রবীন্দ্রনাথ শূন্য-কে সারাজীবনে কখনোই প্রশ্রয় দেননি। কোনো শূন্যতাকেই নয়, ‘দেহের সীমা’ পেরিয়ে মহাজাগতিক শূন্যতাকে নয় বা হৃদয়-দুয়ার পার হয়ে নিজের ভিতরের ভাণ্ডারের শূন্যতাকেও নয়। রবীন্দ্রনাথ সেখানে ‘পূর্ণতা’কেই শেষ সত্য শুধু নয়, শেষ লক্ষ্য, শেষ আশ্রয় হিসেবে অবলম্বন করতে চেয়েছেন । সবসময় পূর্ণতার জয়গান গেয়েছেন ..যেমন-
‘আগুনের পরশমণি ছোঁয়াও প্রাণে।
এ জীবন পুণ্য করো দহন-দানে।’
‘ একি লাবণ্যে পূর্ণ প্রাণ, প্রাণেশ হে, আনন্দবসন্তসমাগমে ॥
বিকশিত প্রীতিকুসুম হে পুলকিত চিতকাননে ॥’
রবীন্দ্রনাথের ছিন্নপত্রের চিঠিপত্রগুলো প্রতিমুহূর্তে বিশালত্বের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে পূর্ণতার স্বাদ এনে দেয় । পদ্মার চরে রাতের তারাভর্তি আকাশের ভীতিকর বিরাটত্ব, জগৎসংসার ঠাঁই-দেওয়া ধরিত্রীর স্পন্দিত নৈঃশব্দ্য একইসাথে শূন্যতা আর পূর্ণতার উপলব্ধি ঘটিয়ে দেয়। উষ্ণতা, নিবিড়তা, নিবিষ্ট এক সান্নিধ্য-ঘনিষ্ঠতা পূর্ণতায় চরাচর পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে ।রবীন্দ্রনাথের মত মানুষকেও মৃত্যুজনিত আঘাত সইতে হয়েছে বারবার । মৃত্যুবিরহকে সঙ্গে করেই কবিকে পার হতে হয়েছে দীর্ঘ বিবর্তনের পথ ।
দেশবিভাগের পরে পূর্ব বাংলায় স্বল্পকালের মধ্যে একটি বৃহৎ মধ্যবিত্ত শ্রেণী গড়ে ওঠে।এরা প্রত্যেকে অসাম্প্রদায়িক চেতনার অনুসারী ছিলেন।পূর্ব বাংলায় ভাষা আন্দোলন সার্বজনীন রূপ নেয়।ফেব্রুয়ারী আন্দোলনের পরে পূর্ব বাংলার অগণতান্ত্রিক সরকার কিছু পদক্ষেপ নিয়েছিল।এরমধ্যে প্রধানতম হল বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের সঙ্গে যুক্ত সকল হিন্দু নামকে তারা মুছে ফেলতে উদ্যোগী হলেন। বঙ্কিমের বদলে মীর মশারফ হোসেন,রবীন্দ্র নাথের বদলে নজরুলকে এঁরা দাঁড় করালেন।প্রকৃতপক্ষে, বাংলা সংস্কৃতি-বিরোধিতার প্রতীক হল রবীন্দ্র-বিরোধিতা।সরকারের সাংস্কৃতিক দালালরা চাইলেন রবীন্দ্রনাথকে নানা উপায়ে শিক্ষা ও সংস্কৃতি ক্ষেত্র থেকে মুছে ফেলতে।আজাদ পত্রিকার সম্পাদক প্রতিক্রিয়াশীল মৌওলানা আক্রাম খা ও সরকারের অন্যান্য পদাধিকারীরা এ সময়ে বলতে শুরু করেন যে,রবীন্দ্রনাথ মুসলমান নন,রবীন্দ্রনাথ পাকিস্তানি নন,রবীন্দ্রনাথ মুসলিম সমাজ নিয়ে লেখেননি এবং রবীন্দ্রনাথ মুসলিমদের বিরুদ্ধে লিখেছেন;সুতরাং পাকিস্তানের মাটিতে তিনি পরিত্যাজ্য।