কথায় আছে‚ অন্ধকার শ্মশানে ভীরু ভয় পায়/ সাধক সেখানে সিদ্ধিলাভ করে!
পশ্চিমবঙ্গে হিন্দুত্ববাদী আন্দোলনের ক্ষেত্রে আসলেই সেটা হয়েছে। বিগত বিধানসভা নির্বাচনের পরে যে রাজনৈতিক হিংসা এবং প্রতিহিংসার বাতাবরণ চলেছিল তার মধ্যে সবাই ভেবেছিল যে‚ হিন্দুত্ববাদী আন্দোলন হয়তো পশ্চিমবঙ্গে প্রায় বন্ধই হয়ে যাবে। কিন্তু তা তো হয়ইনি বরং দেখা যাচ্ছে আরএসএস এর শাখার সংখ্যা বিগত বছরগুলিতে বেশ উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে!
পশ্চিমবঙ্গে সংঘের তিনটি বিভাগ আছে উত্তরবঙ্গ‚ মধ্যবঙ্গ এবং দক্ষিণবঙ্গ। এই তিনটি বিভাগে শাখার সংখ্যা বেড়েছে যথেষ্ট বেশি পরিমাণে। শাখা হল সংঘের স্বয়ংসেবকদের শরীর চর্চার কেন্দ্র। এছাড়াও এখানে বৌদ্ধিক চর্চা‚ প্রার্থনা‚ গান‚ সংস্কৃত শ্লোক‚ মনীষীদের কথা ইত্যাদিও শেখানো হয়। মোটের উপরে বলা যায় শাখা হলো সংঘের গঠনগত ও কার্যগত একক।
প্রতিবছর অখিল ভারতীয় প্রতিনিধি সভায় শাখার সংখ্যা সহ সঙ্ঘের যাবতীয় রিপোর্ট পেশ করা হয়। এবছর হরিয়ানার পানিপথে যে বার্ষিক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে‚ সেখানে পেশ করা রিপোর্টে জানা গেছে পশ্চিমবঙ্গে আরএসএস এর শাখার সংখ্যা বৃদ্ধির এই হিসাব। শনিবার সংঘের পক্ষ থেকে জিষ্ণু বসু এবং বিপ্লব রায় একটি সাংবাদিক সম্মেলনে এই তথ্য প্রকাশ করেন।
কেশব ভবনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ২০২২ এর মার্চ মাস থেকে ২০২৩ এর মার্চ পর্যন্ত শাখার সংখ্যা বেড়েছে ৫৮৩ টি। তিনটি প্রান্ত মিলিয়ে গতবছর ছিলো ২৯১৯ টি শাখা। এবার তার সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৩৫০২ টি! মধ্যবঙ্গেই শাখার বিস্তার হয়েছে সবথেকে বেশী।
এছাড়াও উল্লেখযোগ্য বিষয় হল বনবাসী ( আমরা যাদের আদিবাসী বলি ) অধ্যুষিত অঞ্চলে সঙ্ঘের অগ্রগতি। বনবাসী অধ্যুষিত জেলাগুলোতে গতবছর শাখা ছিলো ৮৭০ টি। এই বছর তা হয়েছে ১১৯৩ টি। উত্তরবঙ্গে শাখা বেড়েছে ১৭৪ টি আর দক্ষিনবঙ্গে এই সংখ্যা ৮৪ টি।
আসন্ন শতবর্ষর মধ্যেই সঙ্ঘকে দেশের সব গ্রামে পৌঁছে দেওয়ার টার্গেট নিয়েছে স্বয়ংসেবকরা! এই বিষ্ময়কর অগ্রগতি সেই মহতী মিশনেরই একটা অংশ।
সৌভিক দত্ত