জিয়াগঞ্জে সপরিবার আরএসএস কর্মী তথা প্রাথমিক শিক্ষক খুনের ঘটনা আর বাংলায় আটকে নেই। বুধবার রাত থেকেই তা নিয়ে জাতীয় স্তরের বিজেপি নেতারা সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব। এ বার এই ঘটনায় আঁতকে উঠলেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের কন্যা তথা সর্বভারতীয় কংগ্রেসের অন্যতম মুখপাত্র শর্মিষ্ঠা মুখোপাধ্যায়। টুইট করে তিনি এই ঘটনাকে বর্বোরচিত বলার পাশাপাশি দাবি জানিয়েছেন, যদি কোনও রাজনৈতিক যোগ থাকে, তা যেন পুলিশ খুঁজে বার করে। শুধু তাই নয়। শর্মিষ্ঠার এই টুইটকে আবার রিটুইট করেছেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শশী থারুরও।
বিজয়া দশমীর সকালে জিয়াগঞ্জে ওই মর্মান্তিক খুনের ঘটনা ঘটেছিল। প্রকাশ বন্ধু পাল নামে এক শিক্ষক, তাঁর আট বছরের ছেলে ও অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে কুপিয়ে খুন করা হয়। পরে আরএসএস দাবি করেছে, নিহত শিক্ষক সঙ্ঘের সক্রিয় সদস্য ছিলেন। দশমীর দিন বেলা ১২টা নাগাদ তিনজনের ক্ষতবিক্ষত রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করা হয়। পুলিশ জানিয়েছ, মৃতদের নাম বন্ধু প্রকাশ পাল (শিক্ষক-৩৫), স্ত্রী বিউটি পাল (৩০) এবং ছেলে অঙ্গন পাল (৮)।
জানা গিয়েছে, প্রকাশবাবু গোসাঁইগ্রাম সাহাপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন। আদতে তাঁরা সাগরদিঘীর বাসিন্দা। বছর ছয় আগে ছেলের পড়াশোনার জন্য জিয়াগঞ্জে আসেন তাঁরা।
জিয়াগঞ্জের ঘটনা নিয়ে বৃহস্পতিবার কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন বাংলার রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ও। এ দিন রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান গিয়েছিলেন প্রাক্তন ফুটবলার অসুস্থ পিকে বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করতে। পিকে-র সল্টলেকের বাড়ি থেকে বেরিয়ে রাজ্যপাল বলেন, “মুর্শিদাবাদের ঘটনায় আমার ভিতর রক্তক্ষরণ হচ্ছে। ঘটনার নৃশংসতার কথা ভাবলেই আমি শিউড়ে উঠছি।” রাজ্যপাল তাঁর মন্তব্যে বলেছিলেন, “পুলিশ যেন এই ঘটনার যথাযথ তদন্ত করে। কার্পেটের তলায় যেন তা না চলে যায়।” প্রণব-কন্যাও তাঁর টুইটে পুলিশি তদন্তের বিষয়টি উল্লেখ করেছেন।
দলমত নির্বিশেষে সোশ্যাল মিডিয়ায় ইতিমধ্যেই হ্যাশট্যাগ জিয়াগঞ্জ লিখে পোস্টের বন্যা বইছে। গোটা পরিবারের রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়ার ছবিতে ছয়লাপ ফেসবুক টুইটার। কেউ লিখছেন, ‘ও দিকে রক্তে ভাসছে আর এ দিকে কার্নিভাল চলছে।’কেউ সরাসরি দায়ী কাঠগড়ায় তুলেছেন প্রশাসনকে। আর শর্মিষ্ঠা মুখোপাধ্যায় সরাসরি বলেছেন, “এই ঘটনা কোনও সভ্য গণতান্ত্রিক দেশে মেনে নেওয়া যায় না।”