ধর্মীয় গোঁড়ামি এঁদের চিন্তাভাবনায় এমন প্রভাব ফেলেছিল এবং এঁদের মন আরব মরুভূমির দিকে এতটাই প্রসারিত হয়েছিল যে,সাম্রাজ্যলোলুপ বিদেশী মুসলমানের বিরুদ্ধে দেশীয় কোনো শিবাজী লড়াই করে থাকলে এবং রবীন্দ্রনাথ তার প্রশংসা করে থাকলে,সেটা এদের চোখে গণ্য হল অমার্জনীয় অপরাধ বলে।রবীন্দ্রনাথ ও বাংলা সংস্কৃতির বিরুদ্ধে শ্লোগান সবচেয়ে প্রবলতা লাভ করে ১৯৬৫ সালের পাক- ভারত যুদ্ধকে কেন্দ্র করে।পূর্ব বাংলার তৎকালীন গভর্নর মোমেন খানের মতো ব্যক্তিত্ব এইসময় রবীন্দ্রবিরোধী আন্দোলনে সোচ্চার হয়ে ওঠেন।
নজরুলকে তারা চিহ্নিত করলেন ইসলামের ধ্বজাধারী হিসেবে।অথচ আক্রাম খানের মতো ব্যক্তিত্বরা নজরুলকে একসময় কাফের বলে ফতোয়া দিয়েছিলেন।এমন কি,১৯৫০ সালে পাকিস্তান লাভের পরে,গোলাম মোস্তফা একটি প্রবন্ধে নজরুলের সমন্বয়ধর্মী মনোভাবের তীব্র সমালোচনা করে বলেন যে,ইসলামি রাষ্ট্র পাকিস্তানে নজরুল কোনোক্রমেই গৃহীত হতে পারেন না।সরকারি প্রচার যন্ত্রগুলি নজরুলের একটা বিশেষ দিককেই প্রতিবিম্বিত করতে থাকলো।নজরুলকে অতঃপর দাঁড় করানো হলো রবীন্দ্রনাথের প্রতিপক্ষরূপে।রবীন্দ্রনাথ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরোধিতা করেছিলেন বলে যে অপপ্রচার চালানো হয় সেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকরা এরপরে রবীন্দ্রনাথের জন্য রাস্তায় নামেন।প্রফেসর আব্দুল হাই,প্রফেসর সরওয়ার মুরশেদ,ডক্টর আহমদ শরীফ,ডক্টর আনিসুজ্জামান, ডক্টর কুদরতই খুদা,ডক্টর কাজী মোতাহার হোসেন প্রমুখ বুদ্ধিজীবী এক বিবৃতি প্রকাশ করে বলেন,পূর্ব বাংলার সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের যোগ অবিচ্ছেদ্য ও অনিবার্য। পুনরাবর্তনশীল ইতিহাসের পাতা পিছন দিকে ওল্টাতে ওল্টাতে এসে গেল ১৯০৫ সাল। সারা বাংলা তথা ভারতবর্ষের কালপঞ্জিতে এক স্মরণীয় সময়। চলছে বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলন, জনকল্লোলে মুহুর্মুহু ধ্বনিত হচ্ছে ব্রিটিশবিরোধী অঙ্গীকার ।তারই মাঝে ওই বছরের ১৬ অক্টোবর (৩০ আশ্বিন) যেদিন বঙ্গভঙ্গ কার্যকরী হল সেদিন সারাদিন ধরে আপামর জনগণের সঙ্গে রাখিবন্ধন উৎসব পালন করে ‘ফেডারেশন হল’ গ্রাউন্ডের বিরাট সভায় যে মানুষটি জলদ্গম্ভীর স্বরে জনসাধারণকে জাতীয় সঙ্কল্পবাক্য পাঠ করাচ্ছিলেন তিনি তো আমাদের অতি কাছের মানুষ, যাঁর অস্তিত্ব আমাদের হৃদয়ে চির ভাস্বর! তিনি স্বদেশী আন্দোলনের অন্যতম প্রাণপুরুষ, তিনি রবীন্দ্রনাথ।
