আরএসএস কর্মী খুন হওয়ার ঘটনায় চাঞ্চল্য রাজ্যজুড়ে৷ মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জে চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে৷ মৃত ওই আরএসএস কর্মীর নাম বন্ধু প্রকাশ পাল৷ খুন করা হয়েছে তাঁর গোটা পরিবারকে৷ দেহ উদ্ধার হয়েছে তাঁর স্ত্রী বিউটি পাল ও ৬ বছরের শিশুসন্তান আনন্দ পালেরও। এই ঘটনায় রাজ্যজুড়ে চড়ছে উত্তেজনার পারদ। বিজেপির দাবি, নিহত শিক্ষক আরএসএস কর্মী। যদিও পারিবারিক খুনের ঘটনা নিয়ে রাজ্যে বিজেপি অশান্তি ছড়াতে চাইছে বলে অভিযোগ করেছেন তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
জিয়াগঞ্জের নৃশংস হত্যাকান্ডের ঘটনায় অপর্ণা সেনাদের টার্গেট করেছে বিজেপি। ঘটনায় প্রশাসনের গাফিলতির অভিযোগ তুলে মুখ্যমন্ত্রীর জবাবদিহি চাওয়া হয়েছে দিলীপ-মুকুলদের তরফে। বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার জানিয়েছেন,”জিয়াগঞ্জে মারাত্মক একটা ঘটনা ঘটেছে। তা অবশ্যই দুঃখজনক। অন্তঃসত্ত্বা, ৮ বছরের সন্তানকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। কী কারণ জানি না। বন্ধুপ্রকাশ পাল স্বয়ংসেবক ছিলেন। তার কয়েক দিন আগে আরএসএসের একটি সভায় অংশ নিয়েছিলেন। তারপরই সপরিবারে তাঁকে খুন করা হল। পশ্চিমবঙ্গে আইনশৃঙ্খলা কী অবস্থায় আছে, তা আমরা জানি। একজন প্রাথমিক শিক্ষককে নৃশংসভাবে খুন হচ্ছে অথচ মুখ্যমন্ত্রী কার্নিভাল নিয়ে ব্যস্ত। ওনাকে জবাব দিতে হবে।”তোপ দাগেন বিজেপি নেতা।
একই সঙ্গে এই ঘটনায় বুদ্ধিজীবীদের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন জয়প্রকাশ।
বর্ষীয়ান এই বিজেপি নেতার দাবি, ”বাংলার সুশীল সমাজ, বুদ্ধিজীবীরা কাশ্মীরে কী হল, দিল্লির জেএনইউ-তে কী হচ্ছে, তা নিয়ে লিখছেন। ওনাদের যত চিন্তা ভারতের অন্য জায়গা নিয়ে। বাংলা নিয়ে চুপ কেন? কেন খোঁজ রাখছেন না? প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখছিলেন। খুব ভালো কথা। বাংলা কি সেই সমাজ সচেতনতার বাইরে? বিজেপি নেতার প্রশ্ন, অপর্না সেনরা থাকতে বাংলায় কেন প্রাণ দেবে শিক্ষক? তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী কেন প্রাণ দেবেন? আমরা সেই সুশীল সমাজকে চাই না, যাঁরা পাইয়ে দেওয়ার রাজনীতি করেন। ওনাদের লজ্জা হওয়া উচিত। ওদের মুখোশের পিছনে মুখ চিনে ফেলেছেন মানুষ।”
প্রসঙ্গত, পুলিশ জানিয়েছে আদতে সাহাপুরের বাসিন্দা হলেও, ছেলের পড়াশোনার জন্য ওই পরিবার পরে মুর্শিদাবাদে চলে আসে৷ কোনও বিবাদের জেরে এই খুন কীনা তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ৷ তবে স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন কোনও শত্রুতা ওই পরিবারের কারোর সঙ্গে ছিল না৷ তবে খুব নির্মম ভাবে ওই পরিবারকে হত্যা করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর৷ অন্যদিকে, যে অস্ত্র দিয়ে আরএসএস কর্মীর পরিবারকে খুন করা হয়েছে, তা উদ্ধার করেছে পুলিশ৷ সূত্রের খবর ওই মৃত আরএসএস কর্মী পেশায় স্কুল শিক্ষক ছিলেন৷ গত ২০ বছর ধরে মুর্শিদাবাদের গোঁসাইগ্রাম সাহাপাড়া প্রাইমারি স্কুলে শিক্ষকতা করছেন তিনি৷