সংবিধানের ৩৭০ ও ৩৫এ ধারা নিয়ে বিজেপি তাদের অবস্থান আরও একবার স্পষ্ট করল৷ সোমবার নির্বাচনী ইস্তেহারে বিজেপি জানিয়েছে, এই দুটি ধারা সংবিধানের পরিপন্থী৷ তাই ৩৭০ ও ৩৫এ ধারা তারা বাতিলের পক্ষে৷
সোমবার নির্বাচনী ইস্তেহার প্রকাশ করেছে বিজেপি। মোট ৭৫টি প্রতিশ্রুতির মধ্যে এই বিষয়টি নিয়ে সর্বাধিক আলোচনা শুরু হয়েছে। দল মনে করছে ৩৭০ এবং ৩৫এ ধারা সংবিধানের পরিপন্থী। দলের থেকে আরও একধাপ এগিয়ে রাজনাথ সিং বললেন, “ওই দুই ধারা প্রত্যাহার করে নেওয়া ছাড়া সরকারের অন্য উপায় নেই।”
ইস্তেহারে তা প্রকাশের পর বিজেপির বিরুদ্ধে তেড়েফুঁড়ে আসরে নামেন জম্মু কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লা৷ হুমকির সুরে জানান, ৩৭০ ধারা বাতিল করার চেষ্টা হলে তারা এর মোকাবিলা করবে৷ ফারুক আবদুল্লার কটাক্ষ, ওদের মতলব হল বাইরে থেকে লোক আনিয়ে কাশ্মীরে বসিয়ে দেওয়া৷ এরপর নিজেদের জনসংখ্যা বাড়িয়ে আমাদের জনসংখ্যা কমিয়ে দেওয়া৷ কিন্তু এত সহজে কাশ্মীরিরা তা মেনে নেবে না৷ ফারুকের হুঁশিয়ারি, ‘‘আমরা এর মোকাবিলা করব৷ ৩৭০ ধারা কে কী করে বাতিল করে আমরাও দেখব৷’’
এই বিষয়ে পিডিপি নেত্রী মেহবুবা মুফতি বিজেপিকে উদ্দেশ্য করে কড়া হুঁশিয়ায়ি দিয়েছেন। তাঁর কথায়, “ইতিমধ্যেই জম্মু-কাশ্মীর বারুদের স্তুপের উপরে বসে রয়েছে। ৩৭০ এবং ৩৫ ধারা নিয়ে কিছু করা হলে শুধু কাশ্মীর নয়, সমগ্র দেশে আগুন জ্বলবে।” তবে সুর নরম করেও একদা জোট সঙ্গীর প্রতি বার্তা দিয়েছেন মেহবুবা। তিনি বলেছেন, “আমি বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে অনুরোধ করব যাতে আগুন নিয়ে না খেলা হয়। তাহলেই সব পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকবে।”
তবে নিজেদের অবস্থানে অনড় রয়েছে বিজেপি। মোদী সরকার ফের ক্ষমতায় এলে সংবিধানের ৩৭০ এবং ৩৫ এ ধারা কাশ্মীর থেকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হবেই। বিদায়ী মোদী সরকারের মন্ত্রী রাজনাথ নিজের বক্তব্যের স্বপক্ষে যুক্তিও দিয়েছেন। তাঁর কথায়, “আমি খুব স্পষত করে জানিয়ে দিতে চাইছি যে যদি জম্মু-কাশ্মিরের জন্য আলাদা প্রধানমন্ত্রীর দাবি ওঠে তাহলে সরকারের কিছু করার থাকবে না। বাধ্য হয়েই ৩৭০ এবং ৩৫ এ ধারা প্রত্যাহার করে নিতে হবে।”
জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে বিজেপির অবস্থানের বিরোধিতা করা দুই রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতাকেও এই নিয়ে আক্রমণ করেছেন দেশের বিদায়ী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, “যারা দীর্ঘ দিন দজম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন তাঁরা এবং ওই রাজ্যের জন্য আলাদা প্রধানমন্ত্রি চাইছেন। এই বিষয়ে আমি কংগ্রেস সহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের অবস্থান জানতে চাইব? তারা এই বিষয়ে কী অবস্থান নেবে? তারাও কি ভারতের জন্য দু’জন প্রধানমন্ত্রী চাইবে?”
সংবিধানের উল্লেখিত দুই ধারা নিয়ে বিজেপির ইস্তেহারে বলা হয়েছে যে এই ধারা বৈষম্যমূলক৷ জম্মু-কাশ্মীরের উন্নয়নের পথেও অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে এই ধারা৷ কাশ্মীরি পণ্ডিতদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনার জন্যও পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছে বিজেপি৷