রাজ্যসভায় তখন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সই করা বিবৃতি পড়ে শোনাচ্ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। কাশ্মীরের উপর থেকে স্পেশ্যাল স্ট্যাটাসের তকমা সরে যেতেই একযোগে প্রতিবাদ জানান বিরোধীরা। তার মাঝেই সংবিধান ছেঁড়ার চেষ্টা করেন কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতির দল পিডিপির দুই সাংসদ। তাঁদের সংসদের উচ্চকক্ষ থেকে বের করে দেন স্পিকার। বাইরে বেরিয়ে কুর্তা ছিঁড়ে প্রতিবাদ জানান তাঁরা।
অমিত শাহের ঘোষণার পরেই পিডিপির রাজ্যসভার দুই সাংসদ নাজির আহমেদ ও এম এম ফায়াজ সংসদের মধ্যেই প্রতিবাদ জানাতে থাকেন। ভারতের সংবিধান ছেঁড়ার চেষ্টা করেন তাঁরা। সঙ্গে সঙ্গে মার্শালদের দিয়ে তাঁদের কক্ষের বাইরে বের করে দেওয়ার নির্দেশ দেন স্পিকার তথা উপরাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নাইডু। বাইরে বেরিয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে প্রতিবাদ করতে থাকেন তাঁরা। নিজেদের কুর্তা ছিঁড়ে প্রতিবাদ জানান নাজির ও ফায়াজ। কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের পর পিডিপি নেত্রী মেহবুবা মুফতি এই দিনকে গণতন্ত্রের সবথেকে কালো দিন বলে উল্লেখ করেছেন।
সোমবার রাজ্যসভায় রাষ্ট্রপতির দেওয়া বিজ্ঞপ্তি পড়ে শোনান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এর পাশাপাশি তিনি আনেন জম্মু-কাশ্মীর রাজ্য পুনর্গঠন বিল। তাতে বলা হয়েছে, জম্মু-কাশ্মীরকে দু’ভাগ করা হবে। তার মধ্যে একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হবে লাদাখ। অন্য কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হবে জম্মু-কাশ্মীর।
লাদাখে কোনও বিধানসভা থাকবে না। কিন্তু জম্মু-কাশ্মীরে বিধানসভা থাকবে। দু’টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলেই প্রশাসনের শীর্ষে থাকবেন একজন করে লেফটেন্যান্ট গভর্নর।
লাদাখ সম্পর্কে রাষ্ট্রপতির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ওই অঞ্চলের আয়তন যথেষ্ট বড়। সেখানে খুব কম লোক বাস করেন। সেখানকার ভূপ্রকৃতি বন্ধুর। লাদাখের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছেন, ওই অঞ্চলটি কেন্দ্রের শাসনের আওতায় আনা হোক। তাতে সেখানকার মানুষের আকাঙ্ক্ষা পূরণ হবে।
জম্মু-কাশ্মীর সম্পর্কে বলা হয়েছে, সীমান্তের ওপার থেকে এসে সন্ত্রাসবাদীরা সেখানে অশান্তি সৃষ্টি করছে। সেই পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে জম্মু ও কাশ্মীরকেও পৃথক একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত করা হচ্ছে।
এ দিন বিরোধীদের হল্লায় রাজ্যসভার অধিবেশন বাতিল হয়ে যায় কিছুক্ষণের জন্য। পরে ফের অধিবেশন বসে। বিরোধীরা একযোগে সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন। তারই মধ্যে কোনরকমে বিবৃতি পাঠ করেন অমিত শাহ।