কৃষ্ণপ্রেমে বাহ্যজ্ঞান হারাতেন চৈতন্যদেব। কিন্তু মুরলীধরের শায়েরির প্রেমে যে এমন কাণ্ড ঘটানো যায়, ভাবতে পারেননি লালবাজারের দুঁদে গোয়েন্দারাও! কলকাতা প্রাক্তন পুলিশের গোয়েন্দাপ্রধান মুরলীধর শর্মা উর্দুতে শায়েরি লেখেন। নিজের ফেসবুক পেজে ‘পোস্ট’ও করেন। পুলিশের খবর, গোয়েন্দাপ্রধানের ‘পোস্ট’ নিজের নামে প্রচার করছিলেনন বিজয় কুমার নামে আর এক আইপিএস অফিসার। তাঁর ছবিতে থাকত কলকাতা পুলিশের লোগো রয়েছে। ঘটনার তদন্তে নামে লালবাজারের সাইবার থানা। আইপি অ্যাড্রেস ঘেঁটে তদন্তকারীরা জানতে পারেন, বিজয় কুমার বলে কেউ নেই। ওই ছবিটি বিনোদ আলি নামে এক যুবকের। পেশায় আনাজ বিক্রেতা বিনোদকে গ্রেফতারও করে সাইবার থানা।
কলকাতা বা এ রাজ্যের সঙ্গে উর্দুপ্রেমের বহু গল্প-ঘটনা রয়েছে। কিন্তু রাজ্যটা তো বাংলা! তাই রাজ্য সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় যখন দিল্লির বইমেলায় আস্ত একখানা উর্দু বইয়ের স্টল তৈরি হয়, তা নিয়ে প্রশ্ন বা বিতর্ক উঠবে বই কী!
শিক্ষাবিদ তথা বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালনমন্ডলির সদস্য, প্রাক্তন উপাচার্য অচিন্ত্য বিশ্বাসের মতে, “উর্দু ভারতের কারও মাতৃভাষা নয়। মুসলমান শাসকদের প্রয়োজনে এই কৃত্রিম ভাষা তৈরি হয়েছে সেনা ছাউনি থেকে। উর্দু শব্দটির অর্থ হল সেনা ছাউনি। পশ্চিমবঙ্গের সরকার উর্দু একাডেমি করে বিভেদের রাজনীতি করছেন। মাত্র ১০% উর্দু ভাষী বলে জানালেই সেই অঞ্চলে উর্দু উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ আর শিক্ষক নিয়োগের চেষ্টা হচ্ছে। ইসলামপুরে দাঁড়িভিটের গোলমাল, পুলিশের গুলিতে দুজন প্রাক্তন ছাত্রের মৃত্যু আর পশ্চিমবঙ্গের বুদ্ধিজীবীদের কূটনৈতিক নীরবতার পিছনে এই নীতি। বাংলার বদলে উর্দু শিক্ষক নিয়োগ।
দিল্লির আন্তর্জাতিক পুস্তক মেলায় শুধু মাত্র উর্দু একাডেমিই স্টল দিয়েছে? যদি হয় রাজ্য মাঝারি পাকিস্তানের দিকে যাচ্ছে বলেই মনে হয়।
উর্দু তো পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা।“
বাংলা অকাদেমী কেন আলাদা করে দিল্লির বইমেলায় ষ্টল দিচ্ছে না? এটা কি সরকারি সদিচ্ছার অভাব? বাংলা অকাদেমী তৈরির পর ১৯৮৬ থেকে ২০১১-তে রাজ্যের রাজনৈতিক পালাবদল পর্যন্ত এর নীতি-নিয়ন্ত্রক ছিলেন বামপন্থী শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকার। এই প্রাক্তন উপাচার্যর কথায়, “দিল্লির বইমেলায় পশ্চিমবঙ্গ সরকার স্টল দেয়। তাতে লোকসংস্কৃতি, চিত্রকলা অকাদেমীর মত বাংলা অকাদেমীও নিজেদের সম্ভার রাখে। তাতে বাংলা বই থাকে অনেক। এ ছাড়াও ওই মেলায় কিছু প্রকাশনা সংস্থা এবং স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা বাংলা বই রাখে।