দরিদ্র , নাস্তিক আস্তিক, দ্বৈত অদ্বৈত, সাকার নিরাকার সকলে বিশ্বাসে অবিশ্বাসে যেমন ইচ্ছে মায়ের কাছে আসার অধিকার পায়। সেদিন নন্দদুলাল মাতার আদেশ অমান্য করতে পারলেন না। তিনি স্থাপন করলেন পঞ্চরত্ন বেদী। রাজপুর বিপত্তারিণী মন্দিরে আজও বিল্ব বৃক্ষমূলে পঞ্চরত্ন বেদীটি শ্রদ্ধার সঙ্গে নিত্য পুজো হয়। কথিত আছে এখানেই সাধনরত অবস্থায় দুলাল ও তাঁর পিতা সাধনচন্দ্র যুগলে মাতৃরূপা এক দিব্যজ্যোতির দর্শন লাভ করেছিলেন। পরবর্তী সময়ে রাজপুর গাঁয়ের সকলের প্রিয় ছোট্ট নন্দদুলাল দাশই বাবা দুলাল নামে খ্যাত হন। রামপ্রসাদ, বামাক্ষ্যাপা, তারাক্ষ্যাপা, কমলাকান্ত, শ্ৰী রামকৃষ্ণদেব প্রমুখের যোগ্য উত্তরসূরী ছিলেন তিনি। মহাপ্রভুর চরণ স্পর্শ পেয়ে ধন্য আদি গঙ্গার তীরে প্রভাত সঙ্গীত শুনে যে নবজাতকের জন্ম হয়েছিল , নাম হয়েছিল নন্দদুলাল , সেই দুলালই জগন্মাতাকে আপন করে নামের গূঢ় অর্থকে কর্মের মাধ্যমে ব্যাখ্যা করেছিলেন।
শ্ৰী গোকুল ঘোষের একটি উক্তি আছে –
“রাজপুর ধামে বিপত্তারিণী নামে,
স্থাপিলে চণ্ডীরে,
করি কোলাহল বসিয়া সকল
সেই সুধা-সাগরের তীরে।
দেহো গো সু-জ্ঞান হে মহারাজন
আমাসম মূঢ় জনে,
তোমারি কথন করিয়া যতন
জানাব বিশ্বজনে।।”
আজ রাজপুরের চণ্ডী বাড়ি বঙ্গের প্রাচীন মন্দিরের এক অন্যতম মন্দির। বহু ভক্তের কাছে আজ এক তীর্থস্থান এই বিপত্তারিণী বাড়ি। মায়ের বিগ্রহ ছাড়াও রয়েছে দেবী দুর্গার বিগ্রহ, রয়েছে বিভিন্ন দেবদেবীর বিগ্রহ, রয়েছে সাধক দুলাল বাবার মূর্তি, এবং তাঁর ব্যবহৃত জিনিসের সংগ্রহশালা। রয়েছে রত্নবেদী এবং ভক্তদের পূজা দেবার জন্য সমস্ত ধরনের উপকরণের দোকান। বিপত্তারিণী ব্রতের দিন বহু ভক্তের সমাগম ঘটে এই চণ্ডীবাড়িতে।
মা তো সব , তিনিই তো মহামায়া ব্রহ্মময়ী। তিনি প্রকৃতি , তিনি শক্তি, তিনিই মুক্তি।
দুর্গান্ শিবান্ শান্তিকরিং ব্রহ্মাণী ব্রহ্মণ্যপ্রিয়াং সর্ব্বলোকঃ প্রণেতিঞ্চ প্রণমামি সদাশিবাম্।
মঙ্গলাং শোভনাং শুদ্ধাং নিষ্কলাং পরমাঙ্কলাং বিশ্বেশ্বরীং বিশ্বমাতাং চণ্ডিকাং প্রণমাম্যহম।।”
সমাপ্ত
©দুর্গেশনন্দিনী