গঙ্গায় প্রতিমা বিসর্জন নয়, কড়া নির্দেশিকা জারি কেন্দ্রের

পুজোর আগেই বিপত্তি। বিসর্জন কোথায় হবে তা নিয়ে বিতর্ক শুরু। কারণ কেন্দ্রের নির্দেশিকা বলছে গঙ্গা বা অন্য কোনও নদীতে কোনওভাবেই বিসর্জন দেওয়া যাবে না। ১৫টি তথ্য সম্বলিত ওই নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে কেন্দ্রের তরফে। বলা হয়েছে, বিজয়া দশমী, কালীপুজো, ছট পুজো ও সরস্বতী পুজোর প্রতিমা নদীতে বিসর্জন দেওয়া যাবে না। যদি এই নির্দেশ অমান্য করা হয়, তবে সংশ্লিষ্ট ক্লাব বা ব্যক্তিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে।

ন্যাশনাল মিশন ফর ক্লিন গঙ্গার পক্ষ থেকে গঙ্গার ধারে অবস্থিত মোট ১১টি রাজ্যকে এই নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে। প্রতিটি রাজ্যের মুখ্য সচিবের কাছে পৌঁছে গিয়েছে নির্দেশিকা। বিসর্জনের পর গঙ্গাদূষণ ইস্যুতে গত মাসেই একটি বৈঠক করে ন্যাশনাল মিশন ফর ক্লিন গঙ্গা। যেখানে জানানো হয় এই ধরণের পুজোর পর প্রতিমা গঙ্গা বা অন্যান্য নদীতে ভাসালে রীতিমত দূষণ তৈরি হয়। বিশেষত, উত্তরাখণ্ড, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, ঝাড়খণ্ড ও পশ্চিবঙ্গে এই প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। এছাড়াও নদী দূষণ তৈরি হয় দিল্লি, হিমাচল প্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড়, হরিয়ানা ও রাজস্থানে।

তাই নির্দেশিকা পাঠিয়ে এই রাজ্যগুলিকে সতর্ক করা হয়েছে। প্রতিমা বিসর্জনের পর মূর্তি থেকে রাসায়নিক, রং, ফুল মালা জলে ভাসতে থাকে। সেখান থেকেই দূষণ ছড়িয়ে পড়ে বলে জানাচ্ছে এই সংস্থা। তাই পরিবেশ বান্ধব অন্য কোনও উপায়ে প্রতিমা বিসর্জনের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এই রাজ্যগুলিকে। পরিবেশ রক্ষা (সংরক্ষণ) আইন, ১৯৮৬-এর ৫নম্বর ধারা অনুযায়ী এই নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে। এই ধারাতেই দূষণ ছড়ানোর অপরাধে ৫০ হাজার টাকা জরিমানার সংস্থান করা হয়েছে।

সাত দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলির মুখ্য সচিবকে বিকল্প পরিবেশ বান্ধব উপায় জানিয়ে চিঠি দিতে বলা হয়েছে ন্যাশনাল মিশন ফর ক্লিন গঙ্গা সংস্থাটিকে। পাশাপাশি, বিসর্জনের সাত দিনের মধ্যে পরিস্থিতি সম্পর্কে জানিয়েও চিঠি দেওয়ার উল্লেখ রয়েছে নির্দেশিকায়। অন্যথা দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের পক্ষ থেকে জরিমানা করার বিষয়টিও জানানো হয়েছে।

আগেই জানানো হয়েছিল গঙ্গা নদীর পরিশোধনের কাজ জোরকদমে শুরু হয়ে গিয়েছে৷ গিরধার মালভিয়া কমিটি কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে একটি বিশেষ সংস্থা গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ এর পাশাপাশিই সেই সংস্থায় নিয়োগের ব্যবস্থাও শুরু হয়েছে৷ জলসম্পদ মন্ত্রকের উচ্চপদস্থ আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, গঙ্গায় এই বিশেষ টহলদারি ব্যবস্থা চালানোর জন্য অতি শীঘ্রই বিশেষ ফোর্স গঠন করা হচ্ছে৷ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর গঙ্গা বাঁচাও পরিকল্পনায় ঝাঁপিয়ে পড়ে ভারতীয় সেনারাও৷ প্রায় ২৫২৫ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে গঙ্গাদূষণ পর্যবেক্ষনে নামে ভারতীয় সেনা৷ এই বিস্তৃত এলাকার মধ্যে ছিল উত্তরাখন্ড, উত্তরপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ড, বিহার এবং পশ্চিমবঙ্গ৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.