তৃণমূল নামক দলটি এতটা নিকৃষ্ট হওয়া সত্বেও, ওদের দলের মধ্যে এতো অন্তর্কলহ থাকা সত্বেও, নেতৃত্বের আকাল ( নেত্রীর অবর্তমানে নেতৃত্ব দেবার মতো কোনো বিশ্বাসযোগ্য মুখ নেই ) থাকা সত্বেও ক্ষমতা ধরে রাখতে সক্ষম হোলো কারণ রাজনীতিটা ওরা খুব ভালো বোঝে.. তার কারণ হতে পারে এতো বছর তৎকালীন কেন্দ্রে শাসকদল কংগ্রেসে থাকার অভিজ্ঞতা…
ওরা যানে কিভাবে মিথ্যে কে সত্যি বলে চালাতে হয় – কিভাবে দশ চক্রে ভগবান কে ভূত প্রমাণিত করতে হয়, কাকে, কখন কিভাবে নিপীড়িত সাজাতে হয় ও তার কাঁধে চেপে বৈতরণী পার হতে হয়.. রাজনীতি তে যে যতটা দক্ষতার সাথে অসৎ কাজ করতে পারবে ততটাই সফল হবে.. এটা হয়তো দেশ সেবায় নিয়োজিত সংঘ পরিবারভূক্ত রাজনৈতিক দল বিজেপির পক্ষে অনুধাবন করা কঠিন হচ্ছে, কিন্তু তৃণমূলের এই নোংরা খেলাটা বুঝতে হবে ও তাদের খেলায় তাদেরকেই মাত দিতে হবে.. সেটা করতে সময় লাগলেও পারবে ঠিক ই কারণ চালাকির দ্বারা কোনো মহৎ কাজ সম্পন্ন হয় না এবং সবাইকে সারাজীবন বোকা বানানো ও যায় না..
এবার আসা যাক মূল কথায়.. আসন্ন উপনির্বাচনে ভবানীপুর কেন্দ্র থেকে জয় লাভ করা বিজেপির পক্ষে হয়তো এক লাফে everest এর চূড়ায় ওঠার থেকেও কঠিন কাজ, তবে সবাই মিলে একজোট হয়ে চেষ্টা করলে অসাধ্য সাধন যে করা যাবে না, এমনটাও নয়.. ভবানীপুরে নির্বাচনের নির্ঘন্ট প্রকাশ হবার পর থেকেই সংবাদ ও সামাজিক মাধ্যমে বিজেপি মহলের যা তোড়জোড় দর্শনীয় হচ্ছে, এর থেকে একটা ব্যাপার তো স্পষ্ট যে ওরা গত বিধান সভা নির্বাচনে হার ও vote পরবর্তী হিংসায় তৃণমূলি গুন্ডা বাহিনীর হাতে দলের নিরীহ কার্যকর্তাদের হত্যা ও অত্যাচারের ফলে মুশড়ে পড়া দলটিকে আবার নূতন উদ্দীপ্তনায় একত্রিত করে এই অতীব কঠিন নির্বাচনে মাননীয়া কে এক চুল ও জমি না ছাড়ার পথে এগোচ্ছে..
জয় দুষ্প্রাপ্য কিন্তু অসম্ভব যে নয় তার প্রমান হোলো তৃণমূলের সেই চির পরিচিত অসৎ প্রচার.. প্রথমত ওদের সেই একি তাসের তুরূপ – ভবানীপুরে বিজেপি প্রার্থী, আইনজীবী প্রিয়াঙ্কা টিব্রেওয়াল কে অবাঙালী অর্থাৎ বহিরাগত তকমা দেওয়া.. ওদের ধারণা যে এই পদ্ধতি অবলম্বন করে বিধানসভা নির্বাচনে ওরা সফল হয় তাই এবার ও ওই একি পথে চলে শুরু করলো তৃণমূল.. এটি করতে গিয়ে প্রিয়াঙ্কার একটি বক্তব্য কে বিকৃত করে সামাজিক মাধ্যমে ছাড়লো ওরা..
রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশ থেকে আগত অবৈধ অনুপ্রবেশকারী, যাদের কে তৃণমূলের প্রধান vote bank বলা হয় – এদের কে উদ্দেশ্য করা প্রিয়াঙ্কা বললেন যে ‘ওরা আমায় vote না দিলেও চলবে, আমি বৈধ ভারতীয়দের vote এই জিততে চাই’.. তৃণমূল ওই বক্তব্যটি কে এমন ভাবে প্রচার করলো যেন প্রিয়াঙ্কা পূর্ব বঙ্গ থেকে এ পার বাংলায় আসা হিন্দুদের উদ্দেশ্য এটা বলেছেন.. সেটা যে উনি আদৌ বলেন নি তা এই screenshot এ ওনার বক্তব্য থেকেই প্রমাণিত হচ্ছে..নিজেদের জয়ের ব্যাপারে এতটা নিশ্চিত হলে তৃণমূল কে এই নোংরা খেলায় নামতে হতো না..
প্রিয়াঙ্কা মানুষ হিসেবে কিরম বা আইনজীবী হিসেবে তার মেধা কতটা এই নিয়ে বিচার বিবেচনা অবান্তর. তিনি পূর্বে কার সহযোগি হিসেবে কাজ করেছেন, সেই ব্যক্তি তৃণমূল নেতা/সাংসদ কিনা এই নিয়ে বিশ্লেষণ ও অবান্তর কারণ পেশাগত কারণে আমাদের সকলকেই প্রায় রাজনৈতিক মতবাদ ব্যতিরেখে অনেকের সাথেই কাজ করতে হয়.. মূল বিষয়টা হোলো যে vote পরবর্তী হিংসায় আক্রান্ত মানুষদের পাশে আইনজীবী হিসেবে প্রথমদিন থেকেই প্রিয়াঙ্কা দাঁড়িয়েছেন এবং সেটা আমরা প্রত্যেকে সংবাদ ও সামাজিক মাধ্যমে দেখেছি.. একটার পর একটা মামলা লড়ে আক্রান্তদের ঘরে ফেরানো থেকে আরম্ভ করে কলকাতা high court এর রায়ে এই মামলায় CBI এর তদন্তের আদেশ হয়ে সব কটি মামলা তিনি লড়েন এবং সফল হন.. আত্মবিশ্বাসের সাথে এই কথা উনি বারবার camera র সামনে বলছেন.. হ্যাঁ, এটা সত্যি যে এ ধরণের মামলা একা কেউ লড়েনা.. আরও বেশ কিছু আইনজীবী ও ছিল তার সাথে – আমরা মামলার petition গুলো ও দেখেছি এবং বেশ কিছু আইনজীবীর সাথে আগেই এ বিষয়ে আলোচনা ও করেছে.. এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই যে মূল petitioner তিনি ই.. কিন্তু অদ্ভুতভাবে একটি ব্যাপার প্রত্যক্ষ করা যাচ্ছে যে একদল মানুষ, যারা এতদিন নিজেদের সংঘের সমর্থক বলে পরিচয় দিচ্ছিলো, তারা আজ ওঁর কৃতিত্ব কে ছোট করে অন্য কারও নাম বসাতে চাইছে.. এবার তর্কের খাতিরে ধরে নিলাম যে ওরা সত্যি বলছে (যদিও petition টা ভালো করে দেখলে বোঝা যাবে যা ওরা বলছে টা ঠিক নয় ) তাহলে এতদিন ওরা চুপ ছিল কেন? বিজেপি প্রার্থী হিসেবে প্রিয়াঙ্কার নাম ঘোষণার পর ই এরা প্রিয়াঙ্কা কে মিথ্যে প্রমান করতে মাঠে নামলো কেন? তাহলে কি এরা আদপে তৃণমূলের হয়েই কাজ করছেনা কি? এদের আসল উদ্দেশ্য টা সকলের বোঝা ও যানা দরকার..
