পিপলস লিবারেশন আর্মির (People Liberation Army) পিছু হঠার প্রমাণ পাওয়া গেল উপগ্রহ চিত্রে। পূর্ব লাদাখের গালওয়ান উপত্যকা-সহ প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার অনেকগুলি পয়েন্ট থেকেই পিছনে সরে গিয়েছে চিনা সেনা। যে উপগ্রহ চিত্র সামনে এসেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে যে সমস্ত এলাকায় তাঁবু টাঙিয়ে ফেলেছিল চিনের লাল ফৌজ, সেগুলি ফাঁকা হয়ে গিয়েছে। প্রায় দু’কিলোমিটার পিছনে সরে গিয়েছে চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মি। ভারতীয় সেনাবাহিনীকেও আগের অবস্থান থেকে কিছুটা সরে গিয়েছে। দুই বাহিনীর পিছনে সরার ফলে গালওয়ান-সহ প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় তৈরি হয়েছে নিরপেক্ষ অঞ্চল তথা বাফার জোন।
সোমবার গালওয়ান (Galwon) উপত্যকা থেকে চিনা সেনাবাহিনী সরতে শুরু করে। বিতর্কিত হট স্প্রিং এলাকা থেকে অন্তত দু’কিলোমিটার পিছনে সরেছে তাঁরা। ১৫ নম্বর প্যাট্রলিং পয়েন্ট থেকে পুরোপুরি বাহিনী প্রত্যাহার করে নিয়েছে পিপলস লিবারেশন আর্মি। প্রসঙ্গত, রবিবার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের (Ajit Doval) সঙ্গে টেলিফোনে বৈঠক করেন চিনা বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই। বৈঠকের পরেই সোমবার থেকে ধাপে ধাপে পিছু হঠতে শুরু করে চিনা ফৌজ। এক বিবৃতি জারি কেন্দ্রীয় সরকার বলেছে, “এই ডিজএনগেজমেন্ট আরও আগে হতে পারত। আশা করছি, এই ডিসজএনগেজমেন্ট জারি থাকবে আগামী দিনেও।”
ভারত সরকার শঙ্কায় ছিল, বৈঠকে সিদ্ধান্ত হওয়ার পর কী পিপলস লিবারেশন আর্মি আদৌ কোনও পয়েন্ট থেকে পিছু হঠবে কিনা ? কারণ, এর আগে ৬ জুন সেনা আধিকারিক পর্যায়ের বৈঠকের পিছু হটার ব্যাপারে সম্মতি দিয়েছিল চিন। কিন্তু সেবার কথার খেলাপ করে নিজের অবস্থান থেকে এক চুলও নড়েননি তারা। শেষমেষ ১৫ জুন ভারতীয় জওয়ানদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় চিনা সেনা। সেখানে দুপক্ষেরই সেনাবাহিনীর প্রাণহানি ঘটে। ২০ জন ভারতীয় জওয়ানের মৃত্যুর ঘটনা ঘটলে, নড়েচড়ে বসে নরেন্দ্র মোদীর সরকার (Narendra Modi Govt.)। পিতল লিবারেশন আর্মির ৩৫ জন জোয়ান সংঘর্ষের ঘটনায় শহীদ হয়েছিলেন বলে জানা গিয়েছিল। কিন্তু বেজিং কোন হতাহতের কথা স্বীকার করেনি। তারপর ২০ জুন আবারো সেনা পর্যায়ের বৈঠকের ‘ডিসএগেজমেনট’ নিয়ে আলোচনা হয়। তা সত্তেও কোনও ফল হয়নি। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল এর সঙ্গে বৈঠকের পরেও যে চীন সদর্থক পদক্ষেপ নেবে সে ব্যাপারে সন্দিহান ছিল দিল্লি। কিন্তু এই দিনের উপগ্রহ চিত্র সব সন্দেহ দূর করে আপাতত স্বস্তি দিয়েছে নয়াদিল্লিকে।