১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গের আদেশের পর স্বদেশী আন্দোলন আরম্ভ হয়। তবে সেই আন্দোলন হঠাৎ শুরু হয়েছিল সে কথা বলা যায় না।সিপাহী যুদ্ধের (১৮৫৭) পর দেশে যে একটা নতুন ভাবের সঞ্চার হয়েছিল, বাংলাদেশের কবি ও সাহিত্যিকদের মনেই তা সর্বপ্রথম প্রতিধ্বনি তুলেছিল। মাইকেল মধুসূদন দত্তের অমর কাব্য ‘মেঘনাদ বধ’ কেবল মিত্রাক্ষর ছন্দের শৃঙ্খলা ভেঙ্গেই বিদ্রোহের পরিচয় দেয়নি, ঐ কাব্যের ছত্রে ছত্রে স্বাধীনতার জন্য দুর্দমনীয় আকাঙ্ক্ষা অন্তঃসলিলা ফল্গুর মতো প্রবাহিত হয়েছে। ওই সময়েই কবি রঙ্গলাল তাঁর ‘পদ্মিনী’ কাব্যে তূর্যধ্বনি করেছেন—
“স্বাধীনতা হীনতায় কে বাঁচিতে চায় রে, কে বাঁচিতে চায়,
দাসত্ব শৃঙ্খল বল কে পরিবে পায় রে, কে পরিবে পায়।
দীনবন্ধু মিত্রের ‘নীলদর্পণ’ নাটক এই সময়েই বিদেশী অত্যাচারের বিরুদ্ধে তীব্র ভাবে বিদ্রোহ ঘোষণা করে।এইরূপ যুগসন্ধিক্ষণেই ১৮৬১ সালে রবীন্দ্রনাথ জন্মগ্রহণ করেন। তিনি তাঁর জীবন স্মৃতিতে বলেছেন, তিনি যে পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন, সে পরিবারে আগের থেকেই স্বদেশী ও জাতীয় ভাব প্রবল ছিল। তাঁর বাবা ও দাদারা–মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ, দ্বিজেন্দ্রনাথ, সত্যেন্দ্রনাথ, জ্যোতিরিন্দ্রনাথ প্রমুখ বিশ্রুতকীর্তি মনীষীদের দানে জাতীয় জীবনের নানা দিক পুষ্ট হয়েছে। বিশেষত, মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ প্রবর্তিত তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা যে স্বদেশী ভাব প্রচারে যথেষ্ট সাহায্য করেছে তা অস্বীকার করার উপায় নেই। হিন্দু মেলার উদ্যোক্তারা অখণ্ড ভারত ও এক ভারতীয় মহাজাতি গঠনের স্বপ্ন দেখেছিলেন। কেবল বাংলা ও বাঙালীর কথাই ভাবেননি। এর আগে ভারতবর্ষের কোনও প্রদেশে কেউ অখণ্ড ভারত ও ভারতীয় মহাজাতির কথা বলেননি। পরবর্তীকালে ‘ইণ্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন’ (১৮৭৬) ও ‘কংগ্রেস’ (১৮৮৫) যে হিন্দু মেলার কাছ থেকেই এই ভাব গ্রহণ করেছিল তাতে সন্দেহ নেই। হিন্দুমেলার কর্ণধাররাও বঙ্কিমচন্দ্র ও তাঁর অনুগামীদের মতোই আত্মশক্তির বলেই দেশের স্বাধীনতা লাভ করতে চেয়েছিলেন, আবেদন নিবেদনের পথে নয়।