আরেকদল মানুষ যারা বহু বছর নিজেদের ফেসবুকিয় বোদ্ধা হিসেবে পরিচয় দিয়ে, ফেসবুকে বেশ কিছু অনুগামী জোগাড় করে বিজেপির ই বুদ্ধিজীবী cell এর মাথায় বসে সর্বদা বিজেপি কে বদনাম করে.. এরা আদৌ vote টা ও বিজেপি কে দ্যায় কিনা সন্দেহ. এই বাম মনোভাবাপন্ন ফেসবুকিয় আঁতেল রা বাজারে নেমেছে প্রিয়াঙ্কার ওই রোহিঙ্গা দের নিয়ে করা মন্তব্যর জের টেনে ওঁকে বাঙাল বিদ্বেষী প্রমান করতে এবং ওঁর সাথে বিজেপি কেও.. সেই বিজেপি যে কিনা সমস্ত প্রতিকূলতার সাথে লড়াই করে CAA আইন আনলো.. এই আঁতেল গুলো কে কোনোদিন দেখবেন না যে সংঘ ও তার সমর্থকদের কোনো ভালো কাজের প্রশংসা করে একটাও লেখা দিতে, উল্টে সব সময় নিন্দায় করে… আর এদের হিন্দুত্ববাদী লেখা শুধু একটা বিষয় নিয়েই হয়, ওপার বাংলা থেকে ইসলামিক জেহাদিদের আক্রমণে অতিষ্ট হয়ে পালিয়ে আসা স্বরণার্থীদের নিয়ে.. কিন্তু তাদের পালানোর কারণ নিয়ে লেখার দম নেই এদের.. অথচ এদের দ্বিচারিতা দেখুন, যখন এদের প্রাণের বন্ধুগণ ফেসবুকে বাঙালদের গালি দ্যায়, তাদের বহিরাগত বলে তখন এরা মুখে কুলুপ এঁটে থাকে.. একটা বিষয় এদের প্রশ্ন করতে চাই – এতবছর পর ও বাঙালদের ‘উড়ে এসে জুড়ে বসেছে ‘, ‘তোরা সবাই কি জমিদার ছিলি নাকি ‘ ইত্যাদি বলে কটাক্ষ করার কাজ কিন্তু এই টিব্রেওয়াল, আগরওয়াল রা করেনা, কতিপয় বামপন্থীর জন্য জাতীয়তাবাদী বাঙালদের ও দেশদ্রোহী বলে দাগানো টা ওই টিব্রেওয়াল, আগরওয়াল রা করেনা, করে কারা? তাদের প্রশ্ন করার দম আছে কি এই আঁতেলদের?
আর আমাদের জাতীয়তাবাদী বন্ধুদের ও বলি যে আন্দোলন টা কঠিন, দৃঢ়প্রতিজ্ঞ থাকুন ও শিরদাঁড়া সোজা রাখুন.. এসব ফেসবুকিয় আঁতেলদের সমর্থন ও অনুমোদন করে আপনারা নিজেরা নিজেদের পায়েই কুড়োলটা মারছেন.. মনে রাখবেন যে হিন্দু স্বার্থের রক্ষাকারী একমাত্র সংঘ আর কেউ নয়. এসব আঁতেলদের দেখানো অলীক স্বপ্নে ভুলবেন না.. এরা এতদিন হিন্দু স্বার্থে গঠনমূলক কি করেছে টা খোঁজ নিন, তাহলেই বুঝবেন যে এদের ফেসবুকিয় তারকা বানিয়ে কি ভুল টা ই করেছেন ..
সবার শেষে বলি যে প্রিয়াঙ্কা টিব্রেওয়াল বিজেপি অনুমোদিত প্রার্থী, তাই আমার সমর্থন ওঁর প্রতি, ওঁর জায়গায় যে হতো তাকেই সমর্থন করতাম কারণ বিজেপি তে ব্যক্তির চেয়ে দল বড়ো তার চেয়ে বড়ো দেশ.. কিছু মানুষ সবসময় ই থাকে, ওই বিয়ে বাড়ীতে ক্ষুব্দ পিসিমার মতো, যাঁর কোনো প্রার্থী ই পছন্দ হয় না কখনো.. আজ যারা অবাঙালি হওয়ার জন্য প্রিয়াঙ্কা কে নিয়ে আপত্তি করছে তারা অন্য কোনো বাঙালী প্রার্থী হলেও তার খুঁত খুঁজে বের করতো ঠিক ই.. আগের বার বাঙালী প্রার্থী রুদ্রানীল কে ও পছন্দ করেনি তারা.. মনে করে দেখুন..
এগুলো নিয়ে ভাবুন, ভাবা practice করুন.. নিজের ভালো মন্দ টা বুঝুন…
নমস্কার 🙏