ক্ষুদ্র, অতিক্ষুদ্র, মাঝারি শিল্প সংস্থাগুলিকে
(এমএসইএমই) ধ্বংস হওয়া থেকে বাঁচাতে ৫ দফা প্রস্তাব দিলেন কংগ্রেসের অন্তর্বর্তী সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে (Narendra Modi) লেখা চিঠিতে সোনিয়া গান্ধী উল্লেখ্য করেন, কংগ্রেস সভানেত্রী লিখেছেন, “লকডাউনের প্রতিদিন ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের ক্ষতি হচ্ছে ৩০ হাজার কোটি টাকা। তারা নতুন অর্ডার পাচ্ছে না। তাদের পুঁজির পরিমাণ কমে যাচ্ছে।”
সোনিয়ার পরামর্শ, সরকার ওই শিল্পগুলির জন্য ১ লক্ষ কোটি টাকার ওয়েজ
প্রটেকশান প্যাকেজ ঘোষণা করুক। এর ফলে ওই শিল্পের মালিকদের মনোবল বৃদ্ধি পাবে। তাঁরা
মন্দার পরিস্থিতিতে টিকে থাকতে পারবেন।
দ্বিতীয়ত, এক লক্ষ কোটি টাকার ক্রেডিট গ্যারান্টি ফান্ড তৈরি করা
হোক। তাতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে টাকার যোগান বাড়বে। ওই ব্যবসাগুলি চালাতে যে পুঁজি দরকার তা আসবে এই পথে।
তৃতীয়ত, বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলি ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পকে সহজ শর্তে
ঋণ দিক।
চতুর্থত ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের যে মালিকরা ঋণ নিয়েছেন, তাঁদের
ঋণশোধের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হোক।
পঞ্চমত, এখন ঋণ পেতে হলে যথেষ্ট পরিমাণে সিকিউরিটি রাখতে হয়। এর
ফলে অনেকে ঋণ নিতে পারেন না। সরকার এই অসুবিধা দূর করুক।
সোনিয়া লিখেছেন, সরকার স্বীকার করেছে, এমএসএমইগুলি আমাদের অর্থনীতির
মেরুদন্ড। সুতরাং সেই মেরুদন্ডের অস্তিত্ব বজায় থাকা ও আরও শক্তিশালী হওয়া সুনিশ্চিত
করতে ব্যবস্থা নেওয়ার সময় এটাই। এটা এমন একটা ব্যাপারে যেখানে সময়মতো, স্পষ্ট ব্যাবস্থা
গ্রহণই যাবতীয় ফারাক গড়ে দিতে পারে।
উল্লেখ্য, এর আগেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক একটি গাইডলাইন প্রকাশ
করে জানিয়েছে, নন-ব্যাঙ্কিং ফিনান্স কর্পোরেশন, মাইক্রো-ফিনান্স সংস্থাগুলি ২০ এপ্রিল
থেকে কাজ শুরু করতে পারে। এ ব্যাপারে এনবিএফসি এবং মাইক্রো-ফিনান্স সংস্থাগুলির তরফে
সরকার ও রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছে আবেদন জানানো হয়েছিল। কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক ও নর্থ ব্লকও
মনে করছে, অর্থনীতির চাকা ঘোরাতে এ ধরনের আর্থিক প্রতিষ্ঠানকেও কাজ শুরু করার অনুমতি
দেওয়া প্রয়োজন। কারণ, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের দর্শনই হল আরও বেশি ঋণের যোগানের ব্যবস্থা
করে বাজারে নগদের যোগান বাড়ানো ও তার মাধ্যমে অর্থনীতির চাকা যথাসম্ভব ঘোরানোর চেষ্টা করা।
এ ছাড়া নারকেল, স্পাইস বাম্বু, কোকো গাছের বাগান, দুধ, দুগ্ধজাত
পণ্যের উৎপাদন, পোলট্রি ও অন্যান্য পশুপালন, চা, কফি বিভিন্ন বনজ উৎপাদনের কাজ শুরু
করার অনুমতি দিয়েছে কেন্দ্র। গ্রামীণ অঞ্চলে জল সরবরাহ ও স্যানিটেশন, বিদ্যুৎতের কাজ,
টেলিকম সংস্থার অপটিকাল ফাইবার এবং কেবল লাইন পাতার কাজেরও অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
২০ এপ্রিল থেকে ছাড় দেওয়া হয়েছে গ্রামীণ শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলিকেও।
সেই সঙ্গে কৃষি ও তার সম্পর্কিত কাজকর্ম পুরোদমে শুরু হবে। গ্রামে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ
শিল্প, রাস্তা নির্মাণ, সেচ প্রকল্প, বাড়ি নির্মাণ, ১০০ দিনের প্রকল্পের কাজ, সবই শুরু
হয়ে যাবে। ১০০ দিনের প্রকল্পে সবচেয়ে গুরুত্ব দেওয়া হবে সেচ ও জল সংরক্ষণের কাজে। লকডাউনের
ফলে লক্ষ লক্ষ মানুষ কঠিন পরিস্থিতিতে পড়েছেন। তাঁদের কথা ভেবেই ওই ছাড় দেওয়ার ঘোষণা
করা হয়েছে।