১৮৯৩ সালে কলকাতায় (চৈতন্য লাইব্রেরীতে) এক জনসভায় রবীন্দ্রনাথ তাঁর বিখ্যাত প্রবন্ধ ‘ইংরেজ ও ভারতবাসী’ পাঠ করেন, যে সভার সভাপতি ছিলেন স্বয়ং বঙ্কিমচন্দ্র। ওই সময়ে স্ব-সম্পাদিত ‘সাধনা’ পত্রে রবীন্দ্রনাথের বহু সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রবন্ধ, দেশাত্মবোধক কবিতা ও গল্প প্রকাশিত হয়। ওই সমস্ত লেখারই মূল নীতি ছিল, আত্মশক্তির দ্বারাই জাতিকে অগ্রসর হতে হবে—‘ভিক্ষায়াং নৈব নৈব চ‘। তাঁর বিখ্যাত কবিতা ‘এবার ফিরাও মোরে’ এই ‘সাধনা’তেই প্রকাশিত হয়। সেখানে তিনি বলেছেন—
“কী গাহিবে, কী শুনাবে! বলো, মিথ্যা আপনার সুখ,
মিথ্যা আপনার দুঃখ। স্বার্থমগ্ন যে জন বিমুখ
বৃহৎ জগৎ হতে সে কখনো শেখেনি বাঁচিতে।”
বস্তুত ‘সাধনা’কে রবীন্দ্রনাথের যৌবনের স্বদেশ সাধনার যুগও বলা যায়।
ওই সময়ে রবীন্দ্রনাথ কংগ্রেস ও বঙ্গীয় প্রাদেশিক কনফারেন্সের কয়েকটি অধিবেশনে যোগ দিয়ে তাঁর বক্তব্যে ও কর্মে সর্বদা ‘আবেদন-নিবেদনের নীতি‘র প্রতি ঘৃণা ও আত্মশক্তির সাধনার উপর জোর দিতেন। ১৮৯৬ সালে কলকাতার কংগ্রেস অধিবেশনে বাল গঙ্গাধর তিলকের উপস্থিতিতে রবীন্দ্রনাথ বঙ্কিমচন্দ্রের বিখ্যাত ‘বন্দেমাতরম্’ সঙ্গীতে সুরারোপ করে গান করেন। সেই থেকে রবীন্দ্রনাথ প্রদত্ত সুরেই বন্দেমাতরম্ গীত হচ্ছে। যা আমাদের স্বাধীন দেশের জাতীয় স্তোত্র। ১৮৯৭ সালে নাটোরে এবং ১৮৯৮ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত বঙ্গীয় প্রাদেশিক কনফারেন্সেও তিনি যোগ দেন।
১৮৯৮ সালেই রাজদ্রোহের অভিযোগে লোকমান্য বালগঙ্গাধর তিলকের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে ওই সরকারি আচরণের তীব্র সমালোচনা করে প্রবন্ধ লেখেন এবং গ্রেপ্তারী মকদ্দমার ব্যয় চালাবার অর্থ সংগ্রহে সাহায্য করেন। রাজদ্রোহ আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার জন্য কলকাতা টাউন হলে যে বিরাট সভা হয়, রবীন্দ্রনাথ সেই সভায় তাঁর বিখ্যাত প্রবন্ধ ‘কণ্ঠরোধ’ পাঠ করেন।