রাজ্যসভায় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়ে শুরু হল আলোচনা । বুধবার দুপুর ১২টা নাগাদ রাজ্যসভায় এই বিল নিয়ে ভাষণ শুরু করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এই বিল নিয়ে আলোচনার জন্য সময় বরাদ্দ করা হয়েছে ছয় ঘণ্টা। এ দিন রাজ্যসভার স্পিকার বেঙ্কাইয়া নায়ডুর সামনে এই বিল নিয়ে ভাষণ শুরু করে তিনি বলেন ‘আমাদের পড়শি দেশ থেকে আগত সংখ্যালঘুদের অধিকার আমরা প্রদান করব।’ এই বিলের ফলে শরণার্থীরা নিজেদের অধিকার পাবেন বলেও জানান অমিত। তিনি বলেন, ‘এই বিল অনুযায়ী শুধুমাত্র শরণার্থী নয়, প্রবাসী (হিন্দু,জৈন,পার্সি,ক্রিশ্চান এবং বৌদ্ধ) এদের ভিসা বা পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও তাঁদের ভারতীয় হিসাবেই বিবেচনা করা হবে।’ এই বিল মুসলিম বিরোধী বলে তোপ দেগেছিল বিরোধীরা। এই বক্তব্যের জবাবে অমিত শাহ বলেন, ‘ভারতের মুসলিমদের ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই। দেশের মুসলিমরা সুরক্ষিত থাকবেন। কিন্তু পাকিস্তান, বাংলাদেশ বা আফগানিস্তান থেকে আসা মানুষদের আমারা দেশে জায়গা কেন দেব?’ এই বিল তাঁদের কর্মসূচিতেই ছিল বলে জানান তিনি।
এই বিলের বিরোধিতায় সুর চড়ান কংগ্রেসের আনন্দ শর্মা। এই বিলের বিরোধিতা করে তিনি বলেন, ‘ এই বিল গণতন্ত্র বিরোধী। এই বিল এনে বিভেদের রাজনীতি করছে বিজেপি।’
নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাস হলে সংবিধানের উপর আঘাত আসতে পারে বলে আশঙ্কা আনন্দ শর্মার। তিনি বলেন, ‘ এই বিল পাস হলে সংবিধানে উপর চরম আঘাত নেমে আসবে।’ বিল পাস করানোর ক্ষেত্রে কেন্দ্রের তাড়াহুড়ো নিয়েও প্রশ্ন তোলেন বর্ষীয়ান এই কংগ্রেস সাংসদ। সংবিধান না মেনেই বিল পেশ হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন আনন্দ শর্মা।
রাজ্যসভায় সহজেই বিল পাস হয়ে যাবে বলে আশাবাদী বিজেপি। তাঁদের পক্ষে মোট ১২৫ জন সাংসদ রয়েছেন বলে জানিয়েছে পদ্ম শিবির। সোমবার মধ্যরাতে লোকসভায় ৩১১ ভোটে বিপুল সমর্থন নিয়ে পাস হয় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল বা ‘সিএবি’। এই বিল অনুযায়ী ভারতের পার্শ্ববর্তী তিন পড়শি দেশ, আফগানিস্তান,পাকিস্তান এবং বাংলাদেশে বসবাসকারী সংখ্যালঘু ধর্মালম্বী (হিন্দু,জৈন,বৌদ্ধ,পার্সি এবং ক্রিশ্চান) -দের শরণার্থী হিসাবে ভারতে তাঁদের নাগরিক হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া হবে। কিন্তু এখানে মুসলিম ধর্মের কোনও উল্লেখ করা হয়নি।
এরপরেই দেশজুড়ে এই বিলের বিরোধিতায় প্রবল আন্দোলন শুরু হয়। এই বিলের সমালোচনায় মুখ খোলে বিরোধীরাও। বুধবার রাজ্যসভায় ভোটাভুটি দিয়ে এই বিল পাস করতে মরিয়া বিজেপি। অন্যদিকে এই বিল যাতে পাস না হয় সে বিষয়ে নিশ্চিত করতে এ দিন রাজ্যসভায় উপস্থিত থাকার ক্ষেত্রে হুইপ জারি করেছে কংগ্রেস।