দুই থেকে লাফ দিয়ে আঠারো! পুরস্কার পাবে না?
বিষ্যুদবার লোকসভা ভোটের ফল ঘোষণা হয়েছে। তার পরই নরেন্দ্র মোদীর নতুন মন্ত্রিসভার স্বরূপ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়ে গেল বিজেপি-র অন্দরে।
শুরুতেই বলে রাখা ভাল, এ ব্যাপারে মোদী-দিদিতে ফারাক নেই। দিদি যেমন কাকে মন্ত্রী করবেন, কেন করবেন তা নিয়ে আগে থেকে কাক পাখিকে টের পেতে দেন না। মোদী-অমিত শাহরাও তাই। তবে হ্যাঁ, মন্ত্রিসভার গঠন নিয়ে দলের বিভিন্ন নেতাকে ডেকে তাঁরা যে আলোচনা করেন, তা থেকে চুঁইয়ে বাইরে কিছু খবর চলেই আসে।
এবং শুক্রবার বিজেপি-র অন্দরের খবর হল, বাংলা থেকে মোদীর মন্ত্রিসভায় এ বার প্রতিনিধিত্ব বাড়বে। গত লোকসভা ভোটে বাংলায় দুটি আসনে জিতেছিল বিজেপি। মন্ত্রী হয়েছিলেন, দু’জন বাবুল সুপ্রিয় এবং সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়া। দু’জনেই এ বার জিতেছেন। বাবুল আগের বারের থেকে কয়েকগুণ জয়ের ব্যবধান বাড়িয়েছেন। আর সুরিন্দর সিং বর্ধমানে তৃণমূলের দুর্গে ঢুকে দুঃসাধ্য কাজ করে দেখিয়েছেন। সেই সঙ্গে এ বার এক ধাক্কায় বাংলায় ১৬ টি আসন বাড়িয়েছে বিজেপি। এতো বড় সাফল্য গোটা দেশে আর কোথাও পাননি মোদী-অমিত শাহ। বাংলা বরাবরই প্রায় অধরা ছিল বিজেপি-র কাছে।
বিজেপি-র শীর্ষ সূত্রে বলা হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী ছাড়া মন্ত্রিসভায় সর্বোচ্চ আশি জনকে মন্ত্রী করা যেতে পারে। এ বার ভোটে এনডিএ মোট ৩৪০ টি আসন পেয়েছে। ফলে প্রতি চার জন সাংসদ পিছু একজনকে মন্ত্রী করা যেতে পারে। তবে এখনও পর্যন্ত যা ঠিক রয়েছে, এখনই অতো জনকে মন্ত্রী করা হবে না। পূর্ণ মন্ত্রী, স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতি মন্ত্রী এবং প্রতি মন্ত্রী মিলিয়ে সত্তর জনের মতো সাংসদকে মন্ত্রী করা হতে পারে। শেষ পর্যন্ত যদি সেই ফর্মুলা থাকে, তা হলে পশ্চিমবঙ্গের তিন থেকে চার জন সাংসদকে এ বার মন্ত্রিসভায় নিতে পারেন মোদী।
বিজেপি শীর্ষ সূত্রের মতে, যে হেতু উত্তরবঙ্গে বিজেপি-র ফল এ বার ভাল হয়েছে, এবং রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলেও ফল ভাল হয়েছে, তাই এক জন আদবাসী সাংসদকে মন্ত্রী করা হতে পারে। সে দিক থেকে আলিপুরদুয়ারের সাংসদ জন বার্লার নাম এগিয়ে রয়েছে। দ্বিতীয়ত বাংলা থেকে এক জন মহিলাকে মন্ত্রী করার সম্ভাবনা প্রবল। সেক্ষেত্রে রাজ্যের মহিলা সংগঠনের সভানেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়ের নাম বিবেচনায় রয়েছে। এ ছাড়া অবশ্যই বিবেচনায় রয়েছে রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ ও মুকুল রায়ের নাম। তবে দিলীপ ঘোষ মন্ত্রিসভায় গেলে তিনি রাজ্য সংগঠনের সভাপতি থাকবেন কিনা সেটা যেমন প্রশ্ন। তেমনই দলের মধ্যে এই মতও রয়েছে যে মুকুল রায়কে এখনই মন্ত্রী করা ঠিক হবে কিনা। শেষ পর্যন্ত যদি মুকুলবাবুকে মন্ত্রী করা হয়, তা হলে তাঁকে কেন্দ্রে পূর্ণ মন্ত্রীই করতে হবে। কারণ, এর আগে রেল মন্ত্রী ছিলেন মুকুলবাবু। ফলে তাঁকে এখন পূর্ণ মন্ত্রী না করলে মর্যাদাহানি হবে। তা ছাড়া মন্ত্রিসভায় নিয়ে এলে মুকুলবাবুকে রাজ্যসভার সদস্যও করতে হবে ৬ মাসের মধ্যে।
বিজেপি শীর্ষ সূত্রে বলা হচ্ছে, এখনও আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না হলেও সম্ভবত ৩০ মে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান হবে। ফলে যা হওয়ার তা আগামী পাঁচ সাত দিনের মধ্যেই হবে।