গতকাল ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নিয়ে জম্মু কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা তুলে দিলো নরেন্দ্র মোদীর সরকার। সরকারের এই সিদ্ধান্তে বেজায় খুশি দেশের মানুষ। অনেকেই রাস্তায় ভারতীয় পতাকা কাঁধে করে নেমে বাজি ফাটিয়ে রঙ খেলে তাঁদের খুশি জাহির করেছে। একদিকে যেমন প্রচুর মানুষ খুশি জাহির করছে, তেমনই আরেকদিকে ভোট ব্যাঙ্কের খাতিরে বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দল গুলোর এর বিরোধিতা করেই চলেছে।
দেশ ভাগের সময় দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহর লাল নেহেরু কাশ্মীরকে আলাদা সুবিধা দিয়ে গেছিলেন। তখন উনি চাইলেই কাশ্মীরকে পুরোপুরি ভারতের অভিন্ন অংশ বলে ঘোষণা করতেই পারতেন। কিন্তু সেটা না করে, তখনই তিনি দেশের মাথায় এক বড় বোঝা চাপিয়ে গেছিলেন। দীর্ঘ ৭০ বছর ধরে কাশ্মীর নিয়ে রাজনীতি হয়েই আসছে। কিন্তু কেউই কাশ্মীর সমস্যার সমাধান করার জন্য বড় পদক্ষেপ নেয়নি। ২০১৪ সালে নিজেদের নির্বাচনী ইস্তেহারে বিজেপি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে, ক্ষমতায় আসলে কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা তুলে কাশ্মীর সমস্যার সমাধান করার জন্য প্রথম পদক্ষেপ নেবে। প্রতিশ্রুতি মতো কাজ করে এবার কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা তুলে দিলে কেন্দ্র সরকার।
কেন্দ্র সরকারের এই ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তের পর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বক্তব্য সামনে এসেছে। পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান জানিয়েছেন যে, ভারত সরকারের এই সিদ্ধান্ত অবৈধ। এটি রাষ্ট্রপুঞ্জের নিয়ম উলঙ্ঘন করেছে। কাশ্মীরের মানুষদের অধিকার কেড়ে নিতে চাইছে ভারত সরকার। ভারত সরকারের উচিত এটা অবিলম্বে প্রত্যাখ্যান করা। এই সিদ্ধান্তের ফলে দুটি পরমাণু শক্তিধর দেশের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হবে। পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ভারতের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দেশ এবং সংযুক্ত রাষ্ট্রের সাথে আলোচনায় বসবে বলে জানিয়েছেন।
আরেকদিকে ভারতের রাজনৈতিক দল কমিউনিস্ট পার্টি অফ ইন্ডিয়া এর গলায়ও পাকিস্তানের মতই সূর। সিপিএম কেন্দ্র সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় গতকাল রাজ্যের বিভিন্ন যায়গায় বিক্ষোভ প্রকাশ করে র্যালি বের করেছিল। এমনকি সিপিএম থেকে এর প্রতিবাদে ভারত বন্ধের ডাকও দেওয়া হয়েছে। সিপিএম এর রাজ্য নেতা সূর্যকান্ত মিশ্র ট্যুইট করে লেখেন, ‘এটা কেবল ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ নং ধারা বাতিলের বিষয় নয়, দেশের সংসদীয় গণতন্ত্র,ধর্মনিরপেক্ষতা,যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাসহ জনগণের জীবন জীবিকা ও মৌলিক অধিকারগুলির উপর বৃহত্তর আক্রমণের সূচনা মাত্র। যাঁরা এসব সমর্থন করেন তাঁরাও আক্রান্ত হবেন।সর্বত্র প্রতিবাদ চাই।”
কেন্দ্র সরকারের এই সিদ্ধান্তকে কোন ভাবেই মেনে নিতে পারছেনা সিপিএম। অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষকের মতে সিপিএম এর ৩৭০ ধারা নিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন শুধুমাত্র পায়ের নীচে জমি পাওয়ার জন্য এবং ভোট ব্যাঙ্ক মজবুত করার জন্য। যদিও সিপিএম তথা অনান্য বিরোধী দলের কোন বিক্ষোভেই মন গলবে না কেন্দ্র সরকারের, সেটা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ।