তিন বছর আগে উত্তরবঙ্গের নকশালবাড়িতে তাঁর আদিবাসী রাজু মাহালির বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজের জনসংযোগ কর্মসূচি চাঞ্চল্য ফেলেছিল বঙ্গ রাজনীতিতে। লোকসভা ভোটপ্রচারে একই পথে হেঁটেছিলেন কলকাতায়। এবারের বাংলা সফরে ফের সেই মধ্যাহ্নভোজের জনসংযোগের রাস্তায় হাঁটছেন অমিত শাহ। বুধবার সন্ধেয় কলকাতায় পা রাখছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তারপর টানা দু’দিনের কর্মসূচি রয়েছে তাঁর। যার মধ্যে বাঁকুড়া ও কলকাতায় একাধিক বৈঠক ছাড়াও রয়েছে পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তীর (Ajoy Chakrabarty) বাড়ি গিয়ে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও দু’দিন দুই প্রান্তিক পরিবারের বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজ।
মঙ্গলবার বিজেপির (BJP) তরফে যে সফরসূচি প্রকাশ করা হয়েছে তাতে বুধবার রাজারহাটের একটি হোটেলে রাত কাটিয়ে বৃহস্পতিবার সকালে হেলিকপ্টারে রাজারহাট থেকে বাঁকুড়া যাবেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। সেখানে রবীন্দ্র ভবনে রাঢ়বঙ্গের সাংগঠনিক জেলাগুলির বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি। বিকেলে তাঁর কলকাতা ফেরার কথা। শুক্রবার সকালে দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে যাওয়ার কথা শাহের। সেখান থেকে পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তীর বাড়ি যাবেন তিনি। সেখানে তাঁর সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতা সারবেন। এরপর তিনি যাবেন বিধাননগরের ইজেডসিসি-তে। সেখানে কলকাতা ও লাগোয়া জেলাগুলির দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করবেন শাহ। বিকেলে সমাজে বিভিন্ন ক্ষেত্রের মানুষদের সঙ্গে সাক্ষাতের পরিকল্পনা রয়েছে তাঁর। শুক্রবার রাতে কলকাতা ছাড়বেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah)। তবে সাংগঠনিক বৈঠককে ছাপিয়ে শাহর এবারের সফরে নজর টানছে বৃহস্পতি ও শুক্রবার যথাক্রমে একটি আদিবাসী ও এক উদ্বাস্তু মতুয়া পরিবারের সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজ সারার কর্মসূচি। ভাত-ডাল-শুক্তোর নিপাট বাঙালি পদে দুপুরের খাওয়া সারতে সারতেই শুনবেন তাঁদের সুখ-দুঃখের কথা। একেবারে পরিবারের সদস্য হয়ে গিয়ে ক্ষণিকের আনন্দ ভাগ করে নেবেন তাঁদের সঙ্গে।
জানা যাচ্ছে, বৃহস্পতিবার বাঁকুড়ায় দলীয় বৈঠক ও তারপর সমাজের বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের সঙ্গে বৈঠকের ফাঁকেই বাঁকুড়া বিধানসভার আম্বারঠোল এলাকায় এক আদিবাসী পরিবারের বাড়িতে গিয়ে মধ্যাহ্নভোজ সারবেন শাহ। ঠিক একইরকম শুক্রবারও সল্টলেকের ইজেডসিসিতে বৈঠকের মাঝেই রাজারহাটের গৌরাঙ্গনগরে এক উদ্বাস্তু মতুয়া পরিবারের বাড়িতে যাবেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। বিধানসভা ভোটের আগে বাংলায় আদিবাসী ও উদ্বাস্তু ভোট ব্যাংকই লক্ষ্য বিজেপির।
বিজেপি নেতাদের দাবি, গত লোকসভা ভোটে এ রাজ্যে জঙ্গলমহলে আদিবাসী ভোট এবং উদ্বাস্তু ভোটের একটা বড় অংশই তাদের ঝুলিতে এসেছে। পাশাপাশি উদ্বাস্তুদের কথা মাথায় রেখে লোকসভায় মোদি সরকার নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন পাশ করেছে। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই সিএএ কার্যকর হবে বলে পুজোর আগে উত্তরবঙ্গ সফরে এসে বলে গিয়েছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা (JP Nadda)। সেই লক্ষ্য পূরণেই শাহর এই মধ্যাহ্নভোজ কর্মসূচি।