আগামী শুক্রবার সিনেমা হলে রিলিজ হওয়ার কথা ‘রামজি কি জন্মভূমি’ নামে একটি ছবি। একটি মহল থেকে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানানো হয়েছিল, এখন ওই ছবির মুক্তি আটকে দেওয়া হোক। না হলে অযোধ্যায় জমি বিতর্কে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্তে আসার যে চেষ্টা চলছে, তাতে অসুবিধা হবে। সেজন্য এই আবেদনের শুনানি হোক দ্রুত। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট সেই আর্জি মানতে রাজি হয়নি।
রাম কি জন্মভূমি ছবিটি পরিচালনা করেছেন সনোজ মিশ্র। তার চিত্রনাট্য লিখেছেন ওয়াসিম রিজভি। তিনিই ছবির প্রযোজক। অ্যা সোসিয়েট ডায়রেক্টর বিকাশ কুমার সিং। অভিনয় করেছেন মনোজ জোশী ও গোবিন্দ নামদেব। রাম জন্মভূমি বিতর্ক নিয়েই ওই ছবি বানানো হয়েছে।
সেই চারের দশক থেকে রামজন্মভূমি বিতর্কের সূত্রপাত হয়। ১৯৮৬ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী বিতর্কিত কাঠামোর তালা খুলে দিলে বিতর্ক জোরদার হয়ে ওঠে। তার ৩৩ বছর বাদে গত ফেব্রুয়ারি মাসে সুপ্রিম কোর্ট ঘোষণা করে, তিন সদস্যের এক প্যানেল এই বিতর্কে মধ্যস্থতা করবে।
সুপ্রিম কোর্টের এই রায় নিয়ে নানা মহলে চাঞ্চল্য দেখা দেয়। মজলিস ই ইত্তেহাদুল মুসলিমিনের নেতা আসাদুদ্দিন ওয়াইসি প্রশ্ন তোলেন প্যানেলের সদস্য শ্রী শ্রী রবিশংকরকে নিয়ে। তাঁর মতে রবিশংকর মোটেই নিরপেক্ষ নন। বিজেপি নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামী মধ্যস্থতার প্রয়াসকে অভিনন্দন জানান। কিন্তু তাঁর বক্তব্য, অযোধ্যায় একমাত্র রামমন্দির হলেই এই বিতর্কের সমাধান হবে। নির্মোহী আখড়া ও অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানায়। অন্যদিকে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ বলে, এই ধরনের মধ্যস্থতায় দেখা যায়, হিন্দুদের কথা শোনা হচ্ছে না।
এই পরিস্থিতিতে রামমন্দির বিতর্ক নিয়ে ছবি রিলিজের ওপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছিলেন অ্যাডভোকেট লিলি টমাস। তিনি চেয়েছিলেন, মধ্যস্থতা যতদিন চলবে, ততদিন যেন ওই ছবি মুক্তি না পায়। তাঁর আশঙ্কা, ওই ছবি মধ্যস্থতার প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করবে। কিন্তু বিচারপতি এস এ বোবদে ও বিচারপতি এস আবদুল নাজিরকে নিয়ে গঠিত বেঞ্চ মন্তব্য করে, মধ্যস্থতা ও ছবি রিলিজের মধ্যে কোনও সম্পর্ক নেই। তাঁদের কথায়, ছবি আর মধ্যস্থতার মধ্যে কী সম্পর্ক আছে? দু’পক্ষ চাইছে বিরোধের মীমাংসা হোক। আমরা অত সহজে আশা ছাড়ি না। কোনও ফিল্ম মধ্যস্থতায় বাধা হয়ে দাঁড়াবে না। দু’সপ্তাহ বাদে বিষয়টি নিয়ে ফের শুনানি হবে।