সুভাষচন্দ্রকে একঘরে করার ষড়যন্ত্র রবীন্দ্রনাথের মনঃপীড়ার কারণ হয়েছিল। অসুস্থ সুভাষচন্দ্রের বিরুদ্ধে বিপক্ষদের হীন আক্রমণের ঘটনায় তাঁর কবিচিত্ত ব্যাকুল ও অস্থির হয়ে ওঠে। তাঁর আশঙ্কা হয়, সুভাষচন্দ্র হয়তো উত্তেজনা ও মানসিক প্রতিক্রিয়ায় পদত্যাগ করে বসতে পারেন। তাই শান্তিনিকেতনে যাওয়ার পূর্বে সুভাষকে উৎসাহিত ও অনুপ্রাণিত করার জন্য কিছু পরামর্শ দিয়ে তিনি এক পত্র লিখলেন (৩রা এপ্রিল, ১৯৩৯) যা রবীন্দ্রনাথের অসামান্য রাজনৈতিক প্রজ্ঞার পরিচায়ক। কবি এই ঐতিহাসিক পত্রে লিখেছিলেন:
শ্রী সুভাষচন্দ্র বসু
কল্যাণীয়েসু,
কয়েকদিন কলকাতায় এসে দেশের লোকের মনের ভাব ভালো করে জানবার সুযোগ পেয়েছি। সমস্ত দেশ তোমার প্রত্যাশায় আছে এমন অনুকূল অবসর যদি দ্বিধা করে হারাও তাহলে আর কোনো দিন ফিরে পাবে না। বাংলাদেশ থেকে তুমি যে শক্তি পেতে পার তার থেকে বঞ্চিত হবে, অন্য পক্ষও চিরদিন তোমার শক্তি হরণ করতে থাকবে। এত বড় ভুল কিছুতেই কোরো না। তোমার জন্য বলছিনে, দেশের জন্য বলছি। মহাত্মাজী যাতে শীঘ্রই তাঁর শেষ বক্তব্য তোমাকে জানান দৃঢ়ভাবে সেই দাবী করবে। যদি তিনি গড়িমশি করেন তাহলে সেই কারণ দেখিয়ে তোমরা পদত্যাগ করতে পারবে। তাঁকে বোলো শীঘ্রই তোমাকে ভবিষ্যতের কর্তব্য স্থির করতে হবে, অতএব আর বিলম্ব সইবে না। আশা করি তোমার শরীর সুস্থ হবার দিকে চলেছে। আজই শান্তিনিকেতনে ফিরছি।
ইতি—
তোমাদের
(স্বাঃ) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
(বিশ্বভারতী-র রবীন্দ্র-সদনে রক্ষিত। দ্রঃ নেপাল মজুমদার, পৃ: ১১৪)
© #পেজ নেতাজী
Join our group: নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু Netaji Subhas Chandra Bose