বিজেপি থেকে লোকসভা ভোটে লড়ছেন সাধ্বী প্রজ্ঞা। বুধবারই তাঁর নাম ঘোষণা করা হয়েছে। ভোপাল কেন্দ্র থেকে কংগ্রেস নেতা দিগ্বিজয় সিংয়ের বিরুদ্ধে লড়ছেন তিনি। মালেগাঁও বিস্ফোরণে অভিযুক্ত এই হিন্দুত্ববাদী নেত্রীকে ভোটের টিকিট দেওয়ায় সমালোচনার মুখে পড়েছে মোদী-অমিত শাহরা। বিরোধীদের তোপের মুখে নিজের জেলে থাকার কষ্টের কাহিনী বলে চোখে জল আনলেন সাধ্বী প্রজ্ঞা।
বুধবার নাম ঘোষণার পর বৃহস্পতিবার এক কর্মীসভায় উপস্থিত হন তিনি। আর সেখানেই জেলে থাকার অভিজ্ঞতার কথা বলেন। বলতে বলতে কেঁদে ফেলেন তিনি।
২০০৮-এ মালেগাঁও বিস্ফোরণের অভিযুক্ত হিসেবে গ্রেফতার করা হয়েছিল তাঁকে। ২৩ দিন হেফাজতে ছিলেন তিনি। আর ওই ২৩ দিন তাঁকে অকথ্য অত্যাচার করা হয়েছে বলে বর্ণনা করেছেন সাধ্বী প্রাচী। এদিনের কর্মিসভায় তিনি বলেন, প্রথম দিনই কিছু জিজ্ঞেস না করেই পেটাতে শুরু করে পুলিশ।
মোটা বেল্ট দিয়ে মারা হত বলে জানিয়েছেন তিনি। বলেন, এত জোর মারা হত যে সেই মার খেয়ে নার্ভাস সিস্টেম দুর্বল হয়ে যেত। দিন-রাত এভাবেই মারা হত তাঁকে। সঙ্গে অকথ্য গালিগালাজ করা হত বলেও উল্লেখ করেন তিনি। উল্টো করে ঝুলিয়ে, বিবস্ত্র করা হত বলেও জানান সাধ্বী প্রজ্ঞা।
তাঁকে মেরে জোর করে বলানোর চেষ্টা হত যে তিনি মুসলিমদের হত্যা করেছেন, এমনটাই দাবি প্রজ্ঞার।
এদিকে, তাঁকে প্রার্থী করায় সরব হয়েছেন বিরোধীরা। কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আব্দুল্লা বলেন, স্বাস্থ্যের অবনতির জন্য তাঁকে জেল থেকে ছাড়া হয়েছিল। তিনি যদি সুস্থ হয়ে ভোটে লড়তে পারেন, তাহলে তিনি জেলেও থাকতে পারেন, বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। যার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ আছে, হিন্দুত্বের তাস খেলতে তাঁকে কেন প্রার্থী করা হল, সেই প্রশ্নও তুলেছেন ওমর।
বিজেপির ছাত্র সংগঠন এবিভিপির সাংগঠনিক পদে ছিলেন সাধ্বী। এবার নামলেন মূল ময়দানে। তিনি জানিয়েছেন, দিগ্বিজয়ের বিরুদ্ধে লড়া তাঁর জন্য এমন কোন বড় চ্যালেঞ্জ নয়। কারণ দিগ্বিজয় জাতীয়তাবাদ বিরোধী কথা বলছেন আর তিনি জাতীয়তাবাদের পক্ষে।
দিগ্বিজয়ের মন্দিরে যাওয়া প্রসঙ্গে সাধ্বী বলেন, ‘তিনি আসলে ভণ্ড, মানুষ তাঁর আসল রূপ জানে। তাঁকে বলা হয়, তিনি যদি টিকিট পান তাহলে স্থানীয় নেতৃত্বরা তাঁকে বহিরাগত চিহ্নিত করে তাঁর বিরুদ্ধে যাবে। এই প্রসঙ্গে সাধ্বী বলেন, তিনি মোটেও বহিরাগত নন। তিনি ১৬ বছর বয়স থেকে ভোপালে বসবাস করছেন। তিনি সমগ্র ভোপাল জুড়ে কাজ করে চলেছেন এবিভিপির সাংগঠনিক কর্মকর্তা হবার পর থেকেই। ভোপালের প্রত্যেকটি পরিবারের সঙ্গে তাঁর যোগ রয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।