উনিশের লোকসভা নির্বাচনের প্রচার চলাকালীন অমেঠীর বিজেপি প্রার্থী স্মৃতি ইরানির ছায়াসঙ্গী ছিলেন তিনি। বিশেষ করে বারাউলিয়া ও তার আশেপাশের এলাকায় স্মৃতি প্রচার করতে এলেই দেখা যেত সব কিছুর তদারক করছেন বারাউলিয়া গ্রামের প্রাক্তন প্রধান সুরেন্দ্র সিং। ভোটের ফলপ্রকাশের সময় দেখা যায়, এই এলাকা থেকে প্রচুর ভোট পেয়েছেন স্মৃতি। বিজেপি প্রার্থী জিতে যাওয়ার ৪৮ ঘণ্টা পরেই আততায়ীর গুলিতে খুন হলেন সুরেন্দ্র।

পুলিশ সূত্রে খবর, শনিবার ভোররাতে নিজের বাড়ির বাইরেই গুলি করা হয় সুরেন্দ্রকে। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে প্রথমে জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখান থেকে তাঁকে লখনৌতে নিয়ে যেতে বলা হয়। রাস্তাতেই মারা যান সুরেন্দ্র। এই খুনের পর সুরেন্দ্রর পরিবার কংগ্রেসের উপর আঙুল তুলেছে। সূত্রের খবর, সুরেন্দ্রর বাড়িতে দেখা করতে আসতে পারেন স্মৃতি ইরানি।

সুরেন্দ্র সিংয়ের ছেলে অভয় সিং জানিয়েছেন, “আমার বাবা আগে বারাউলিয়া গ্রামের প্রধান ছিলেন। তখনই কংগ্রেস চক্রান্ত করে তাঁকে প্রধানের পদ থেকে সরিয়েছিল। কিন্তু গ্রামের মামুষ বাবাকে সম্মান করত। শনিবার ভোররাত ৩টের সময় বাবা বাড়ির বাইরে বসেছিলেন। তখনই আমরা গুলির আওয়াজ পাই। বাইরে বেরিয়ে দেখি বাবার মাথা থেকে রক্ত বেরাচ্ছে। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে প্রথমে জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে ডাক্তার বলে লখনৌ নিয়ে যেতে হবে। লখনৌ নিয়ে যাওয়ার সময় পাইনি আমরা।” অভয় আরও বলেন, “বাবাকে যারা গুলি করেছে, তাদের মুখ আমরা দেখতে পাইনি। কিন্তু আমরা নিশ্চিত এর পিছনে কংগ্রেসের হাত রয়েছে। বাবা স্মৃতি ইরানিজির হয়ে প্রচার করেছিলেন। আমাদের এলাকায় বিজেপি প্রচুর ভোট পেয়েছিল। সেই রাগেই বাবাকে খুন করা হলো।”

অমেঠীর পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, অজ্ঞাতপরিচয় আততায়ীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। এখনও পর্যন্ত দু’জনকে আটক করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তবে পুরনো কোনও শত্রুতার জেরেও এই খুন হতে পারে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

এ বারের নির্বাচনী প্রচারের সময় বারাউলিয়া শিরোনামে এসেছিল। এখানে এসে প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢড়া অভিযোগ করেছিলেন, কংগ্রেস সভাপতি তথা অমেঠীর প্রার্থী রাহুল গান্ধীকে আক্রমণ করার জন্য এলাকায় জুতো বিলি করেছেন বিজেপি প্রার্থী স্মৃতি ইরানি। এই সময় সুরেন্দ্র সিংয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, তিনিই সব কিছুর দায়িত্বে রয়েছেন। যদিও সেই অভিযোগ উড়িয়ে দেয় বিজেপি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.