কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা বিলোপ নিয়ে একাধিকবার বিরোধীদের কটাক্ষের সম্মুখীন হয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। এবার সেই কটাক্ষের স্পষ্ট জবাব দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কাশ্মীর ইস্যুতে বিরোধীদের দিকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে তিনি বলেন, “যদি সাহস থাকে তাহলে সিদ্ধান্তে পরিবর্তন এনে দেখাক”। কার্যত এই ভাষাতেই আক্রমণাত্মক চ্যালেঞ্জ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
এই চ্যালেঞ্জ সরাসরি রাহুল গান্ধির দিকে বলেই মনে করা হচ্ছে, এদিনই প্রচারসভা করেন রাহুল গান্ধিও। জম্মু ও কাশ্মীর থেকে স্পেশাল স্ট্যাটাস মুছে ফেলার পাশাপাশি রাজ্যটিকে ভেঙে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ভাগ করেছে বিজেপি।
কিছুদিন বাদেই কাশ্মীরে বিধানসভা নির্বাচন।
প্রধানমন্ত্রী এদিন বলেন, “আপনারা কী মনে হয়, এটা ফিরিয়ে আনতে কারও উৎসাহ আছে? যদি তারা সাহস দেখায়, তাহলে তাদের রাজনৈতিক অস্তিত্ত্ব থাকবে?” অগস্টে সংসদে নরেন্দ্র মোদীর সরকার ঘোষণা করে, জম্মু ও কাশ্মীর অখন্ড ভারতেরই অংশ এবং কোনও সরকারের ক্ষমতা নেই, এর অবস্থা বদল করা বা কোনও অংশকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত করার। সরকারের এই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করে কংগ্রেস। একাধিকবার কাশ্মীর ঢুকতে বাঁধাও পেতে হয়েছে বিরোধিদের।
রবিবার জলগাঁও এ বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, “যদি আপনাদের সাহস থাকে, তাহলে একটা অবস্থান নিন, এবং এগিয়ে চলুন।” তাঁর কথায়, “আমি বিরোধীদের চ্যালেঞ্জ করছি। যদি আপনাদের উৎসাহ থাকে জম্মু ও কাশ্মীর এবং লাদাখে ৩৭০ এবং ৩৫এ ধারা ফিরিয়ে আনার তাহলে তা আপনাদের ইস্তেহারে উল্লেখ করুন।”
কেন্দ্রীয় সরকার জম্মু ও কাশ্মীরে কীভাবে তাদের সিদ্ধান্ত কার্যকর করল, তা নিয়ে একটি কর্মশালা আয়োজন করা হয়। সেখানেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, পাক-অধিকৃত-কাশ্মীর তৈরির জন্য জহওরলাল নেহরুকে দায়ী করেন। মহারাষ্ট্রে একটি জনসভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছিলেন, “৩৭০ ধারা প্রত্যাহার করে, জাতীয়তাবাদকে দেশজুড়ে পালন করার একটি উপলক্ষ্য তৈরি করে দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি।”
লোকসভা নির্বাচনের আগে পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলা হয়। এরপর এপ্রিল-মে মাস লোকসভা নির্বাচনে জাতীয়বাদকে প্রচারের হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করে বিজেপি। পুলওয়ামা হামলার পরে, পাকিস্তানের বালাকোটে জইশ-ই-মহম্মদের জঙ্গি ঘাঁটিতে বিমান হানা চালিয়ে তাদের ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেয় ভারত। অগস্টের পরে জম্মু ও কাশ্মীরে একাধিক নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়, তারমধ্যে রয়েছে, জম্মু ও কাশ্মীরে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ, রাজনৈতিক নেতাদের গৃহবন্দি করার মতো পদক্ষেপ, এই পদক্ষেপের সমালোচনা করে প্রতিবাদ জানায় বিরোধীরা। উল্লেখ্য, কাশ্মীরে পুনরায় চালু হতে চলেছে পোস্টপেইড মোবাইল সার্ভিস ব্যবস্থা। দীর্ঘ প্রায় ২ মাস পর এই পরিষেবা শুরু হতে চলেছে।