এরপর বিংশ শতাব্দীর সূচনায় বিভিন্ন স্বদেশব্রতী মনীষীদের অবদানে জনকল্লোলে জোয়ার আসার পালা। ১৯০০-১৯০৫ পরবর্তী স্বদেশী তথা স্বাধীনতা আন্দোলনের ঊষা কাল। বিবেকানন্দ, ভগিনী নিবেদিতা, বিপিনচন্দ্র পাল, আচার্য সতীশ চন্দ্র পাল, বিজ্ঞানী রামেন্দ্র সুন্দর ত্রিবেদী, ব্রহ্মবান্ধর উপাধ্যায় প্রমুখ মনীষীদের বিপুল অবদানে জাতীয়তাবাদী আন্দোলন এই সময় কঠিন থেকে কঠিনতর রূপ পরিগ্রহের দিকে এগিয়ে চলে। আর এই কর্মকাণ্ডে অন্যতম প্রধান কাণ্ডারীর ভূমিকা নেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। ওই সময়ে অসংখ্য ঘটনা প্রবাহের মধ্যে ১৯০৪ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ‘স্বদেশী সমাজ’ প্রবন্ধ প্রকাশ করে সেইমত পরিকল্পনা ব্যক্ত করেন, যা পরবর্তী কালে স্বদেশী আন্দোলনের উপর বিশেষ প্রভাব বিস্তার করেছিল। অসহযোগ আন্দোলনের উপরও এর প্রভাব অনস্বীকার্য।বৃহস্পতিবার, ৭ আগস্ট, ১৯৪১ সাল। বারোটা দশ মিনিটে কবিগুরুর শেষ নিঃশ্বাস ক্রমে ক্রমে ধীর হতে হতে সম্পূর্ণ স্তব্ধ হয়ে গেল (নির্বাণ পৃ. ৪৬)। তিনি ছিলেন বিশ্বের কবি। সাধারণ মানুষের ধরাছোঁয়ার সংস্পর্শে ছিলেন না তিনি। যে সম্বন্ধে তিনি যথেষ্ট সচেতন ছিলেন। তার কাম্য ছিল তার মৃত্যুর পর তার অন্তিম যাত্রা হবে নীরবে শ্রদ্ধাবান শোকযাত্রা।নয় কোনো শব্দমুখর শোভাযাত্রা। নয় কোনো আড়ম্বর। তিনি চাননি তাঁর আত্মাহীন অসহায় দেহ যেন বহু মানুষের হস্তস্পর্শে কলুষিত হয়। কিন্তু কী হয়েছিল সেইদিন? কেমন করে অন্তিম যাত্রা হয়েছিল সেই ঋষিকল্প মানুষটির মরদেহ?
কলকাতার রাজপথে সেদিন জনতার আচরণ সারা বিশ্বকে স্তম্ভিত করেছিল। দু’জন বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব তাদের প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনায় সেই বীভৎস আর কুৎসিত আচরণ নথিভুক্ত করে গেছেন। প্রথমজন তপন রায়চৌধুরী তার বাঙালনামায় পৃষ্ঠা-৯৭ (অধ্যায়-গুরুকুলবাসপ্রথম পর্ব)-এ লিখছেন—“জোড়াসাঁকো গিয়ে এমন দ্বিধাহীন বর্বরতার দৃশ্য দেখতে হবে কখনও ভাবিনি। প্রচণ্ড চেঁচামেচি ঠেলাঠেলি চলছিল। জনতার চাপে ঠাকুরবাড়ির লোহার গেট ভেঙে গেল। মানুষের ভিড় এত বেশি যে, আমাদের পা প্রকৃতপক্ষে যেন মাটি খুঁচ্ছিল ।
এরই মধ্যে হঠাৎ প্রচণ্ড বেগে মানুষের মাথায় মাথায় উপর দিয়ে খাটের উপর শোয়ানো ওঁর দেহ বেরিয়ে এল (ভিড়ের চাপে খাট বের করবার সামান্যতম জায়গা ছিল না)। বাইশে শ্রাবণ আমাদের কাছে শুধু জাতীয় শোকের দিন নয়।বাঙালি যতদিন থাকবে ততদিন থেকে যাবে ২৫ বৈশাখ। কবিগুরুর ১৬১ তম জন্মবার্ষিকীতে শ্রদ্ধার্ঘ্য।।
কলমে-ইন্দ্রাণী সান্যাল ভট্টাচার্য্য।