গ্রিন ট্রাইব্যুনালের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ছটপুজোতে দেদার দূষণ ছড়িয়েছে রবীন্দ্র সরোবরের জলে। সেদিনই পরিবেশকর্মীরা আশঙ্কা করেছিলেন, এর প্রভাব ভয়াবহ হতে পারে। সোমবার দেখা গেল সেটাই সত্যি হল। রবীন্দ্র সরোবরের জলে ভেসে উঠল মরা মাছ, কচ্ছপ। কার্যত মড়ক লেগেছে লেকে।
গোটা ঘটনায় ক্ষুব্ধ পরিবেশকর্মীরা। তাঁদের বক্তব্য, ভোটের রাজনীতি করতে গিয়েই সর্বনাশ হল সরোবরের জীব বৈচিত্র্যের। বিষাক্ত করা হল জলকে। আর সবটা হতে দেখেও প্রশাসন কার্যত নির্বিকার। ব্যবস্থা নেওয়ার বদলে দর্শকের ভূমিকা পালন করল পুলিশ।
শুক্রবার সকাল এগারোটা নাগাদ রবীন্দ্র সরোবরের বাইরে জড়ো হয় বেশ কয়েকজন যুবক। শুরুতেই তারা পুরসভার পোস্টার ছিঁড়তে শুরু করে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। গেট বন্ধ থাকায় বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে শুরু হয় বচসা। এরপর গেট ভেঙে সরোবরের ভিতরে ঢুকে পড়ে বলে আভিযোগ। এরপর বহু মহিলা পুজোর সামগ্রী নিয়ে চলে আসেন সেখানে।
গোটা ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয়রা। তাঁদের বক্তব্য, গ্রিন ট্রাইব্যুনালের নির্দেশকে রক্ষা করতে পুলিশের উচিত ছিল এখানে কড়া নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করা। কিন্তু শুধু পোস্টার লাগিয়েই থেমে যায় প্রশাসন। গোটা ব্যাপারটা ছেড়ে দেওয়া হয় বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষীদের উপর। ফলে যা হওয়ার তাই হয়েছে।
একাধিক পরিবেশ সংগঠনের পক্ষ থেকে গ্রিন ট্রাইব্যুনালে আপত্তি জানানো হয়। তথ্য দিয়ে সেই সংগঠনগুলি ট্রাইব্যুনালকে বলে, ছটপুজোর আগে সরোবরের জল যে অবস্থায় থাকে আর পুজোর পরে যা চেহারা নেয়—তার মধ্যে আকাশ-পাতাল ফারাক রয়েছে। দেখা যায় ব্যাপক দূষণ ছড়ায়।
রবীন্দ্র সরোবরকে দক্ষিণ কলকাতার ফুসফুস বলেন অনেকে। আকাশচুম্বী বহুতলের মাঝে এই এলাকায় একমাত্র সবুজ। বহু মানুষ প্রাতঃভ্রমণে বেরোন এখানে। প্রতিবছরই ছটপুজোর সময়ে রবীন্দ্র সরোবর নিয়ে অভিযোগ ওঠে। চলতি বছরের গোড়ার দিকে রায় দিয়ে সরোবরের জলে পুজোর কাজে নিষেধাজ্ঞা জারি করে গ্রিন ট্রাইব্যুনাল। কিন্তু সরোবরের জীব বৈচিত্র্যে সরাসরি আঘাত করা হল।