বলা হয় যে পরিবর্তনই জগতের নিয়ম। আর এই নিয়ম মেনে যারাই সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নিজেদের পরিবর্তন করে ফেলতে পারে তারাই টিকে থাকে‚ এগিয়ে যায়। অন্যদিকে যারা মৌলবাদী হয়ে পরিবর্তনকে অগ্রাহ্য করে তারা সময়ের সাথে সাথে মুছে যায়।
সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে চলতে এবার নিজেদের মধ্যেও বড় পরিবর্তন আনলো আরএসএস! পরের বছর বিজয়দশমীতে শুরু হওয়া শতবর্ষ বর্ষের প্রস্তুতির জন্য সঙ্ঘ তার দীর্ঘস্থায়ী প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা পরিবর্তন করছে। এই প্রশিক্ষণ ক্যাম্প সঙ্ঘ শিক্ষা বর্গ বা Officers Training Camps (OTC) নামে পরিচিত।
এছাড়াও সংঘের ঐতিহ্যবাহী “দন্ড” (বাঁশের লাঠি) এরও কোনো ছোটো সংস্করণ আনা যায় কিনা তা নিয়েও আলোচনা উঠেছে।
যদিও দন্ডটি আনুষ্ঠানিকভাবে সংঘের ইউনিফর্মের অংশ নয়, তবে কালক্রমে তা সঙ্ঘেরই প্রতীক হয়ে উঠেছে।
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হয়েছিল সঙ্ঘের সর্বোচ্চ স্তরের প্রচারকদের নিয়ে আলোচনা শিবির। ১৩ থেকে ১৫ই জুলাই উটিতে অনুষ্ঠিত হওয়া সেই বৈঠকেই এই বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে। প্রস্তাবিত পরামর্শের উপর ভিত্তি করে এই বছরের শেষের দিকে কেন্দ্রীয় কার্যকারী মন্ডল সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বর্তমানে প্রথম-বর্ষ এবং দ্বিতীয়-বর্ষের প্রতিটি ক্যাম্প ২০ দিনের জন্য এবং তৃতীয়-বর্ষের প্রশিক্ষণ শিবির ২৫ দিন ধরে হয়। কিন্তু প্রচলিত সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামত হল প্রথম বছরের শিবিরের দৈর্ঘ্য কমিয়ে ১৫ দিন এবং দ্বিতীয় এবং তৃতীয় বর্ষের শিবিরগুলি ২০ দিনে বেঁধে ফেলা। এছাড়াও প্রশিক্ষণ শিবিরের বিন্যাসেও উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আসবে। শারীরিক অনুশীলনের উপর জোর কমিয়ে বৌদ্ধিক প্রশিক্ষণের দিকে বেশী জোর দেওয়া হবে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে এই তৃতীয় বর্ষের ট্রেনিং ক্যাম্প নাগপুরে অনুষ্ঠিত হয়।
এছাড়া প্রশিক্ষণ বর্গের নামেও কিছু পরিবর্তন আনা হচ্ছে। প্রথম বছরের শিবিরটিকে এখন সংঘ শিক্ষা বর্গ এবং অন্যান্য বছরের শিবিরগুলিকে কার্যকর্তা বিকাশ শিবির বলা হবে।
এছাড়াও প্রশিক্ষণের অঙ্গ হিসেবে দন্ডের ব্যবহারও উঠে আসে। পরীক্ষামূলকভাবে ইতিমধ্যেই ৫.৩ ফুট দন্ডের ছোট সংস্করণ হিসাবে প্রায় ৩ ফুট লম্বা যষ্টি চালু করা হয়েছে।
আরএসএসের বেশিরভাগ প্রশিক্ষণ শিবির সাধারণত প্রতি বছর এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়। তবে কিছু কিছু শিবির শীতকালেও হয়। এই বছর শতাধিক শিবির অনুষ্ঠিত হয়েছিল এবং এতে ২০‚০০০ এরও বেশি প্রশিক্ষণার্থী অংশ নেয়। যত দিন যাচ্ছে সঙ্ঘ শিক্ষার্থীদের সংখ্যা ততই বেড়ে চলেছে।
সম্ভবত কর্মকারী মন্ডল বৈঠকের সময়েই নতুন ব্যবস্থা ঘোষণা করা হবে এবং আগামী বছর থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হতে পারে।