রাষ্ট্রীয় সেবাদলের এক অনুষ্ঠানে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা করতে গিয়ে ‘সিজোফ্রেনিয়া’ শব্দটির ব্যবহার করেন। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে বিতর্ক। এ বিষয়ে কিছু মনোবিদদের বক্তব্য, এক্ষেত্রে মানসিক সমস্যায় ভুগছেন এমন মানুষদের আঘাত করতে পারে অমর্ত্য সেনের বক্তব্য। এ বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে মনোবিদ সমাজকর্মী রত্নাবলী রায় জানিয়েছেন, ”আমি আশাহত। অমর্ত্য সেনের তো শব্দের কমতি নেই। কেন্দ্রীয় নীতির সমালোচনা করা প্রয়োজন। কিন্তু সেই সমালোচনা করতে গিয়ে মানসিক রোগের লব্জ কেন বারবার আনতে হয়? ওঁর মতো বিদ্বান পণ্ডিত যদি এই শব্দটি ব্যবহার করেন তা হলে তো আমরা রাজনীতিবিদদের কিছু বলতেই পারব না। ‘কম বুদ্ধি’ শব্দগুচ্ছটিও ব্যবহার করা হয়েছে। এতে সরকারকে আক্রমণ করতে গিয়ে মানসিক রোগে আক্রান্তদেরই আক্রমণ করা হচ্ছে”।
এ বিষয়ে মনোবিদ সাহেলী গঙ্গোপাধ্যায়েরও প্রবল আপত্তি রয়েছে ‘সিজোফ্রেনিয়া’ শব্দটির ব্যবহার নিয়ে। তিনি জানিয়েছেন, ”সিজোফ্রেনিয়া শব্দটি ব্যবহার করা হলে, যাঁরা মানসিক স্বাস্থ্যের সমস্যায় জর্জরিত, তাঁদের প্রত্যেককে অপমান করা হয়। এটি ‘স্টিগমাটাইজেশন’ -কে আরও ইন্ধন দেয়। আর অমর্ত্য সেন বলেছেন বলে আলাদা কথা নয়, আমার পাড়ার লোক বললেও যে ভাবে আমি প্রতিবাদ করতাম, এ ক্ষেত্রেও তাই করব। মানসিক স্বাস্থ্যজনিত শব্দের ব্যবহার অত্যন্ত সচেতনতার সঙ্গে করা উচিত”।
অন্যদিকে, মনোবিদ অনুত্তমা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, যখন কেউ এমন ধরণের কথা বলে, তখন ওই মানুষ বা প্রতিষ্ঠানটির সমালোচনা করা হয় না। কারণ হিসেবে তিনি জানিয়েছেন, আমরা কেউই রোগ ইচ্ছাকৃত ভাবে তৈরি করি না। ফলে, এই শব্দটা ব্যবহার করে একটা রোগের আড়াল নিয়ে অন্যায়কে লঘু করছি। সেইকারণে এমন কথায় বেশি অপমানিত বোধ করছেন মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষেরা। তাছাড়া, সিজোফ্রেনিয়া মানেই অল্প বুদ্ধি নয় আবার সিজোফ্রেনিয়া মানেই অলীক কল্পনা নয়।