দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার করতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হলেন উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালির এক পুলিশ আধিকারিক-সহ তিন জন পুলিশ কর্মী। তিন জনকেই আপাতত বেসরকারি হাসপাতালে রাখা হয়েছে। তবে, তাঁদের মধ্যে এক জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছে হাসাপাতাল কর্তৃপক্ষ।
এই ঘটনায় মূল দুই অভিযুক্তের মধ্যে একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অন্য একজনকে গ্রেফাতার করার জন্য এলাকায় তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। খোঁজ চলছে এই ঘটনায় অভিযুক্ত বাকিদেরও।
পুলিশের উপর এই গুলি চালনার ঘটনাটি ঘটে শুক্রবারে। ওই দিন রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ সন্দেশখালি থানা থেকে ৫ কিলোমিটার দূরের খুলনা গ্রামে। বিদ্যাধরী নদীর পাশে রজনীঘাট সংলগ্ন বৌঠাকুরানীর মাঠে পুলিশকর্মীদের লক্ষ্য করে ব্যাপক বোমাবাজি এবং গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা। এই হামলাতেই গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর জখম হন এক সিভিক ভলিন্টিয়ার-সহ তিন জন। হাসপাতাল সূত্রে খবর ওই সিভিক ভলিন্টিয়ারের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
পুলিশ সূত্রে খবর, এই ঘটনার শুরু বুধবার। ওইদিন কালীপূজো উপলক্ষে আয়োজিত মেলায় জুয়ার আসর বসিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। সেখানে গণ্ডগোল হওয়াতে দুষ্কৃতীদের মধ্যে গুলি-বোমা চলে। এই দুষ্কৃতী দলের পাণ্ডা স্বপন সর্দার এবং কেদার সর্দার এলাকার ‘ত্রাস’ নামে পরিচিত। এই দুই দুষ্কৃতী তৃণমূল আশ্রিত বলেও অভিযোগ।
গণ্ডগোলের পর শুক্রবার এই দুই দুষ্কৃতীকে ধরতে সন্দেশখালি থানার এসআই অরিন্দম হালদার, ভিলেজ পুলিশ বাবুসোনা সিং, সিভিক ভলিন্টিয়ার বিশ্বজিৎ মাইতি সহ বিরাট দল রওনা দে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ গ্রামে ঢুকতেই পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে প্রবল বোমা-গুলি ছুঁড়তে থাকে দুষ্কৃতীরা। এই হামলার মুখে পড়ে পিছু হটছিল পুলিশ বাহিনী। গ্রাম থেকে বেরনোর মুখেই পুলিশের গাড়ি ঘিরে এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে শুরু করে দুষ্কৃতীরা। আর এতেই তিনজন পুলিশকর্মী গুলিবিদ্ধ হন। আহতদের দ্রুত কলকাতায় এনে সল্টলেকের আমরি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু, চিকিৎসক কম থাকায় ফিরিয়ে দেওয়া হয় তাঁদের। এরপরে তাঁদের বাইপাসের ধারে এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এরপরেই বিশাল পুলিশবাহিনী গোটা এলাকা ঘিরে ফেলে। তল্লাশি চালিয়ে গ্রেফতার করা হয় স্বপন সর্দার এবং কেদার সর্দারকে।
এই প্রসঙ্গে বসিরহাট জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানান, ‘প্রধান দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের খোঁজ চলছে খুব শীঘ্রই তাঁদেরকেও গ্রেফতার করা হবে। তবে, দুষ্কৃতীদের গুলিতে সিভিক ভলিন্টিয়ার বিশ্বজিৎ মাইতির অবস্থা আশঙ্কাজনক।’