সম্প্রতি ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং ও উপরাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নাইডু নিজেদের বক্তব্যে পাক অধিকৃত কাশ্মীরকে ভারতের অঙ্গ বলে উল্লেখ করেছেন। এ বার সেই পথেই হাঁটলেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। বললেন, পাক অধিকৃত কাশ্মীর ভারতেরই। একদিন তা ভারতের অধিকারেই আসবে।
মঙ্গলবার একটি সাংবাদিক বৈঠকে বিদেশমন্ত্রী বলেন, “পাক অধিকৃত কাশ্মীর ভারতের অঙ্গ। একদিন পাক অধিকৃত কাশ্মীরের উপর আমাদের আইনত অধিকার বলবত হবে।”
এই সাংবাদিক সম্মেলন থেকে কাশ্মীরের বর্তমান পরিস্থিতিকে নিয়ে বিদেশি সংবাদপত্রের ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করেছেন জয়শঙ্কর। তাঁর বক্তব্য, ‘বিদেশি সংবাদপত্র ও মিডিয়া কাশ্মীরের পরিস্থিতি না জেনেই মন্তব্য করছে। কাশ্মীরিদের সঙ্গে কথা না বলেই বিভিন্ন প্রতিবেদন লেখা হচ্ছে। তাঁরা কাশ্মীরে গেলে তবেই সেখানকার আসল পরিস্থিতি বুঝতে পারবেন। তখন আর এই ধরণের কথা তাঁরা বলবেন না।”
অবশ্য এই বিষয়ে দেশবাসীকে চিন্তা না করার পরামর্শ দিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী। তাঁর বক্তব্য, “কাশ্মীরকে নিয়ে ১৯৭২ সাল থেকে আমাদের চিন্তাভাবনা একই আছে। আমরা কী করছি, বা কী করার কথা ভাবছি, সে ব্যাপারে আমরা নিশ্চিত। আমি বহুদিন ধরে এই বিষয়ে কূটনৈতিক মহলে কাজ করেছি। সুতরাং আমাদের একটা নির্দিষ্ট রূপরেখা রয়েছে।”
এস জয়শঙ্কর বলেন, পাকিস্তান বরাবরই ভারতের সব কাজে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করতে চেয়েছে ও আগেও করবে। পাকিস্তানের জঙ্গি কার্যকলাপের সমালোচনাও করেছেন জয়শঙ্কর। তিনি বলেন, “পৃথিবীর অন্য কোথাও পড়শি দেশ অন্য দেশের সীমান্তে এই ধরণের সন্ত্রাস তৈরি করছে কিনা, তা দেখুন। পাকিস্তান মুখে জঙ্গি কার্যকলাপের বিরোধিতা করে, অথচ ভেতরে ভেতরে তাকেই সমর্থন করে। যতদিন না এই কাজ পাকিস্তান বন্ধ করছে, ততদিন পর্যন্ত কোনও বিষয়ে তাদের সঙ্গে আলোচনা সম্ভব নয়।”
জম্মু-কাশ্মীরের উপর থেকে স্পেশ্যাল স্ট্যাটাস তুলে নেওয়ার পর থেকেই অপাকিস্তান ভারতের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে। ভারত সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, এই সিদ্ধান্ত কাশ্মীরিদের উন্নয়নের জন্যই নেওয়া হয়েছে। দুই কাশ্মীরকে জুড়ে এক করার কথাও বলা হয়েছে কেন্দ্রের তরফে।
সামনেই রাষ্ট্রপুঞ্জের জেনারেল অ্যাসেম্বলি বৈঠক শুরু হচ্ছে। সেখানে ফের কাশ্মীর ইস্যুকে আন্তর্জাতিক মহলের সামনে তুলে ধরতে চান পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। এই বৈঠক চলাকালীন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠকও করতে পারেন ইমরান।
সোমবার আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও বলেছেন, তিনি মোদী ও ইমরান দুজনের সঙ্গেই বৈঠক করবেন। সেখানে কাশ্মীর প্রসঙ্গে আলোচনা হওয়ার কথাও রয়েছে। তবে তাতে সমস্যার কতটা সমাধান হয়, বা আদৌ কোনও সমাধানসূত্রে বেরোয় কিনা, সেটাই দেখার।